35 C
Dhaka
Wednesday, May 15, 2024

ওয়ান-ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক, তথাকথিত সুশীল সমাজ ও ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা

চাকুরির খবর

খালেদা জিয়ার পছন্দের লোক একসময়ে দলীয় কর্মকর্তা ও সাবেক প্রধান বিচারপতি কেএম হাসানকে প্রধান উপদেষ্টা করে তার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে গিয়ে তীব্র গণপ্রতিরোধের সম্মুখীন হয় বিএনপি-জামাত জোট সরকার।

বিদায়ের মুহূর্তে ২০০৬ সালের অক্টোবরে সারাদেশে আওয়ামী লীগের ৬৮ নেতাকর্মীকে হত্যা করে জোট সরকার। আন্দোলনের মুখে কেএম হাসান প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিতে অপারগতা জানান।

২০০৬ সালের ২৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া পদত্যাগ করেন। বিএনপি-জামাত জোটকে পুনরায় ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের নীলনকশা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবার সংবিধান লঙ্ঘন করে দলীয় রাষ্ট্রপতি ড. ইয়াজউদ্দিন ২৮ অক্টোবর নিজেকে প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করেন। ২৯ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনি শপথ নেন।

ড. ইয়াজউদ্দিনকে তার নিরপেক্ষতা প্রমাণ সাপেক্ষে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোটে তার অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা ঘোষণা করে। কিন্তু অচিরেই এই মেরুদণ্ডহীন লোকটির স্কুল পক্ষপাতমূলক ভূমিকা এতটাই প্রকট হয়ে ওঠে যে প্রতিবাদে ৪ জন উপদেষ্টা ১১ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন।

ড. ইয়াজউদ্দিনের পুতুল তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিএনপি-জামাত জোটের নির্দেশ মানতে গিয়ে অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচনের সকল সম্ভাবনা নস্যাৎ করেন। ইয়াজউদ্দিন ভোটার তালিকা সংশোধন এবং বিতর্কিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার এমএ আজিজকে অপসারণ না করেই নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেন। পরে আন্দোলনের চাপে এমএ আজিজ ছুটি গ্রহণ করেন।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার হন বিচারপতি মাহফুজুর রহমান। দ্বিতীয়বার তফসিল পুনর্নির্ধারণ করে ২২ জানুয়ারি ২০০৭, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। জাতীয় পার্টি মহাজোটে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন জাতীয় পার্টির নেতা এরশাদকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে।

নির্বাচন কমিশন ও ইয়াজউদ্দিন সকল প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আয়োজন অব্যাহত রাখে। এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের আর কোনো সম্ভাবনা থাকে না।

এমতাবস্থায় মহাজোট ৩ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়। মহাজোট ত্রুটিমুক্ত নতুন ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং ইয়াজউদ্দিনের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ দাবি করে এবং ৮ ও ৯ জানুয়ারি অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। সারাদেশে শুরু হয় গণগ্রেফতার।

৮ জানুয়ারি থেকে বঙ্গভবন অবরোধ শুরু হয়। ১০ জানুয়ারি বঙ্গভবন সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। মহাজোটের সমাবেশ একই মঞ্চে শেখ হাসিনা, এরশাদ, ড. কামাল হোসেন, ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও কর্নেল অলি আহমেদ উপস্থিত হয়ে আন্দোলনের অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

১১ জানুয়ারি তিন বাহিনী প্রধান বঙ্গভবনে ইয়াজউদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য করেন।  সেনাবাহিনীর চাপে ইয়াজউদ্দিন রাষ্ট্রপতি হিসেবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।

২২ জানুয়ারির নির্বাচন বাতিল করা হয়।  এসব নাটকীয় ঘটনার পর গভীর রাতে সেনাবাহিনীর অনুরোধে ড. ফখরুদ্দীন আহমেদ প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণে সম্মত হন। ১২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফখরুদ্দীন আহমেদ প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহন করেন। এভাবেই অবসান হয় পুতুল নাচের ইতিকথা।

সেনাবাহিনীর সমর্থনে ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে নতুন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়। দেশে জরুরি অবস্থা জারি ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দীর্ঘদিন নিষিদ্ধ থাকে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নানা সীমাবদ্ধতা, দুর্বলতা, ভুল-ত্রুটি ও সফলতা নিয়ে প্রায় দুই বছর ক্ষমতাসীন ছিল। এ সরকার বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ, নির্বাচন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন প্রভৃতি পুনর্গঠন করে। সরকারের আরেকটি ইতিবাচক কাজ হলো ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন।

অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সেনা  বাহিনী এ কাজটি সম্পন্ন করায় প্রশংসিত হয়। সরকার নির্বাচনী আইন এবং প্রক্রিয়ারও উল্লেখযোগ্য সংস্কার সাধন করে। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর একটি অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং দেশবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য এ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করে। সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৩৩টি আসন এবং অন্যান্য অংশীদার দলসহ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৬২টি আসনে জয় লাভ করে।

কিন্তু এ-বিজয় খুব সহজসাধ্য ছিল না। ২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের এক গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দলীয় সভাপতি সামগ্রিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে অবিলম্বে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।

তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাদের কার্যকাল প্রলম্বিত করতে পারে এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। জ্যেষ্ঠ নেতারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সময় দেওয়ার কথা বলেন।

শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে দ্বিমত প্রকাশ করেন। সভায় গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এক মাস সময় ইতোমধ্যে অতিক্রান্ত হয়েছে। এখনো নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। একটি নির্ভুল ও সঠিক ভোটার তালিকা প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন করে যত দ্রুত সম্ভব একটি অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এই সভা আহ্বান জানাচ্ছে।

জরুরি অবস্থার আড়ালে সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন, ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন, দুর্নীতিবিরোধী অভিযান সফল করার নামে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কার্যকাল দীর্ঘায়িত করা হয়।

শেখ হাসিনার আশঙ্কাই সত্য প্রমাণিত হয়। শুধু তা-ই নয় সেনাবাহিনী প্রধান মঈন ইউ আহমেদ ও তার সহযোগী একটি অংশের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাও গোপন থাকে না।

সেনা গোয়েন্দা বাহিনীর সাহায্যে একাধিক ‘কিংস পার্টি’ গজিয়ে ওঠে। নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে বিষোধগার করে নিজেই নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নেন। কিন্তু অঙ্কুরেই তার সেই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়।

ইতোমধ্যে তথাকথিত ‘সুশীল সমাজ’ মাইনাস টু ফর্মুলা অর্থাৎ রাজনীতি থেকে শেখ হাসিনাকে বিদায় জানানোর আওয়াজ তোলে। জনপ্রিয় দৈনিক প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ২০০৭ সালের ১১ জুন স্বনামে ‘দুই নেত্রীকে যেতে হবে’ শীর্ষক প্রতিবেদন লিখে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। সুশীল সমাজের তৎপরতা বিচ্ছি কোনো ব্যাপার ছিল না।

সেনা নেতৃত্বের একাংশের সমর্থন তো ছিলই, সেই সঙ্গে কোনো কোনো বিদেশি শক্তিরও এর পেছনে মদত ছিল বলে জানা যায়। ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সেনা নেতৃত্ব আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করে।

সংস্কারের নামে প্রলোভন ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করায় বিএনপিতে দলের মহাসচিব মান্নান ভূঞা, সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান প্রমুখসহ দলীয় নেতৃত্বের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।

সাইফুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও মেজর হাফিজকে অস্থায়ী মহাসচিব করে বিএনপির স্থায়ী কমিটি গঠিত হয়। বিএনপি কার্যত বিভক্ত হয়। অন্যদিকে শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের আগেই, ফোরামে উত্থাপন না করে দলের চার প্রভাবশালী নেতা প্রকাশ্যে সংস্কারের প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পৃথক পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে লিখিতভাবে সংস্কার প্রস্তাব উত্থাপন করেন। আমির হোসেন আমু লিখিত কোনো প্রস্তাব উত্থাপন না করলেও তিনিও এ ব্যাপারে সোচ্চার ছিলেন। তবে দলে বিএনপির মতো কোনো ভাঙন ধরানো সম্ভব হয় নি।

শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তার দেশে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বিদেশে অবস্থানকালে ৯ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা এবং ২৩ মে হুলিয়া জারি করা হয়।

এ সময়ে দেশে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে শেখ হাসিনা ওই নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ করে স্বদেশের পথে যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুক্তরাজ্য পৌছান। গ্রেফতার-নির্যাতনের ভীতিকে উপেক্ষা করে যে কোনো উপায়ে দেশে ফেরার ঘোষণা দেন তিনি। সরকারের এই তুঘলকি অবস্থানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নিন্দার ঝড় ওঠে।

অবশেষে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে বাধ্য হয় সরকার। ২০০৭ সালের ৭ মে শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। সরকারি গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢাকা বিমানবন্দরকে ঘিরে বিশাল গণসমাবেশ শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা জানায়।

হাসিনা খালেদা জিয়াকে জোর করে বিদেশে পাঠানোরও প্রতিবাদ জানান। শেখ হাসিনার দৃঢ়তার কাছে সরকার পিছু হটতে বাধ্য হলে, বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েও শেষ মুহূর্তে খালেদার নির্বাসন ঠেকে যায়।

এর পরও প্রধানত শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে নির্বাসিত করার চেষ্টা থেমে থাকেনি। ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে পর্যন্ত শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াসহ দেশে দেড় শতাধিক শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।

আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করতে না পারা, শেষ হাসিনার অনমনীয় ভূমিকা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মধ্যে নির্বাচন অনুকূল মনোভাব জোরদার হওয়া, জরুরি অবস্থার নামে রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী-শিল্পপতি, মধ্যবিত্ত, ছাত্র, শিক্ষক এবং গরিব মানুষের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অনাকাঙ্ক্ষিত বাড়াবাড়ির ফলে গণ-অসন্তোষ, দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে সেনা কর্মকর্তাদের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ সর্বোপরি বিরাজমান আর্থ-সামাজিক সংকট মোকাবিলায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যর্থতা প্রভৃতি কারণে ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা অকার্যকর হয়ে পড়ে।

শেখ হাসিনার বিনাশর্তে মুক্তি ও অবিলম্বে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে আওয়ামী লীগ জরুরি আইন উপেক্ষা করে ব্যাপক জনমত গড়ে তোলে। ২০০৮ সালের ২৬ মে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা। সভায় সকল জেলা থেকে প্রায় ১০ হাজার প্রতিনিধি উপস্থিত হয়।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভা থেকে আওয়ামী লীগ সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে “শেখ হাসিনাকে ছাড়া আওয়ামী লীগ কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না।

অতঃপর দ্রুতই দৃশপট বদলে যেতে শুরু করে। সরকার ও নির্বাচন কমিশন অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে।

ক্রমবর্ধমান গণ-অসন্তোষ এবং শেখ হাসিনাকে ছাড়া নির্বাচন নয়, আওয়ামী লীগের এই অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৮ সালের ১২ জুন শেখ হাসিনাকে প্যারোলে মুক্তি দেয়।

শেখ হাসিনা চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র গমন করেন। ইতোমধ্যে খালেদা জিয়া এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও মুক্তি পান। ২ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। চিকিৎসা শেষে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসেন।

নির্বাচনের তারিখ নিয়ে দর কষাকষির পর নির্বাচনের তফসিল পুনর্নির্ধারণ করা হয়। ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮ নবম জাতীয় সংসদের নির্বাচন এবং ২২ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়।

আওয়ামী লীগ পরিবর্তিত তফসিল মেনে নেয়। ২৯ ডিসেম্বর অবাধ নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৪ দল ও পার্টিসহ গঠিত ‘মহাজোট’ ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এককভাবে দুই-তৃতীয়াংশ আসন লাভ করে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের ভরাডুবি হয়। নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৪৯.০২ শতাংশ ভোট এবং ২৩০টি আসন লাভ করে।

বিএনপি পায় ৩২.৭৪ শতাংশ ভোট এবং ৩০টি আসন, জাতীয় পার্টি ৬.৬৫ শতাংশ ভোট ও ২৭টি আসন, জামায়াতে ইসলামি ৪.৫৫ শতাংশ ভোট ও ২টি আসন লাভ করে। অবশিষ্ট দল ও স্বতন্ত্ররা মিলে পায় ৭.০৪ শতাংশ ভোট।

চারদলীয় জোট সর্বমোট ৩৩টি আসন লাভ করে। জাসদ (ইনু) ৩ ও ওয়ার্কার্স পার্টির ২ আসনসহ মহাজোটের প্রাপ্ত মোট আসন দাঁড়ায় ২৬২টি।

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।

সূত্র: ঢাকা টেলিভিশন

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর