২০০৭ সালের এই দিনে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার জন্যই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, সেটি এখন প্রমাণিত।
শুধু তাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা নয়, বিরাজনীতিকরণ একটি প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্যই শেখ হাসিনা এবং বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো সেইসময় ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত গীতা পাসির বার্তা থেকে দেখা যায় যে তারা মনে করতেন রাজনীতিতে শুদ্ধিকরণের জন্য দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা দরকার। আর এখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে সম্মতি ছিল সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
একই সাথে সেই সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জনও মাইনাস ফর্মুলার পক্ষে ছিলেন বলে এখনকার নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়। তিনিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেই সময়ে রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া বিউটেনিস এর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন এবং মাইনাস ফর্মুলা বাস্তবায়নের জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন।
তবে এখন এ ব্যাপারে গভীর গবেষণা করে দেখা যায় যে, আসলে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মাইনাস ফর্মুলার ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন মূলত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কারণে।
আর অনেকেই মনে করেন যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসই হলেন বাংলাদেশে মাইনাস ফর্মুলার প্রধান উদ্যোক্তা। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়াও যারা এই মাইনাস ফর্মুলায় ছিলেন তাদেরকে নিয়েই এই প্রতিবেদন।
১. ড. মুহাম্মদ ইউনূস: ড. মুহাম্মদ ইউনূস নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পরপরই রাজনীতির মাঠে নামেন এবং তিনি একটি রাজনৈতিক দল করার ঘোষণা দেন। এই ঘোষণা ছিল তার মূলত মাইনাস ফর্মুলা বাস্তবায়নের মাস্টারপ্ল্যানের অংশ। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মূল লক্ষ্য ছিল ক্ষমতা দখল এবং দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা। এজন্যই তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতকে বুঝেছিলেন যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সহিংসতা, দুর্নীতি ইত্যাদি বন্ধ করতে হলে তার কোনো বিকল্প নেই। আর একারণে প্রয়োজন তার ক্ষমতা দখল। আর সেটি সম্ভব করতে গেলে শেখ হাসিনা এবং বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করতে হবে। আর এ কারণেই ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুই নেত্রীকে সরিয়ে দেওয়ার চিন্তার প্রথম উদ্যোক্তা।
২. ড. কামাল হোসেন: শুধু ড. মুহাম্মদ ইউনূস একা নন। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মাইনাস ফর্মুলায় যুক্ত হয়েছিলেন ড. কামাল হোসেন। ড. কামাল হোসেন নানা কারণেই শেখ হাসিনার বিরোধী হয়েছিলেন। ৯১ সালে আওয়ামী লীগ থেকে সরে যাওয়ার পর তিনি আওয়ামী লীগ বিশেষ করে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে কোন অবস্থান গ্রহণ করতে সব সময় এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন। আর তাই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তিনিও এই মাইনাস ফর্মুলা প্রণয়নের মাস্টারপ্ল্যানে অংশগ্রহণ করেন।
৩. মতিউর রহমান: মাইনাস ফর্মুলার যে রূপকল্প সেটি বাস্তবায়ন করেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। মতিউর রহমান এই মাইনাস ফর্মুলা কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায় তার রূপকল্প বা পেপার ওয়ার্ক করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বলে জানা যায়।
৪. মাহফুজ আনাম: মাহফুজ আনাম ডেইলি স্টারের সম্পাদক। তিনিও মাইনাস ফর্মুলা রূপকল্প এবং মাইনাস ফর্মুলার মাধ্যমে কিভাবে একটি নতুন রোডম্যাপ তৈরি হবে সেই রোডম্যাপ তিনি এবং মতিউর রহমানই প্রণয়ন করেছিলেন। আর সেই মাইনাস ফর্মুলার অংশ হিসেবেই তারা দুই নেত্রীর বিরুদ্ধে লাগাতার কুৎসা রটনায় লিপ্ত হয়েছিলেন। মতিউর রহমান তার পত্রিকায় দুই নেত্রীকে সরে যেতেই হবে শিরোনামে মন্তব্য প্রতিবেদন লিখেছিলেন। সেটিই ছিল মাইনাস ফর্মুলার তাত্ত্বিক পটভূমি।
৫. ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: ওয়ান-ইলেভেনে যে সুশীল সমাজ সক্রিয় হয়েছিল তার একজন ছিলেন ড. দেবপ্রিয়। তিনিও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই মাইনাস ফর্মুলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করেছিলেন।
৬. বদিউল আলম মজুমদার: বদিউল আলম মজুমদার ছিলেন মাইনাস ফর্মুলা বাস্তবায়ন এবং বিরাজনীতিকরণের একজন অন্যতম প্রধান তাত্ত্বিক ব্যক্তিত্ব। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যে ফর্মুলা সে ফর্মুলা বাস্তবায়নের জন্য যারা মাঠে কাজ করেছিলেন তাদের মধ্যে বদিউল আলম মজুমদার ছিলেন অন্যতম।
বাংলা ইনসাইডার