আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, `খুনিচক্র বঙ্গবন্ধুর ছায়াকেও ভয় পেতো বলেই জাতির পিতার পরিবার-পরিজনকে হত্যা করেছে।
এবং সেই খুনিদের পৃষ্ঠপোষকেরাও বঙ্গবন্ধুর ছায়াকে ভয় পায়। তাই তারা বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে, অস্বীকার করার অপচেষ্টা চালায়।`
তথ্যমন্ত্রী রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবন মিলনায়তনে তথ্য মন্ত্রণালয়ের তিন সংস্থা চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতর, গণযোগাযোগ অধিদফতর ও চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড আয়োজিত `সংকটে সংগ্রামে নির্ভীক সহযাত্রী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শন` শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
গণযোগাযোগ অধিদফতরের মহাপরিচালক বিধান চন্দ্র কর্মকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা: মুরাদ হাসান এবং সচিব মো: মকবুল হোসেন বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান বলেন, `বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীতে জাতির সামনে প্রশ্ন, তারা কেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবকে হত্যা করলো, তারা কেন ছোট্ট শিশু শেখ রাসেলকেও হত্যা করলো? আসলে খুনিচক্র বঙ্গবন্ধুর ছায়াকেও ভয় পেতো বিধায় তারা বঙ্গমাতা থেকে ছোট্ট শেখ রাসেলকেও হত্যা করেছে। আর সেই খুনিচক্রের দোসরেরা এখনো বাংলাদেশে আস্ফালন করে।
কিন্তু ক্রমাগতভাবে যারা বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করেছে, খলনায়ককে নায়ক বানানোর অপচেষ্টা চালিয়ে এসেছে, আস্তে আস্তে তারাই ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে যাচ্ছে, মানুষ সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে, বলেন হাছান মাহমুদ।
ড. হাছান বলেন, `বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব আজীবন বঙ্গবন্ধুকে ছায়ার মতো সঙ্গী ছিলেন, মরণেও তিনি সঙ্গী হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু মুজিবকে হত্যা করার পর যখন ঘাতকের দল যে কামরার মধ্যে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা ছিলেন সেখানে হাজির হন, তখন তিনি নিজেই বলেছিলেন তোমরা তাকে মেরেছো আমাকে এখানেই মেরে ফেলো। এই বলেই তিনি মৃত্যুকে আলিঙ্গণ করেছিলেন।`
মানুষের সাফল্যের পেছনে জীবনসাথীর একটি বড় ভূমিকা থাকে, যা ছাড়া মানুষের পক্ষে সফল হওয়া কঠিন আর বঙ্গবন্ধুর ক্ষেত্রে সেটি আরো বেশি সত্য ছিল, উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যশেষে করোনার টিকা নিয়ে বিএনপির বক্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার কোটি কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করায় বিএনপি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।
ড. হাছান বলেন, বিশ্বের কয়েকটি দেশে টিকাদান শুরুর সময়েই বাংলাদেশ যখন ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড এস্ট্রাজেনেকার টিকা আনার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন থেকেই বিএনপি নেতারা জনমনে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, বলেছে টিকা নিলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে।
তারাই আবার পরে লজ্জায় গোপনে এবং কেউ কেউ প্রকাশ্যেই টিকা নিয়েছে। মাঝখানে ভারতের করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় টিকা আসতে দেরির সময়ও বিএনপি সমালোচনা করতে পিছপা হয়নি। কিন্তু এখন সরকার কোটি কোটি টিকা ডোজ সংস্থান করে গণটিকার ব্যবস্থা করেছে দেখে তারা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান তার বক্তৃতায় বলেন, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব শুধু বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণীই ছিলেন না, নিকটতম প্রাজ্ঞ সহকর্মী ও সবচেয়ে বড় প্রেরণাদাত্রী। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হচ্ছে বলেই আজ আমরা বঙ্গমাতার জন্মদিন পালন করতে পারছি, আগে তা সম্ভব হয়নি।
সচিব মো: মকবুল হোসেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সাথে সারাজীবন ত্যাগ-তিতিক্ষা, ধৈর্য ও সংগ্রামের যে নজীর বঙ্গমাতা স্থাপন করেছেন ইতিহাসে তার তুলনা নেই। আমরা তাকে পরম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়া এবং চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো: জসীম উদ্দিন। অনুষ্ঠানের শুরুতে `বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জীবন ও কর্ম` প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।