30 C
Dhaka
Thursday, May 2, 2024

প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘরের একাংশ ভেঙেছে: ২টি ঘরে ফাটল

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

চাকুরির খবর

ভূমিহীন সিরাজুল মিয়া তার স্ত্রী ও এক ছেলেকে নিয়ে আড়াই মাস আগে উঠেন প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘরে।

কিন্তু প্রায় ৩ মাস আগে নির্মিত সেমিপাকা ঘরের দেয়াল, কার্নিশসহ বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেয়। গত কয়েকদিন আগে ঘরের পেছনের অংশের রান্নাঘর ও টয়লেটটি ভেঙে পড়ে।

পরে বিষয়টি তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে ভাঙা অংশটি পুনরায় মেরামতের কাজ শুরু করা হয়।

মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের জন্য নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পটি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের দেওয়ানশাহ মাজারের পেছনে অবস্থিত।

সিরাজুল ইসলামের ঘরের পাশে সরকারের দেয়া আরেকটি ঘরে স্ব-পরিবারে বসবাস করছেন খোকন নামের একজন। তার ঘরের বিভিন্নস্থানেও ফাটল ধরেছে।

তাই যেকোনো সময় ঘরটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন তিনি। ওই এলাকায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের জন্য মোট ৭টি সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করেছে সদর উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তত্ত্বাবধানে ঘর নির্মাণ কাজের দায়িত্ব ছিলেন উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। এছাড়া উপজেলা প্রকৌশলী ঘর নির্মাণ প্রকল্পের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন।

আশ্রয়ণ প্রকল্পে থাকা ৭টি ঘরের চারটিতে গিয়েই ফাটলসহ বিভিন্ন ক্রটি দেখা গেছে। এছাড়া বৃষ্টির সময়ে ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে যাওয়ার কথা জানান বসবাসকারীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিরাজ মিয়ার ঘরের যে অংশটি ভেঙে পড়েছে, ওই আংশে এখন নতুন করে সংস্কার কাজ শুরু করেছে কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক। তারা জানান, যে ঠিকাদার কাজটি করিয়েছেন বুধবার থেকে ওই ঠিকাদার পুনরায় তাদের দিয়ে ভাঙা অংশ মেরামত করাচ্ছেন।

তবে ভেঙে পড়া অংশ মেরামতের কাজ শুরু করা হলেও ঘরের বিভিন্নস্থানে যে ফাটলগুলো রয়েছে- সেগুলোর বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

ফলে যেকোনো সময় পুনরায় ঘরটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন বসবাসকারীরা।

শিউলি আক্তার, বিবি নাছিমাসহ ওই আশ্রয়ণ কেন্দ্রের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, দুই মাস না যেতেই তাদের ঘরের ফ্লোর এবং দেয়ালে ফাটল শুরু হয়েছে। বৃষ্টি হলে রান্নাঘরে পানি ঢুকে। দরজা-জানালা একেবারে নিন্মমানের।

ঘর তৈরিতে ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রীর মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে তারা বলেন, কয়েকদিনেই ঘরের যে অবস্থা তৈরি হয়েছে ভবিষ্যতে এ ঘরে আমরা কিভাবে বসবাস করবো।

প্রধানমন্ত্রী আমাদের জমিসহ ঘর উপহার দিয়েছেন, কিন্তু মাঠ পর্যায়ে তারা কাজটি করিয়েছেন তাদের গাফিলতির কারণে ঘরের অবস্থা বেহাল হতে শুরু করেছে। তাই ঘরের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত তারা।

ঘর নির্মাণের সময় প্রত্যক্ষদর্শীর একজন নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, তড়িগড়ি করে কোনোভাবে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

নির্মাণকাজে নিন্মমানের ভিটি বালু এবং প্রয়োজনের তুলনায় কম সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় অর্থের বরাদ্দ কম হওয়ায় ঘরের মান খারাপ হয়েছে বলে মনে করেন ওই প্রকল্পের এক সদস্য।

সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মোশারফ হোসেন বলেন, যে অংশটি ভেঙে পড়েছে। তার নীচে বাঁশ ঝাড়ের গোড়া ছিলো।

সেটি উঠানোর ফলে যে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে তাতে বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ার কারণে বালু নীচের দিকে চেপে যাওয়ায় এ সমস্যা হয়েছে। খবর পাওয়ার সাথে সাথে ভাঙা অংশটি পুনরায় মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে। অন্যান্য ঘরের ফাটলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাকি ঘরগুলোর অবস্থা ভালো।

এ ব্যাপারে কথা হলে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মাসুম দাবি করেন, ঠিকাদার নিয়মানুযায়ী-ই ঘরগুলোর কাজ করেছেন। তবে একটিতে সাময়িক সমস্যা হওয়ায় ঠিকাদার ভালোভাবে তা সংস্কার করে দিচ্ছেন। ঘর নির্মাণে কোনো অনিয়ম হয়নি বলে জানান তিনি।

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর