আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতাদেরকে সক্রিয় করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে কয়েকজন হেভিওয়েট নেতার সঙ্গে কথা বলছেন এবং তারা যেন করোনা মোকাবেলার সহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন, জনগণকে বোঝান এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে পরামর্শ দেন সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন প্রবীণ নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তাদের সাথে আলোচনা করেছেন।
আর এর ইতিবাচক ফলাফল দেখা যাবে খুব শীঘ্রই এমনটি বলেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগের সমস্ত নেতারা জনপ্রিয় এবং দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদেরকে সক্রিয় করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককেও বার্তা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত কিছুদিন ধরেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের জনপ্রিয় নেতারা এক ধরনের নীরবতা পালন করছেন। কোন ইস্যুতেই তাদেরকে সরব দেখা যাচ্ছে না। জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা তোফায়েল আহমেদ আমলাতন্ত্রের বিরুদ্ধে সরাসরি কথা বলেছেন এবং এই বক্তব্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
এর সূত্র ধরেই আওয়ামী লীগের মধ্যে আমলাদের কর্তৃত্ব কমানোর পক্ষে মতামত তৈরি হয়েছে। যদিও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা আমলাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের সিংহভাগ নেতারাই মনে করছেন যে, আমলাদের বাড়াবাড়ি এবং একের পর এক ভুল সিদ্ধান্তের কারণে সরকারের মধ্যে চাপ বাড়ছে।
তা ছাড়া আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতাই মনে করছেন যে কঠোর লকডাউন যেটি ঈদের পর থেকে শুরু হবে সেটি মানুষকে মানানোর জন্য রাজনৈতিক উদ্যোগ দরকার। এখনো রাজনৈতিক নেতারাই জনপ্রিয় এবং তাদের কথা মানুষ শোনে। আর এই বাস্তবতায় রাজনৈতিক উদ্যোগকে বাড়ানোর জন্য জনপ্রিয় নেতাদেরকে কাজ করাতে হবে।
ইতিমধ্যে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে করোনা সম্পর্কে সচেতনতার জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। এই কমিটিতে যেন রাজনৈতিক নেতারা থাকে সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ঈদের সময় আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে সেই সময় যেন মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানে সে জন্য মাস্ক বিতরণ এবং স্বাস্থ্যবিধি মানার উপর সচেতনতা সৃষ্টির জন্য নেতাকর্মীরা মাঠে নামবেন বলে জানা গেছে। সিনিয়র নেতাদেরকে মানুষকে আহ্বান জানানো সম্পর্কিত বিবৃতি, বক্তব্য রাখার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এর মাধ্যমে সিনিয়র নেতারা তাদের নীরবতা ভাঙতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন যে, শুধু সংসদে নয় বা সরকারের সমালোচনা করে নয়, সিনিয়র নেতাদেরকে জনগণকে সচেতন করা, জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা এবং সরকারের ভালো কাজগুলোকে প্রকাশ করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।
এই নির্দেশনাতেই হয়তো সামনের দিনগুলোতে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক এর মত সিনিয়র নেতারা করোনা পরিস্থিতি, সরকার যে সমস্ত কর্মকাণ্ড করছেন সে ব্যাপারে বক্তব্য রাখা হবে।
লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাড়া কেউই কোনো রাজনৈতিক ইস্যুতে বক্তব্য রাখছেন না। এটাকে অনেকেই সরকারের দুর্বলতা মনে করছেন এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তিও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এটি কাটিয়ে উঠানোর জন্যই হেভিওয়েট নেতাদেরকে সরব করা হচ্ছে এবং তারা যেন বিভিন্ন বিষয়ে মুখ খোলেন কথা বলেন সেটি নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতাদেরকেও হয়তো সরব দেখা যাবে।
বাংলা ইনসাইডার