...
Friday, November 15, 2024

সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ

চাকুরির খবর

সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ

স্পিনার নাসুম আহমেদ ও পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের বোলিং নৈপুন্যে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় নিশ্চিত করলো স্বাগতিক বাংলাদেশ। আজ সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে বাংলাদেশ ৬ উইকেটে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। সিরিজ নিশ্চিতের পাশাপাশি ৩-১ ব্যবধানে এগিয়েও থাকলো টাইগাররা।  
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ১৯ দশমিক ৩ ওভারে ৯৩ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন উইল ইয়ং। জবাবে ৫ বল বাকী রেখে ৯৬ রান তুলে জয়ের স্বাদ নেয় বাংলাদেশ।  
আগের তিন ম্যাচেই বাংলাদেশের পক্ষে বোলিং শুরু করেছিলেন অফ-স্পিনার মাহেদি হাসান। আজ বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের হতে বল তুলে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। 

প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে নিউজিল্যান্ডের ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রকে বিদায় দেন নাসুম। দলীয় রানের খাতা খোলার আগেই  খালি হাতে ফিরতে হয় রবীন্দ্রকে। মেডেন উইকেটে ওভারটি শেষ করেন নাসুম। 

পাওয়ার-প্লের সুবিধা নিতে মারমুখী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আরেক ওপেনার  ফিন অ্যালেন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে সাকিব আল হাসানকে রিভার্স সুইপে পয়েন্ট দিয়ে ছক্কা মারেন অ্যালেন। পরের ওভারে নাসুমকে রিভার্স-সুইপে মারতে গিয়ে পয়েন্টে সাইফুদ্দিনের তালুবন্দি হন অ্যালেন। আউট হওয়ার  আগে ৮ বলে ১২ রান করেন তিনি। 
১৬ রানে ২ উইকেট পতনে চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। সেই চাপকে দূর করতে উইকেটে টিকে থাকার দিকে মনোযোগি হন লাথাম ও উইল ইয়ং। রানের জন্য তাড়াহুড়া না করে ধীরলয়ে এগোতে থাকেন তারা। এতে ১১তম ওভারের প্রথম বলে দলীয়  ৫০ রানে পৌঁছায় নিউজিল্যান্ড। 

একই ওভারে লাথাম-ইয়ং জুটি ভেঙ্গে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন মাহেদি। স্টাম্পড আউট হবার আগে ২৬ বলে ২১ রান করেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক লাথাম। 
মাহেদির ব্রেক-থ্রুতে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় নাসুমের। তারই ধারাবাহিকতায় ১২তম ওভারে পরপর দুই বলে নিউজিল্যান্ডের দুই উইকেট তুলে নেন নাসুম। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান হেনরি নিকোলসকে ১ রানে বোল্ড এবং কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে কোন রানই করতে দেননি নাসুম। এ ওভারেও  কোন রান  না দিয়ে দুই  উইকেট  নেন  নাসুম। 

৭ বল ও ১ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে আবারো চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। সেই চাপ থেকে দলকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন সেট ব্যাটসম্যান ইয়ং ও টম ব্লান্ডেল। ২৩ বলে ২০ রান যোগ করার পর বিচ্ছিন্ন হন তারা। জুটিতে ৪ রান করা ব্লান্ডেলকে প্রথম শিকারে পরিনত করেন  কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ।
১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ব্লান্ডেলের পর পর ষষ্ঠ বলে  রানের খাতা খেলার আগেই কোল ম্যাককঞ্চিকে আউট করেন মুস্তাফিজ।  এমন অবস্থায় ১৬ ওভার শেষে ৭৪ রানে সপ্তম উইকেটে পতন ঘটে নিউজিল্যান্ডের। 
এ অবস্থায় দলকে সম্মানজনক স্কোর এনে দেয়ার চেষ্টা করেন ইয়ং। কিন্তু ইনিংসের শেষদিকে পাঁচ বলের ব্যবধানে নিউজিল্যান্ডের শেষ ৩ উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজ ও সাইফুদ্দিন। ফলে ৩ বল বাকী থাকতে মাত্র ৯৩ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। ৪৮ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন ইয়ং।
বাংলাদেশের সফল বোলার ছিলেন নাসুম ও মুস্তাফিজ।  ম্যাচ সেরা  নির্বাচিতম হওয়া নাসুম নির্ধারিত ৪ ওভারে ১০ রানে এবং মুস্তাফিজ ১২ রানে ৪ উইকেট নেন।
সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে ৯৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে তৃতীয় ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ৮ রানে আউট হন ওপেনার লিটন দাস। ১টি চারে ৬ রান করেন তিনি। এরপর সাকিবকে নিয়ে আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাইম রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন। দ্রুত রান করছিলেন তারা। কিন্তু তাদের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান নিউজিল্যান্ডের স্পিনার আজাজ প্যাটেল।  
ষষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে সাকিবকে আউট করেন প্যাটেল। লাথামের হাতে স্টাম্পড হবার আগে ১টি চারে ৮ বলে ৮ রান করেন সাকিব। সাকিবের আউটে উইকেটে গিয়ে ৩ বল খেলে  রানের খাতা খোলার  আগেই প্যাটেলের ঘুর্ণিতে বোল্ড হন মুশফিক। এতে ৬ ওভার শেষে ৩২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে  কিছুট্ াখেই হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। 
এরপর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহকে নিয়ে দলের জয়ের পথ তৈরি করেন নাইম। দেখেশুনে খেলে স্কোরবোর্ডে রান জমা করেন দু’জনে। ১৪ ওভার শেষে বআংলাদেশের দলীয়  সংগ্রহ দাঁড়ায়  ৬৫ রান।
তবে ১৫তম ওভারে রান আউটের ফাঁদে পড়ে উইকেটে সেট ব্যাটসম্যান নাইম। ১টি করে চার-ছক্কায় ৩৫ বলে ২৯ রান করেন নাইম। চতুর্থ উইকেটে মাহমুদুল্লাহর সাথে ৫০ বলে দলের সর্বোচ্চ  ৩৪ রানের জুটি গড়েন নাইম। 
নাইমের বিদায়ের পর আফিফকে নিয়ে লক্ষ্যের দিকে ছুটতে থাকেন  মাহমুদুল্লাহ। ধীর গতিতে এগুতে থাকায়  জয়ের হজন্য শেষ ৩ ওভারে ১৯ রান প্রয়োজন পড়ে বাংলাদেশের। ১৮তম ওভারে ৮ রান পায় বাংলাদেশ। এতে শেষ ১২ বলে ১১ রানের দরকার পড়ে। 

১৯তম ওভারের প্রথম বলে লং-অন দিয়ে ছক্কা হাঁকান মাহমুদুল্লাহ। বাকী বলগুলো থেকে আরও ৩ রান পায় টাইগাররা। ফলে শেষ ওভারে জিততে ২ রান দরকার পড়ে বাংলাদেশের। শেষ ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন মাহমুদুল্লাহ। 
৪৮ বলে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন মাহমুদুল্লাহ। ৬ রানে অপরাজিত থাকেন আফিফ। 
আগামী ১০ সেপ্টেম্বর সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। 

টস : নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ড ইনিংস :
রাচিন রবীন্দ্র ক সাইফুদ্দিন ব নাসুম ০
ফিন অ্যালেন ক সাইফুদ্দিন ব নাসুম ১২
টম লাথাম স্টাম্পড নুরুল ব মাহেদি ২১
উইল ইয়ং ক মাহমুদুল্লাহ ব মুস্তাফিজ ৪৬
হেনরি নিকোলস বোল্ড ব নাসুম ১
কলিন ডি গ্রান্ডহোম ক নুরুল ব নাসুম ০
টম ব্লান্ডেল ক নাইম ব মুস্তাফিজ ৪
ম্যাককঞ্চি ক এন্ড ব মুস্তাফিজ ০
আজাজ প্যাটেল বোল্ড ব সাইফুদ্দিন ৪ 
ব্লেয়ার টিকনার ক মাহেদি ব মুস্তাফিজ ২
হামিশ বেনেট অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (লে বা-২, ও-১) ৩
মোট (১৯.৩ ওভার, অলআউট) ৯৩
উইকেট পতন : ১/০ (রবীন্দ্র), ২/১৬ (অ্যালেন), ৩/৫১ (লাথাম), ৪/৫২ (নিকোলস), ৫/৫২ (গ্র্যান্ডহোম), ৬/৭২ (ব্লানডেল), ৭/৭৪ (ম্যাককঞ্চি), ৮/৯১ (প্যাটেল), ৯/৯৩ (ইয়ং), ১০/৯৩ (টিকনার)।
বাংলাদেশ বোলিং :
নাসুম : ৪-২-১০-৪,
সাকিব : ৪-০-২৫-০,
মাহেদি : ৪-০-২১-১,
মুস্তাফিজ : ৩.৩-০-১২-৪ (ও-১),
সাইফুদ্দিন : ৩-০-১৬-১,
মাহমুদুল্লাহ : ১-০-৭-০।
বাংলাদেশ ইনিংস :
মোহাম্মদ নাইম রান আউট ২৯
লিটন দাস ক অ্যালেন ব ম্যাককঞ্চি ৬
সাকিব আল হাসান স্টাম্প লাথাম ব প্যাটেল ৮
মুশফিকুর রহিম বোল্ড ব প্যাটেল ০
মাহমুদুল্লাহ অপরাজিত ৪৩
আফিফ হোসেন অপরাজিত ৬
অতিরিক্ত (লে বা-২, ও-৩) ৪
মোট (১৯.১ ওভার, ৪ উইকেট) ৯৬
উইকেট পতন : ১/৮ (লিটন), ২/৩২ (সাকিব), ৩/৩২ (মুশফিক), ৪/৬৭ (নাইম)।     
নিউজিল্যান্ড বোলিং :
বেনেট : ৩-০-১৭-০ (ও-১),
প্যাটেল : ৪-০-৯-২ (ও-১),
ম্যাককঞ্চি : ৩.১-০-৩৪-১,
রবীন্দ্র : ৪-০-৮-০,
গ্র্যান্ডহোম : ৩-০-১৩-০ (ও-২),
টিকনার : ২-০-১৩-০।
ফল : বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী। 
ম্যাচ সেরা : নাসুম  আহমেদ(বাংলাদেশ)।
সিরিজ : পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ।

বাসস

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.