অনলাইন ডেস্ক: একটি দেশের অর্থনীতি কতটা শক্তিশালী, তা অনেকটাই নির্ভর করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উপর। আর্থিক বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা, আমদানি ব্যয় মেটানো, স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন রোধ, মুদ্রানীতি জোরদার করা সহ বৈদেশিক দায় পরিশোধে সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্পদের মজুত হিসেবে বৈদেশিক মুদ্রা মজুত রাখে।
করোনা মহামারির সংকট কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে নাকাল বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি। জ্বালানি, খাদ্যসহ নিত্যপণ্যের দাম উর্ধ্বমুখী। বেড়ে যাচ্ছে আমদানি ব্যয়।
যার ফলে রির্জাভ সংকটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং ডলারের বিপরীতের মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় চীন, জাপান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে তৈরি সংকটে বাণিজ্য ব্যবস্থায় অস্থিরতা শুরু হওয়ায়, বিভিন্ন দেশের রিজার্ভ এখন কমছে। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বিদেশি মুদ্রার মজুত থাকে চীনে।
দেশটির রিজার্ভ গত সাত মাসে ২০০ বিলিয়ন ডলার কমে এখন ৩ হাজার ৫০ বিলিয়ন ডলার। দ্বিতীয় স্থানে জাপানের রিজার্ভ, যা ১০০ বিলিয়ন ডলার কমে ১ হাজার ৩০০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। এরপর, সুইজারল্যান্ডের রিজার্ভ ৯৫০ বিলিয়ন ডলার থেকে ৮৪০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
রিজার্ভ সংকটে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোও। ভারতের রিজার্ভ এখন ২০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে। ডলারের বিপরীতে রুপির মান ধরে রাখতে হস্তক্ষেপ করায় দেশটির রিজার্ভের পরিমাণ কমেছে। চলতি বছরে ভারতীয় রুপির মান ৭ শতাংশ কমেছে।
বিদেশি মুদ্রার মজুতে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পেছনেই রয়েছে বাংলাদেশ। গত সপ্তাহে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ৩৯ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার এরই মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে, এতে রিজার্ভের ওপর চাম কমে আসবে বলে আশা তাদের। পাকিস্তানের রিজার্ভ ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। আর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সঙ্কটে থাকা শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ ২ বিলিয়ন ডলারেরও কম।
এদিকে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটের কারণে অর্থনৈতিক মন্দায় জর্জরিত বিশ্বের অনেক দেশ। দক্ষিণ এশিয়া থেকে শুরু করে আফ্রিকা, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ-বেশিরভাগ দেশের অবস্থা প্রায় একই।