31 C
Dhaka
Friday, April 19, 2024

আওয়ামী লীগে নারী নেতৃত্বের সংকট

বিডিনিউজ ডেস্ক | ঢাকা | ৯ই আগস্ট, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ২৫শে শ্রাবণ, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ , বর্ষাকাল, ১লা মহর্‌রম, ১৪৪৩ হিজরি

চাকুরির খবর

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মদিন। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরাসরি আওয়ামী লীগ করতেন না কিন্তু বাংলাদেশে নারী নেতৃত্বের উত্থান এবং বিকাশে তার ভূমিকা অসাধারণ ছিল।

বিশেষ করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬৯ এর গণআন্দোলন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গমাতা নেপথ্যচারিণী হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

তার ভূমিকার কারণেই বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা হয়ে উঠেছিল বলেই অনেকে মনে করেন এবং বঙ্গমাতার এই অকুতভয় নেতৃত্ব, তার ধৈর্য এবং তার ধীর স্থির সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া কারণেই বাংলাদেশে নারী নেতৃত্বের উত্থান ঘটেছে।

স্বাধীনতার আগে আওয়ামী লীগের আমেনা বেগম নারী নেত্রী হিসেবে বিকশিত হয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে আদর্শিক সংকটের কারণে তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকতে পারেনি।

তবে মুক্তিযুদ্ধের পর আওয়ামী লীগে নারী নেতৃত্বের বিকাশ ঘটতে থাকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কারণে। পঁচাত্তরের ১৫ ই আগস্টের ইতিহাসের নাটকীয় ঘটনার পর নারী নেতৃত্বই আওয়ামী লীগকে বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

সেই সময় জোহরা তাজউদ্দীন দুঃসময়ের নেতা হিসেবে উদ্ভাসিত হন এবং তিনি আওয়ামী লীগকে নতুন পথ দেখান। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পুনর্গঠিত হয়। সেই সময় বেগম সাজেদা চৌধুরীর ভূমিকাও ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তিনি আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

পঁচাত্তরের ১৫ ই আগস্টের পর থেকে পর থেকে ৮১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের বিনির্মাণে জোহরা তাজউদ্দীন এবং সাজেদা চৌধুরীর ভূমিকা ছিল অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। তারপর আওয়ামী লীগের নারী নেতৃত্বে এক জাগরণ হয়। অবশ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই অগ্নিকন্যা হিসেবে পরিচিত বেগম মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

এ সময় আইভি রহমানও আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ নারী নেত্রী হিসেবে জাতীয়ভাবে পরিচিতি পান। এই নেতাদের হাত ধরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নারী নেতৃত্বের বিকাশ ঘটেছে। অনেক নারী এখন রাজনীতিতে এসেছেন। কিন্তু এত নারী রাজনীতিতে আসার পরও এখন পর্যন্ত কোনো নারীর নেতাই জোহরা তাজউদ্দীন, সাজেদা চৌধুরী কিংবা মতিয়া চৌধুরীর মতো জাতীয় নেতা হিসেবে উদ্ভাসিত হতে পারেননি।

আর এ কারণেই আওয়ামী লীগের নারী নেতৃত্বের সংকটের কথা বলা হচ্ছে। এখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে অনেক কয়েকজন সম্ভাবনাময় নারী রয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। শিরীন শারমিন চৌধুরী আওয়ামী লীগে এসেছেন তার মেধার গুণে। তৃণমূল থেকে রাজনীতি করে উঠে আসা নেতা নন তিনি।

যার জন্য তিনি নীতিনির্ধারক মহলের যতটা না পরিচিত ততটা পরিচিত নন তৃণমূলে। তার স্পিকার হিসেবে প্রাজ্ঞতা এবং তার জ্ঞান নিয়ে কারো কোনো সংশয় নেই। কিন্তু তৃণমূলের নেতা হিসেবে এখনো তিনি স্বীকৃত নন। দীপু মনি আইভি রহমানের পরে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক হন।

২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের সময় তিনি ভালো ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং তার পুরস্কারও তিনি পান। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের মন্ত্রীসভায় তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি মন্ত্রীসভায় অন্তর্ভুক্ত না থাকলেও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন এবং এবার তিনি শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 

দীপু মনি সম্ভাবনাময় নেতা। কিন্তু তৃণমূল এবং ব্যাপক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাছে তিনি এখনো আপন মানুষ হয়ে উঠতে পেরেছেন কিনা তা নিয়ে অনেকের সন্দেহ রয়েছে। আওয়ামী লীগের আরেকজন নেতা মেহের আফরোজ চুমকি। তিনি এখন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক। গতবার মন্ত্রীসভায় তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।

কিন্তু এখনও তিনি জাতীয় নেতা হিসেবে গড়ে উঠতে পারেন নি। এরকম আওয়ামী লীগের বহু নারী নেতা আছেন যারা কাজ করছেন। মহিলা আওয়ামী লীগ রয়েছে। রয়েছে যুব মহিলা লীগ এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন নারী রয়েছেন।

কিন্তু কেউই যেনো জোহরা তাজউদ্দীন, সাজেদা চৌধুরী কিংবা মতিয়া চৌধুরীর মতো উদ্ভাসিত হতে পারছেন না। জাতীয় পর্যায়ে যদি সেরকম নেতা বিকশিত না হন তাহলে আওয়ামী লীগের নারী নেতৃত্ব ভবিষ্যতে সংকটে পড়তে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন।

বাংলা ইনসাইডার 

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর