অনলাইন ডেস্ক: নির্মাণ খাতের সবচেয়ে ব্যয়বহুল পণ্য এমএস রড। চাহিদার প্রায় পুরোটা দেশে উৎপাদিত হলেও কাঁচামালের জন্য নির্ভর করতে হয় বাইরের দেশগুলোর ওপর। গেল কয়েক মাসে ডলারের অতিরিক্ত দাম এবং পরিবহন ব্যয়ের পাশাপাশি বেড়েছে কাঁচামালের দাম। যার স্পষ্ট প্রভাব পড়েছে খুচরা ও পাইকারিতে।
এক বিক্রেতা বলেন, আগে মাসে ২৫০ থেকে ৩০০ টন রড বিক্রি করতাম। এখন তা নেমে এসেছে ৫০ থেকে ৬০ টনে। ফলে দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন-সবদিক থেকেই আমার লোকসান হচ্ছে।
আরেক বিক্রেতা বলেন, আগে ৬০,০০০ খাটালে লাভ হতো ১ হাজার বা ১২০০ টাকা। এখন ৯০-৯৮,০০০ টাকার মাল কিনে লাভ হয় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। অপর বিক্রেতা বলেন, এখন সপ্তাহে ১/২ দিন বনি হয়। আবার কোনো সপ্তাহে হয় না।
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে নির্মাণ খাতের প্রধান দুই উপাদান রড ও সিমেন্ট। এ খাতের ব্যবসায়ীদের মতে, কাঁচামালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে উৎপাদনে। কারখানা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকে। অন্যদিকে, দাম বাড়ার কারণে বিক্রি নেমেছে চারভাগের একভাগে।
বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, দেশে বছরে ৭৫ লাখ টন রডের চাহিদা থাকলেও উৎপাদন ক্ষমতা দেড়গুণের ওপরে। কিন্তু দাম বাড়ায় অনেকেই কমিয়েছে উৎপাদন। অন্যদিকে, ঊর্ধ্বমুখী কাঁচামাল বা স্ক্র্যাপের দামও।
বাংলাদেশ আয়রন অ্যান্ড স্টিল ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু যর গিফারি জুয়েল বলেন, আমাদের স্থানীয় বাজারে ডলারের উচ্চ দাম এবং শুল্কের কারণে রড-স্টিলের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আমরা চাইলেও তা কমাতে পারছি না।দেশের শীর্ষস্থানীর রড উৎপাদক প্রতিষ্ঠান আনোয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন জানান, পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়েই উৎপাদন কমিয়েছেন তিনি। একই পথে হাঁটতে হয়েছে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকেও। এমন অবস্থায় ভবিষ্যৎ নিয়েও খুব বেশি ইতিবাচক হতে পারছেন না এ উদ্যোক্তা।
মনোয়ার হোসেন বলেন, সবকিছু মিলিয়ে আমাদের দেশের স্টিল ইন্ডাস্ট্রি চাপে আছে। আমরা অনিশ্চিত অবস্থায় এসে পড়েছি। এ পরিস্থিতিকে আতঙ্ক সৃষ্টি করাটা ঠিক হবে না। আমাদের বিক্রি কমেছে।
আমি অন্যদের কথা বলতে পারব না। আমার উৎপাদন করার ক্ষমতা ৯০০ টন। কিন্তু করছি ৪৫০ টন। স্বাভাবিকভাবেই ৫০ শতাংশ উৎপাদন ও বিক্রি কমে গেছে।