29 C
Dhaka
Monday, March 18, 2024

সুবত দাশ খোকনের কবিতা

চাকুরির খবর

সুবত দাশ খোকনের চারটি কবিতা

এক
প্রেম
——–

নগরে আগুন লাগলে দেবালয় বাদ যায় না
প্রেমে মধ্য বয়সে পড়লেও 
কাউকে কম কাম জাগায় না
প্রেমে তুমি পড়বে যখনই
দেখবে সবই রঙিন তখনই
বুড়িয়ে যাওয়া মানুষগুলির মধ্যে দেখবে শুধুই তরুণী
প্রেমের অনেক দোষ, প্রেমের অনেক গুণ
প্রেমের মাঝেই দেখবে তুমি
কালোর মাঝে আলো
প্রেমেই তুমি জ্বলবে নিজে
প্রেমেই তুমি জ্বালাবে
প্রেম মানে না বয়সের বাধা
চোখে নামায় রঙিন ধাধা
প্রেমে অন্ধকে দেয় আলো
বোবাকে দেয় বাগ্মীতা
প্রেমে পড়লে শতবর্ষী মানবিও 
জন্ম দিতে শরীরে করে চাষবাস 
প্রেমে পড়লে শতবর্ষী বুড়োরও 
স্রোত আসে, আছে জোয়ার
প্রেম এক তাজ্জব ব্যাপার
প্রেম ম্যাজিকের মতো মানুষকে জাগায়
জন্মের জন্য জাগায়
প্রেম মানুষকে নিয়েই আগায়

দুই
প্রকৃতি ও প্রেম
————
সবই ঘটে সঠিক সময়ে
আমারও ভিতরে ভিতরে অধপতন হয়
প্রকৃতির নিয়মে
তুমি তো প্রকৃতির আরেক রূপ
তোমার নিয়মে আমি চলি
আমি দাড়াই
আমি আত্মসমর্পণ করি
আমি নিজেকেই নিজে ঠেলে দেই 
তোমারই ভিতরে
যেখানে আমি ছিলাম, আমি আছি, আমিই থাকবো
যতোবার তুমি জননী হয়েছো
ততবারই আমি পিতা
কত সন্তান জ্বালাল তোমার আমার চিতা
এই গানে শুধু সুমনের গাওয়া নয়
এই গান তোমার এবং আমার
এর চেয়ে কঠিন সত্য 
আর একটিও নেই প্রিয়তমা

তিন
যে মরা জলে ডুবে না
——————

ডিজিটাল দুনিয়ায় 
ডিজিটাল ঔপনিবেশিক কায়েম হচ্ছে
মেধা-মনন কমদামে বিকিয়ে দিচ্ছ তরুণেরা
যে তরুণ দ্বিগবিজয়ী হবার জন্য পথে নেমেছিল
সে এখন ব্যস্ত কিছু ডিভাইস নিয়ে
যে তরুণীর সমুদ্র স্নানে নাইবার কথা
সেও এখন সুদুরের পিয়া
রাধারমণ গায়না কেউ
হাছনরাজার পিয়ারীকে খুঁজে না তো আর
সরলারে পাইয়া কেন করিম খুঁজে ঈশ্বর 
সরলার মতো সোজা ঈশ্বর
হাজার হাজার বাউল মরে
মরে যায় গাঙ
মরার কাস্টডিয়ান শকুনও মরে বিলুপ্ত প্রায়
এই পাপ তোমার আমার
স্বর্গ ভাবে এই ভবে 
ভাবলে না কেন এইভাবে 
প্রেমে কেন খুঁজেছো পার্থিব বিচার
পাইলে যদি ধরতে কেন পারলে
বাইরের দিক দেখলে শুধু
ডুবে কেন মরলে না
প্রেমের মরা জলে ডুবে না
জানার পরেও গভীরভাবে বুঝলিনা

চার
আসুন বাঁচি এবং বাঁচাই
——————-

মানুষ আগুনে পুড়ে মরে যাবার পরে
লাশের পোস্টমর্টেম হচ্ছে
একইসাথে কেন আগুন লাগলো এই নিয়েও পোস্টমর্টেম চলছে!
আগুন লাগার সবরকম ব্যবস্থা বিদ্যমান আছে 
সকল অনাচারের পরেই ঢাকা শহরের আজ এই অবস্থা হইছে
চারদিকের চারটা নদী ধ্বংস করেছে কে বা কারা?
এই পাপ কার?
এই সব প্রশ্ন না তুলে বরং চলেন সত্যটা স্বীকার করি
চারটি নদী হত্যা হয়েছে আমাদের চোখের সামনেই।
কেউ দখল করেছে, নষ্ট করেছে
বেশিরভাগই নির্বিকার থেকে দেখেছে দখল ও নষ্ট হওয়া!
রাস্তা না ছেড়ে বিল্ডিং উঠছে একের পর এক
ড্রেনেজ ব্যবস্থা ধ্বংস করেই উঠছে সব
জলাশয় ভরাট করে বিরাট বিরাট দৈত্যকায় বিল্ডিং উঠানোর নাম হচ্ছে উন্নয়ন
সরকারি অফিসের সামনের ফুটপাত দখল করেই জমজমাট ব্যবসা
ট্রাফিক আইন মানেনা কেউই
ড্রাইভার তো মানেইনা, বেদনাদায়ক হলেও সত্যি যাত্রী পথচারী কেউই মানেনা
এর চেয়ে নৈরাজ্য আর কেউ কোথাও দেখেছে কী?
শিক্ষাব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা নির্ভরযোগ্য কী আদৌ?
যানজট এইরকম আর কোন দেশে আছে?
সড়কে মরে যায় হাজার হাজার মানুষ তারপরও কিছুই বলার নেই, করার নেই?
টাকা হলেই উন্নয়ন হয়না

ক্রয়ক্ষমতা বাড়লেই সূখ চলে আসেনা
পরমায়ুও বাড়েনা
সকল মানুষের জন্য একটি বাসযোগ্য নগর চাই
সকল মানুষের জন্য একটি বাসযোগ্য দেশ চাই
এখনো সময় আছে 
আসুন বাঁচি এবং বাঁচাই।

কবি
এ্যাডভোকেট সুব্রত দাশ খোকন
ই-মেইল: [email protected]

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর