লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার বিভিন্্ন এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। সোমবার ৩৭ জন ও মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ২১ জন মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
আক্রান্তের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলছে বলে জরুরী বিভাগের ডাক্তার জানান। গত সপ্তাহে ঢাকায় এক ব্যবসায়ী ও রায়পুর হাসপাতালে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।
অনেকেই রায়পুর সরকারি হাসপাতাল থেকে চাঁদপুরের মতলব ডায়রিয়া হাসপাতাল চলে গেছেন। আক্রান্ত বেশিরভাগই কিশোর ও বয়স্ক।
ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে ও রোগীর চিকিৎসার ওষুধ ও শয্যা সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। করোনার মধ্যে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর ৩টার দিকে হাসপাতাল ঘুরে এবং কর্তব্যরত ডাক্তার মন্জু ও শামিমা নাসরিন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ করে গত ৭দিন ধরে পৌরসভার টাঙ্কির বিষাক্ত পানি সেবনের কারনে রোগীর সংখ্যা ও চাপ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। ডায়রিয়া পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে বলে ডাক্তার জানান।
গত বুধবার থেকে এ পর্যন্ত রায়পুরের ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ও চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন এমন রোগীর সংখ্যা প্রায় ২১০ জন ছাড়িয়ে গেছে।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ডাক্তার রুমা আক্তার জানান, গর্ভবতি নারী ও শিশুর জন্য ১০ শষ্যা এবং-পুরুষ ও মহিলাদের শয্যা সংখ্যা ২০টি হলেও প্রতিনিয়ত রোগী ভর্তি হচ্ছেন ৩০ /৪০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন।
সোমবার ও মঙ্গলবার এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৪৬ জন।-তাই বাধ্য হয়ে শয্যা সংকটের কারণে রোগীদেরকে চাঁদপুরের মতলব ডায়রিয়া হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এই ওয়ার্ডের সেবিকা রুমা ও বিলকিস আক্তার জানান, রোগীর চিকিৎসায় পর্যাপ্ত নার্স নিয়োজিত থাকলেও পরিস্কার করার মত লোক নাই। এতে ডায়রিয়া রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মো: জাকির হোসেন জানান, ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত হাসপাতাল নেওয়া ও আইভি স্যালাইন দেওয়া প্রয়োজন। সঠিক সময়ে রোগীকে হাসপাতালে এনে চিকিৎসা সেবা দিলে ডায়রিয়ার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
গত তিনদিন পৌরসভার লোকজনই বেশি ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা এবং অন্য হাসপাতালেও পাঠানো হয়।
বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব এবং তীব্র ঠান্ডায় মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। শুনেছি দুই/তিন জন ব্যাক্তি ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট বলেন, পৌরসভার পানি সবসময় পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন থাকে। বিষাক্ত পানি থাকার বিষয়টি মিথ্যা। একটি চক্র বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন ডায়রিয়া রোধে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।