36 C
Dhaka
Friday, April 26, 2024

১২০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদনের সক্ষমতা আছে: ইনসেপ্টা

চাকুরির খবর

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা সেরাম থেকে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কিনছি। কিন্তু তাতে আমাদের চাহিদা পূরণ হবেনা। এক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন দেশে কীভাবে ভ্যাকসিন উৎপাদন করা যায় সে সক্ষমতা যাচাই করতে। সেজন্য আজকে এখানে এসেছি।”

ব্যাক্টেরিয়াল ও ভাইরাল মিলে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন সিঙ্গেল ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদনের সক্ষমতা আছে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের। অনুমোদন পেলে দেশে করোনা ভ্যাকসিনও বানাতে পারবে বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন প্লান্ট পরিদর্শনে আসেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এসময় সাংবাদিকদের সামনে ‘ভ্যাকসিন কীভাবে তৈরি করা হয়’ এ বিষয়ে প্রেজেন্টেশন দেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মুক্তাদির।

এসময় তিনি বলেন, “আমাদের ব্যাক্টেরিয়াল ও ভাইরাল দুই ধরনের ভ্যাকসিন তৈরির সক্ষমতা রয়েছে। এখানে আমাদের চারটা জার্মান প্রযুক্তির ফিলিং লাইন আছে।

প্রতি বছরে একটি লাইনে ৪০০ মিলিয়ন সিঙ্গেল ডোজ ভ্যাকসিন তৈরি করা সম্ভব। সুতরাং এই হিসেবে এখানে প্রতিবছর ১.২ বিলিয়ন ভ্যাকসিন তৈরি সম্ভব। সেটা করোনা ভ্যাকসিনও হলেও সম্ভব। কারন এখানে ৫০০ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন সংরক্ষণের ক্লোন্ড চেইনও আছে।”

তিনি আরো বলেন, “দেশে একমাত্র আমরাই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে নিরাপত্তা প্রোটোকল মেনে ভ্যাকসিন তৈরি করে থাকি। এখন বাহিরের প্রতিষ্ঠান থেকে করোনা ভ্যাকসিনের বাল্ক পেলে দুই সপ্তাহের মধ্যে উৎপাদনে যেতে পারব আমরা।

তবে মাস্টার সিড পেলে তা থেকে বাল্ক তৈরি করে উৎপাদনে যেতে ১২ সপ্তাহের মতো সময় লাগতে পারে। এক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ সরকার না চাইলে আমাদের একার পক্ষে ভ্যাকসিন দেশে আনা সম্ভব নয়।”

করোনা ভ্যাকসিন প্রস্তুতের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মুক্তাদির। 

কারখানা পরিদর্নকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, “গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্রাকটিস (জিএমপি) অনুযায়ী দেশে বিশ্বমানের ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে পারলে সেখানে সরকার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সব ধরণের সহায়তা করবে। এক্ষেত্রে শুধু ইনসেপ্টা নয়, যে কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সরকার সহায়তা করতে রাজি আছে।”

মন্ত্রী বলেন, “ইনসেপ্টা ইতোমধ্যে জীবনরক্ষকারী একাধিক ভ্যাকসিন তৈরির মাধ্যমে সকলের আস্থা অর্জন করেছে। করোনা সংকটেও তারা থেমে নেই। করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদনের কোন সুযোগ বাংলাদেশে আসলে সেখানে ইনসেপ্টার প্রস্তুতি তাদের এগিয়ে রাখবে।”

প্রধানমন্ত্রী নিজেও দেশে করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদনের ব্যাপারে আন্তরিক জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা সেরাম থেকে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কিনছি। কিন্তু তাতে আমাদের চাহিদা পূরণ হবেনা। এক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন দেশে কীভাবে ভ্যাকসিন উৎপাদন করা যায় সে সক্ষমতা যাচাই করতে। সেজন্য আজকে এখানে এসেছি।”

“অনেক আগ থেকে এই প্রতিষ্ঠান ভ্যাকসিন তৈরি করার তাদের অবস্থা দেখে গেলাম। সরকারকে যেহেতু ভ্যাকসিন কিনতে হবে। সেখানে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী দেশীয় কোন প্রতিষ্ঠান আমাদের ভ্যাকসিন দিতে পারলে আমরা সেটাই গ্রহণ করব। পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী করোনা ভ্যাকসিন চাহিদা থাকায় রপ্তানি করাও সম্ভব।” 

তাতে বাংলাদেশই উপকৃত হবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

সাভারের জিরাবোতে অবস্থিত এই প্লান্ট পরিদর্শন করে সংবাদ ব্রিফিংয়ে জাহিদ মালেক আরো বলেন, “এজন্য ফিনিশ ভ্যাকসিন পরীক্ষা করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। আমরা চাই নিজেরা ভ্যাকসিনে সেল্ফ সাফিশিয়েন্ট হতে। মানসম্পন্ন ভ্যাকসিন দিতে পারলে সেখানে ইনসেপ্টা আমাদের বিবেচনায় থাকবে। এক্ষেত্রে আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি।”

এসময় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, “ইতোমধ্যে দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে ভ্যাকসিন বাল্ক অথবা মাস্টার সিডের জন্য চিঠি লিখেছি। আশাকরছি ওনারা আমাদেরকে ইতিবাচক কিছু জানাবেন। এছাড়া অন্যান্যদের সাথেও আমাদের আলোচনা চলছে।”

ইনসেপ্টা বলছে, এখন প্রতিষ্ঠানটির ভ্যাকসিন উৎপাদন সক্ষমতা পুরোপুরি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সক্ষমতার প্রায় অর্ধেকেরও (৬২৮ মিলিয়ন) কম উৎপাদন হচ্ছে। এখন মাসের ১২ থেকে ১৩ দিন কারখানা ভ্যাকসিন প্লানটি বসে থাকবে। সেক্ষেত্রে করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদনের ব্যাপক সুযোগ দেখছে প্রতিষ্ঠানটি। 

উল্লেখ্য, ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিঃ দেশের প্রথম জীবনরক্ষাকারী আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। ঢাকার সাভার-এর ভ্যাক্সিন কারখানায় ২০১১ সালের জুন মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। 

যেখানে র‌্যাবিস, র‌্যাবিস-আইজি, হেপাটাইটিস বি, টাইফয়েড, টিটেনাস, টিটেনাস-আইজি, মিজেলস-রুবেলা, এন্টিভেনাম, ফ্লু ও মেনিনজাইটিসসহ দশের অধিক ভ্যাকসিন উৎপাদন ও বাজারজাত করছে প্রতিষ্ঠানটি। তারা দেশের বাজারে এসব ভ্যাকসিন রাজারজাত করার পাশাপাশি বিশ্বের ১২টি দেশে রপ্তানি করে আসছে। 

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর