করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা জানার পরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে মানুষের উদাসীনতার কারণেই সরকার বাধ্য হয়ে কঠোর লকডাউন বা শাটডাউনের পথ বেছে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
শনিবার (২৬ জুন) রাজধানীর মিন্টোরোডের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী জানান, শাটডাউন নিশ্চিতে সরকার কঠোর শক্ত অবস্থানে থাকবে। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নামানো হবে সেনাবাহিনী।
শুক্রবার রাতে সরকারের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্তের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের মধ্যে সেই ভীতিটা নেই। মানুষ জানে করোনা কত ভয়াবহ, কত ভয়ানক। এরপরও মানুষ মানছে না। সেজন্য আসলে সরকারকে বাধ্য হয়েই এই লকডাউনের সিদ্ধান্তে যেতে হয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুতে জনগণের মধ্যে ভীতি ছিল বলে মনে করেন মন্ত্রী। জানান, লোকাল লকডাউন বা নানা বিধিনিষেধের কথা বলা হলে মানুষ সেগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অনুসরণ করার চেষ্টা করত। কিন্তু ধীরে ধীরে মানুষের মধ্যে করোনা নিয়ে ভীতি কমে গেছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরনে বহু মানুষ এতোমধ্যে সংক্রমিত হয়েছে, অনেক মানুষ মারা গেছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে, পরে ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলোতে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, লকডাউন ঘোষণা করা হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে মানুষ এতে মানছেন না।
তিনি বলেন, ‘যে ধরনটা এখন বাংলাদেশে সংক্রমিত হয়েছে, দ্রুত ছড়াচ্ছে, সেটা যেহেতু অনেক বেশি মারাত্মক, অনেক বেশি মানুষে সংক্রমণ ঘটাতে পারে সেজন্য আমাদের সবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা প্রয়োজন। স্বাস্থ্যবিধি অনেকে মানছেন না বলেই সরকারকে কঠোর হতে হচ্ছে।’
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে জনগণের শৈথিল্য বা উদাসীনতা দেখা গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে যাবে বলেও সতর্ক করেছেন মন্ত্রী। বলেন, ‘কঠোর না হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। জনগণ অনুসরণ না করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হতে হবে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জনগণকে বিনীতভাবে অনুরোধ জানাই নিজের স্বার্থে, পরিবারের স্বার্থে, সমাজের স্বার্থে, সমগ্র দেশের স্বার্থে আমরা যেন সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি।’
প্রতিবেশি ভারতের দেখাদেখি এই কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও জানালেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ভারত উপকার পেয়েছে।
ইতোমধ্যে তাদের সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। আমাদের দেশে যেখানে সংক্রমণ ৮ শতাংশের নিচে নেমে গিয়েছিল কিছুদিন আগে, সেটি এখন আবার ২০ শতাংশের উপরে উঠে গেছে। সুতরাং একই ধরনের পদ্ধতি আমরা গ্রহণ করতে যাচ্ছি।’
মন্ত্রীর আশা, এবার পরিবার-পরিজন দেশের কথা ভেবে সবাই নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন। তিনি বলেন, ‘সরকার জনগণের স্বার্থেই এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। দেশের মানুষকে সুরক্ষা দেয়ার জন্যই এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।