30 C
Dhaka
Monday, April 29, 2024

লক্ষ্মীপুর রামগতিতে পানিতে ভাসছে কৃষকের স্বপ্ন

চাকুরির খবর

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: আমন ধানের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি। পাকা ধান ঘরে তোলার পালা এবার। কোন কোন কৃষক শুরু করেছেন খানিকটা। ক্ষেত জুড়ে সোনালী ফসল দেখা সে হাসিতে হঠাৎ করেই বাগড়া বসিয়েছে ঘূর্নিঝড় জাওয়াদ।

এর প্রভাবে গত তিনদিনের বৃষ্টিতে কাটা ধান এখন পানির নিচে। ক্ষেতে থাকা পাকা/আধাপাকা ধান নিয়ে আছেন শংকায়। লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে তেমন চিত্রই দেখা গেছে।

কৃষকরা অভিযোগ করে জানিয়েছেন উপকূলীয় এলাকা এবং আশপাশে খাল থাকলেও দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি কোথাও সরানো যাচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে সব আশা শেষ হয়ে যাবে।

৭নং চর রমিজের কৃষক আবদুল কারিম বলেন তিন খন্ডে ১৫গণ্ডা জমিতে আমন চাষ করেছেন। দশজন শ্রমিক দিয়ে গত পরশু পাকা ধান কেটে জমিতে রেখেছেন মেশিনে ছড়ানোর আশায়। হঠাৎ করে বৃষ্টিতে সকল স্বপ্নই ভেস্তে যেতে বসেছে তার। তিনটি জমির ধানই এখন পানির নিচে।

নালা কাটার পাশাপাশি সেচ দিয়েও কুল পাচ্ছেন না তিনি। এভাবে আরো দু একদিন থাকলে ঝরে পড়বে ধান। ফুটবে চারা। ধার দেনা করে চাষ করে এখন হতাশায় আছেন।

চর মেহারের আজাদ উদ্দিন। পানিতে ডুবে থাকা কাটা ধান রাস্তার ধারে উঠাতে ব্যস্ত। তিনি জানান, ধানের ফলন দেখে খুশিই ছিলাম। বৃষ্টিতে সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। আগে তিন মণ ধান পেলে এখন পাবো মাত্র এক মণ। কি করবো বুঝতে পারছিনা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, রামগতি উপজেলা জুড়ে ২৫৬০০হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে যথা সময়ে ধান কাটার ব্যবস্থা না করায় ৩০ হেক্টর ধান পুরো কিংবা আংশিক পানিতে ভাসছে। সব সময় ধান ৮০ শতাংশ পাকলেই কাটার ব্যবস্থা করার জন্য কৃষককে পরামর্শ দিয়ে থাকে।

কিন্তু এর ব্যতিক্রম হওয়ায় এবার বৃষ্টির কবলে পড়তে হয়েছে। সরেজমিনে এর সত্যটা পাওয়াও গেছে। উপজেলার প্রায় ১হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। ১হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা অবস্থায় জমিতে রয়েছ। অবশিষ্ট ধান ক্ষেতে পাকা এবং আধা পাকা অবস্থায় রয়েছে।

অন্যদিকে খড় বিক্রিতেও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন কৃষকরা। এ মৌসুমে প্রতি গন্ডা জমির খড় ৭শ থেকে ৮শ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ায় এখন এর বাজার মূল্য ৩শ থেকে ৪শ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। এভাবে পানিতে আরো দু তিনদিন থাকলে বিক্রির অযোগ্য হয়ে যাবে খড়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক আহমেদ জানান, বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকা কিংবা আংশিক পানিতে থাকা ধান ক্ষেতের পানি দ্রুত নিষ্কাশনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানে কাটা ধান সংরক্ষন করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশা করি কৃষকরা উপকৃত হবেন।

আমনের ভালো ফলন হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা আরো জানান, সময় মত কৃষকদের পরামর্শ দেয়া, সার ও বীজ সরবরাহ করায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আশানুরুপ ফলন হয়েছে। এ বছর প্রায় ছয় শতাধিক কৃষকের মাঝে হাইব্রীড এবং উপশী জাতের ধানবীজ বিতরন করা হয়েছে।

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর