30 C
Dhaka
Monday, April 29, 2024

প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চান গায়িকা পলি সায়ন্তনী

বিডিনিউজ ডেস্ক

চাকুরির খবর

দেশীয় বাংলা গানের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ডলি সায়ন্তনী। অডিও মাধ্যম এবং চলচ্চিত্রের প্লেব্যাকে অসংখ্য গান গেয়ে শ্রোতাদের মন জয় করেছেন।

তার ভাই বাদশা বুলবুলও দেশের জনপ্রিয় একজন গায়ক। অনেক গান তার শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে গেছে। তাদের আরেক বোন পলি সায়ন্তনী। তিনিও দেশীয় সঙ্গীতের এক প্রিয়মুখ। একজন গায়িকা।

ডলি সায়ন্তনী ও বাদশাহ বুলবুলের ছোট বোন পলি সায়ন্তনী দীর্ঘদিন ধরে সঙ্গীত জগতে আছেন। তারও অনেক গান শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে। কিন্তু পলি সায়ন্তনী অনেকদিন গানে নিয়মিত নন। তার নেই কোনো নতুন গান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মন খারাপ করার মতো খবর। তিনি দুই বছর ধরে মরনব্যাধি ক্যান্সারের সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এই সংগীতশিল্পী ক্যানসারের চিকিৎসায় ইতিমধ্যে বিশ লাখ টাকা খরচ করেছেন। কিন্তু অর্থাভাবে বর্তমানে তার চিকিৎসা করাতে পারছেন না।

এই প্রতিবেদককে পলি সায়ন্তনী জানান, দুই বছর আগে তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। তারপর থেকেই নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। এরইমধ্যে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যায় কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি নিয়েছেন।

কিন্তু শারীরিক অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি নেই। তার প্রয়োজন আরও উন্নত চিকিৎসা। সেজন্য প্রয়োজন আর্থিক সাহায্য। এখন পলি সায়ন্তনী অর্থাভাবে তার ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে পারছেন না।

জানা গেছে, এত দিন পলি সায়ন্তনী অনেকটাই নিরবে তার চিকিৎসা করিয়েছেন। এখন আর নিরব থাকতে পারছেন না। কিছুদিন হলো নিজের ক্যান্সার চিকিৎসার বিষয় নিয়ে তিনি মিডিয়াতে মুখ খুলেছেন।

জানা গেছে, সম্প্রতি একটি ইউটিউব চ্যানেলেও পলি সায়ন্তনী তার ক্যান্সার নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন। এই বিষয়ে পলি সায়ন্তনী এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘ভেবেছিলাম সময়মতো ধরা ধরা পড়েছে ক্যান্সার।

চিকিৎসায় হয়তো সেরে উঠবো। কিন্তু তেমনটি হয়নি। এর আরও দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসা দরকার। এটা যে কত কষ্টের এক অসুখ, আল্লাহ যেন কাউকে এই অসুখ না দেন।’

তিনি অভিমান মাখা কন্ঠ নিয়ে আরও বলেন, ‘আমি কাউকে অসুখের ব্যাপারে কিছু জানাতে চাইনি। কারণ শিল্পীরা অসুখে পড়লে সেসব নিয়ে নিউজ হলে লোকে হাসাহাসি করে। ভাবে সরকারি সাহায্য পাওয়ার জন্য এসব অসুখের নাটক।

আমি সেই লজ্জা সইতে পারবো না। এজন্য কাউকে ঘটা করে আমার অসুখটির কথা জানাইনি। নিরবে নিরবে যুদ্ধ করে চলেছি মরণব্যাধি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে।

পলি সায়ন্তনী আরও বলেন, ‘তবে কষ্ট লেগেছে এজন্য আমার সহকর্মীদের নিরবতা দেখে। সংগীতের অনেক মানুষই জানেন আমি ক্যান্সারে আক্রান্ত। তারা জেনেও কোনোদিন আমার খোঁজ নিতে আসেনি।

এত এত কাছের মানুষ ছিলো আমার। একটা মানুষও দেখতে আসেনি আমাকে। অনেকে দেখা করার কথা বলেও দেখা করেননি। আমাকে এড়িয়ে গেছেন এখনও যাচ্ছেন।

তারা কেউ দূর থেকেও জিজ্ঞেস করেনি কীভাবে চলছি, অসুখের কী চিকিৎসা নিচ্ছি। অথচ তারা আমার খুব কাছের। আমার মনকে তারা খুব সহজেই সাহস দিতে পারতেন। এই অসহায়ত্ব আমাকে খুব কষ্ট দিয়েছে।’

তিনি জানান, কিছু মানুষ আবার তার বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ আমাকে একেবারে অবাক করে দিয়েছেন। যাদের কাছে আমার কোনো প্রত্যাশা নেই তারা আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। সঙ্গীত জগতের বেশ কয়েকজন আমাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করেছেন।

আমার চিকিৎসার খোঁজ খবর নিয়েছেন। আমার বেশ কয়েকজন বন্ধু ফেসবুকে গ্রুপ খোলে ও রাস্তায় গিয়ে টাকা তুলে আমাকে সাহায্য করেছে। এই ঋণ কী দিয়ে শোধ করা যায় আমি জানি না। কয়েকজন অল্প পরিচিত শিল্পী ও সহকর্মীরা আমাকে সাহায্য করেছেন।’

নিজের বোন ডলি সায়ন্তনী ও ভাই বাদশা বুলবুলের ভূমিকা উল্লেখ করে পলি সায়ন্তনী বলেন, ‘আমার বোন ও দুলাভাই অনেক কিছু করছেন আমার জন্য। তারা না থাকলে আমার কী অবস্থা হতো আল্লাহই জানেন। বুলবুল ভাই সাধ্য মতো চেষ্টা করেছেন। তাদের নিজেদেরও তো পরিবার আছে, তাই আর চাপ দিতে চাই না।’

পলি তার চিকিৎসা নিয়ে আরও বলেন, যতদিন টাকা ছিল,নিয়মিত চিকিৎসা চলেছে। যতোদিন সাধ্যে ছিল চিকিৎসা যাবো ভেবেছিলাম। কিন্তু আর আর টাকা নেই। টাকার অভাবে আর চিকিৎসা করাতে পারছি না। আমি কার কাছে যাবো, কাকে বলবো! কষ্ট লাগে, ৩০-৩৫ বছর ধরে গান করছি আমি, ডলি আপা ও বুলবুল ভাই।

শিল্পমনা একটি পরিবারের সন্তান হিসেবে তিন ভাইবোন মানুষকে গান শুনিয়ে জীবন পার করে দিলাম। কী পেলাম! কী মূল্যায়ণ হলো তার! কিছুই না। এই মিডিয়া, এই গানের আঙিনা খুব নিষ্ঠুর আর স্বার্থপর। যতদিন শিল্পী গান গেয়ে যায় ততদিন তার কদর।’

পলি সায়ন্তনী আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘ উনি মানব দরদী শিল্প ও সংস্কৃতি বান্ধব মহান নেত্রী। উনার কাছ থেকে আমাদের শিল্পীরা কেউ খালি হাতে ফেরেননি।

আমি সবিনয়ে উনার সাহায্য কামনা করছি। আমি সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কাছে সাহায্যের জন্যে আবেদন করেছি।

আমার বিশ্বাস আমার সাহায্যের আবেদন উনার নজরে আসলে তিনি আমার জীবন বাঁচাতে ভূমিকা রাখবেন। আমি বিশ্বাস করি উনার সাহায্য পেলে আমি চিকিৎসার মাধ্যমে ক্যান্সার জয় করে আবারও সুস্থ সুন্দর ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবো। সেজন্য আমি আমাদের মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর সদয় কৃপা কামনা করছি।’

ছায়াছন্দ

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর