অনলাইন ডেস্ক: হিজাব না পরার কারণ দেখিয়ে আফগানিস্তানে দেশি-বিদেশি সব এনজিওতে নারীদের কাজ করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) তালেবান তাদের নির্দেশের পক্ষে ব্যাখ্যা দিয়ে জানায়, এনজিও কর্মীরা হিজাব না পরে শরিয়া আইন ভঙ্গ করছে।
গত বছর আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর তালেবান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আধুনিক সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই শরিয়া আইন প্রণয়ন করা হবে দেশটিতে।
তবে একের পর এক নারী অধিকার খর্ব করে চলেছে শাসকগোষ্ঠীটি। সম্প্রতি আফগানিস্তানের নারীদের উচ্চশিক্ষার অধিকার কেড়ে নেয় তালেবান। এটি ঘিরে বিতর্ক-প্রতিবাদের মধ্যেই এল নতুন আরেক নির্দেশ। দেশটির সমস্ত এনজিওগুলোতে নারীদের কাজ নিষিদ্ধ করল তালেবান শাসক।
এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। তাদের একজন বলেছেন, ‘আমি যদি কাজে যেতে না পারি, আমার পরিবারে খরচ কে দেবে’। আরেকজন এই নির্দেশকে ‘হতাশাজনক’ উল্লেখ করে বলছেন, তালেবানের পোশাকের আইন মেনেই কাজ করতেন তিনি।
আরেক নারী তালেবানের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, এখন থেকে তাঁর ঘরের খরচ আর ছেলেমেয়ের খাবার জোগাতে হিমশিম খেতে হবে।
এদিকে তালেবানের এই নির্দেশকে মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। এই নির্দেশকে ‘মানবাধিকারের মৌলিক নীতির গুরুতর লঙ্ঘন’ বলে বর্ণনা করেছেন সংস্থার একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
আফগানিস্তান জুড়ে বড় পরিসরে ত্রাণ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত জাতিসংঘের সংস্থাগুলো। তালেবানের এই নির্দেশের পর কীভাবে কার্যক্রম চলবে তা নিয়ে সংস্থাগুলোর একটি বৈঠক করার কথা রয়েছে।
এ ছাড়া গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেন, এমন সিদ্ধান্তের ফলে লাখ লাখ মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সহায়তা কার্যক্রম ব্যাহত হবে।
সারা বিশ্বেই মানবিক সেবামূলক কার্যক্রমে প্রধান ভূমিকায় কাজ করেন নারীরা। এই সিদ্ধান্ত আফগান জনগণের জন্য বিপর্যয়কর হবে বলেও মনে করেন ব্লিঙ্কেন।