মাননীয় ঈশ্বর,
আমার অভিমান দিন দিন বাড়ছে ।
মাননীয় রাষ্ট্রপতি,
আমার অভিমান দিন দিন বাড়ছে।
দেশের সকল মাননীয়গণ,
আমার অভিমান দিন দিন বাড়ছে।
আপনাদের কাছে আমার আবেদন,
আমাকে একটা সন্মানের চাকরি দিয়ে
আমার অভিমান কমানোর ব্যবস্থা করুন।
মনোলীনা আমাকে দুই মাসের সময় দিয়েছে,
ওর বাবা আমার মত বেকার ছেলের কাছে
মেয়ের বিয়ে দিবেনা!
ওর জন্য সন্মানিত চাকরিজীবীগণদের
বিয়ের প্রস্তাব আসছে।
আমাকে দুই মাসের মধ্যে সন্মানিত হতে হবে,
তারপর থেকে আমার অভিমান বাড়ছে।
মাননীয় ঈশ্বর,
আপনি অবশ্যই জানেন,
কারণ সবকিছুই আপনার অবগত,
ক্ষমতাবান মানুষদের সুপারিশ ব্যতীত
সন্মানের চাকরি এখন আর হয় না,
আপনি সকল ক্ষমতার অধিকারী,
আমি আপনার একটি সুপারিশের জন্য
দরখাস্তসহ মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ সব জায়গায় ঘুরেছি
আপনার সুপারিশ এখনো জোগাড় করতে পারলাম না,
আমার হাতে সময় কম,
দিন দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে,
আমাকে দয়া করে অভিমান কমানোর ব্যবস্থা করে দিন।
মাননীয় রাষ্ট্রপতি,
আপনি রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ ক্ষমাতাধর মানুষ,
আমি অনেক চেষ্টা করেও আপনার অফিসে ঢুকতে পারিনি,
আপনার নিরাপত্তারক্ষী আমাকে মানসিক ভারসাম্যহীন ভেবেছে,
আপনার কাছে লেখা আমার দরখাস্ত তারা জব্ধ করেছে,
আমি আপনার একজন আস্হাভাজন প্রজা ,
আমি কখনো রাষ্ট্রীয় আইন ভঙ্গ করিনি,
আপনি দয়া করে আমার জন্য একটা সন্মানের
চাকরির সুপারিশপত্র দিন,
আমার অভিমান কমানোর ব্যবস্থা করে দিন।
দেশের সকল মাননীয়গণ,
আপনাদের কাছে অনেক গোপন ক্ষমতা আছে,
আমার মতো আমজনতা আপনাদের ভয় পায়,
আপনাদের অদৃশ্য থাকার এক অদ্ভুত ক্ষমতা আছে,
তাই আমি আপনাদের সুপারিশ জোগাড় করতে পারি নি,
দয়া করে কেউ একজন আমাকে একটা সন্মানের চাকরি ব্যবস্থা করে দিন,
আমার অভিমান আর বাড়তে দিবেন না।
আমি মনোলীনাকে ভালোবাসি,
তাই আমি কখনো রাগ করতে শিখিনি,
মনোলীনা শুধু আমাকে অভিমান শিখিয়েছে।
অভিমান মানুষকে বিরহী করে,
অভিমান মানুষকে কাঁদতে শেখায়,
অভিমান মানুষকে পরিশুদ্ধ করে,
অভিমানী মানুষ এক সময় বিপ্লবী হয়ে যায়।
মাননীয়গণ,
বিপ্লবী মানুষ সমাজহীন হয়ে যায়,
সমাজহীন মানুষের কাছে কেউ মাননীয় থাকে না।
সকল মাননীয়গণ,
আপনারা সময় থাকতে আমার অভিমান কমিয়ে দিন,
আমার ভয়,
অভিমান আমাকে একদিন চরম বিপ্লবী বানিয়ে দেবে।
————————-
কাব্যগ্রন্থ- ভালো থেকো মনোলীনা
৩১/০৩/২০১৭
Ad