26 C
Dhaka
Friday, May 3, 2024

সম্পদের হিসাব নিয়ে আমলাদের অস্থিরতা

বিডিনিউজ ডেস্ক | ঢাকা | ৯ই আগস্ট, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ২৫শে শ্রাবণ, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ , বর্ষাকাল, ১লা মহর্‌রম, ১৪৪৩ হিজরি

চাকুরির খবর

সম্প্রতি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দাখিল করতে হবে এই নির্দেশ নতুন করে জারি করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে বলা হয়েছে, এই নির্দেশটি পুরনো ছিল।

এখন নতুন করে মনে করিয়ে দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন বাস্তবতায় এই নির্দেশনাটি অকার্যকর হয়ে ছিল। এখন তাকে কার্যকর করা হয়েছে মাত্র।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় যে, সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার সাথে সাথে একজন কর্মকর্তা এবং কর্মচারীকে সম্পদের হিসাব দিতে হয় এবং প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অন্তর হিসাব দেওয়ার বিধি রয়েছে।

কিন্তু নানা বাস্তবতার কারণে এই বিধি কার্যকর হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি প্রশাসন গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই নির্দেশনা নতুন করে জারি করেছেন বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পরিদর্শনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন। সেই কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রথমে তিনি গিয়েছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এবং সেখানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করার কথা বলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা অনেক বাড়ানো হয়েছে।

এখন আর দুর্নীতি করার সুযোগ নেই। কিন্তু তারপরেও প্রশাসনে গত আড়াই বছরে আমলাদের যেমন ক্ষমতার দাপট দৌরাত্ম্য বেড়েছে তেমনি আমলাদের বিরুদ্ধে নানারকম দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রীর আবেগের প্রকল্প, গৃহহীনদের জন্য একটি করে বাড়ি এই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এবং মাঠ প্রশাসনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে। 

অনেকেই মনে করছেন যে, আমলাদের ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে তাদের লাগাম টেনে ধরা এবং তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্যই প্রধানমন্ত্রীর নতুন করে এই নির্দেশনা জারি করেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর আমলাদের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা যাচ্ছে যে, বর্তমানে সচিবদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রয়েছেন যারা বিদেশে ঘরবাড়ি করেছেন। তাদের পরিবার বিদেশে থাকে। তারা দেশে ব্যাচেলর জীবন যাপন করেন। এরকম জীবন যাপনের ক্ষেত্রে তাদের আয়ের উৎস কি সেটি নিশ্চয়ই তারা হিসাব দাখিল করলে বেরিয়ে আসবে।

প্রশাসনের অনেকেই বিপুল বিত্তের মালিক হচ্ছেন এবং নামে বেনামে অর্থ-সম্পদ তৈরি করছেন বলেও বিভিন্ন সময়ে খবর বেরুচ্ছে। এখন যখন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে তখন এই তথ্যগুলো বেরিয়ে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণায় সৎ আমলারা অত্যন্ত খুশি। তারা মনে করছেন, এর ফলে প্রশাসনের বিরুদ্ধে যে ঢালাওভাবে অভিযোগ ওঠে সেই অভিযোগ কিছুটা হলেও কমবে।

তবে এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয় যে এই তালিকা দিয়ে শেষ পর্যন্ত কি করা হবে। এই তালিকা কি প্রকাশ করা হবে নাকি এই তালিকা গোপনই রাখা হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, এই তালিকাটি প্রকাশ করা হবে না। তবে সরকারের পদোন্নতি, গুরুত্বপূর্ণ প্রাপ্তি ইত্যাদির ক্ষেত্রে তালিকাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

একজন প্রশাসনের কর্মকর্তার পদোন্নতি এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তার সম্পদের হিসাব একটি বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। সৎ কর্মকর্তাদেরকে পাদপ্রদীপে আনা এবং তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা, অসৎ কর্মকর্তাদেরকে চিহ্নিত করা এবং তারা যেন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় না আসতে পারে সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এটি করা হয়েছে।

তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটি মনে করা হচ্ছে এর ফলে প্রশাসনের মধ্যে এক ধরনের জবাবদিহিতা তৈরি হবে এবং বেপরোয়াভাবে ঘুষ-দুর্নীতি ইত্যাদি বন্ধের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, যারা প্রশাসনে সৎ তারা এই সিদ্ধান্তে খুশি। তারাই এই সিদ্ধান্তে অস্থির হচ্ছেন যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

বাংলা ইনসাইডার

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর