28 C
Dhaka
Friday, November 22, 2024

ছাত্রদলের অঘোষিত নেতা আসিফ নজরুল!

বিডিনিউজ ডেস্ক | ঢাকা | ২২শে আগস্ট, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, ৭ই ভাদ্র, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ , শরৎকাল, ১৪ই মহর্‌রম, ১৪৪৩ হিজরি

চাকুরির খবর

লাম্পট্যের অভিযোগ তার দীর্ঘদিনের। ছাত্র হিসেবেও মেধাবী ছিলেন না। তারপরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিতে পেরেছিলেন আসিফ নজরুল কিভাবে সে এক রহস্যময় প্রশ্ন।

আসিফ নজরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি অনার্সে দ্বিতীয় শ্রেণী পেয়েছিলেন অর্থাৎ সাদামাটা একজন ছাত্র। কিন্তু এলএলএম (মাস্টার্স) এ যেয়ে সবাইকে চমকে দিয়ে তিনি প্রথম শ্রেণী পান। কিভাবে প্রথম শ্রেণী পেলেন সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে সেই সময়কার সাপ্তাহিক বিচিত্রা দেখতে হবে।

সাপ্তাহিক বিচিত্রায় আসিফ নজরুল স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত ঘরানার শিক্ষক এরশাদুল বারী`র সাক্ষাৎকার নেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এরশাদুল বারী`র সাক্ষাৎকার দেওয়ার পক্ষে লবিং করেন। সে সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আসেন এরশাদুল বারী। তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসাকে অনেকেই গ্রহণ করেনি।

তার বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে এরশাদুল বারী বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলন দমানোর জন্য আসিফ নজরুল ব্যবহার করেন সাপ্তাহিক বিচিত্রাকে এবং আরো কয়েকটি গণমাধ্যমে।

ফলে সহজেই এরশাদুল বারী`র কাছের লোক হয়ে যান আসিফ নজরুল। তাছাড়া দুজন একই ঘরানার চিন্তা-চেতনার হওয়ার কারণে তাদের সখ্যতা হতে সময় লাগে নি। এরশাদুল বারী প্রায় জোর করেই আসিফ নজরুলকে প্রথম শ্রেণী পাওয়ান। কিন্তু প্রথম শ্রেণী পেলেও তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া যায় না। কারণ আসিফ নজরুলের একটি দ্বিতীয় শ্রেণী আছে।

আসিফ নজরুলের ব্যাচেরই মেধাবী ছাত্র ছিলেন শামসুদ্দিন আহমেদ। শামসুদ্দিন আহমেদ মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকে মেধাতালিকায় স্থান অর্জন করেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে আসিফ নজরুলের ব্যাচে তিনি অনার্সে প্রথম শ্রেণীতে দ্বিতীয় হয়েছিলেন এবং মাস্টার্সেও প্রথম শ্রেণীতে দ্বিতীয় হয়েছিলেন।

যিনি প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়েছিলেন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করবেন না, বিদেশে যাবেন উচ্চশিক্ষার জন্য। কাজেই শামসুদ্দিন আহমেদের চাকরিতে ঢোকাটা ছিল অবধারিত প্রায়।

কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন আইন বিভাগের প্রভাষক নিয়োগ দেয়া হয় তখনই এরশাদুল বারী শামসুদ্দিন আহমেদকে ডেকে বলেন যে, তাকে তিনি নেবেন না। তার কমিটমেন্ট আছে আসিফ নজরুলকে তিনি নেবেন। এরপরে তিনি প্রচ্ছন্ন হুমকি দেন। 

কিন্তু তারপরেও শামসুদ্দিন আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার জন্য আবেদন জমা দেন। কিন্তু সেই সময় তার বন্ধু আসিফ নজরুল তাকে বলেন তিনি যদি সাক্ষাৎকার দিতে আসেন তাহলে তার লাশ চলে যাবে। তাকে গুলি করে হত্যা করা হবে। সেই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নিয়ন্ত্রিত। আর ছাত্রদলের অঘোষিত নেতা আসিফ নজরুল।

কারণ গোলাম ফারুক অভি তার বন্ধু। ফলে শামসুদ্দিন আহমেদের মতো নিরীহ মেধাবী ছাত্র ভয় পেয়ে যান। তিনি আর প্রভাষক নিয়োগের যে ভাইভা সেই ভাইভায় উপস্থিত হননি। ফলে আসিফ নজরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে যান। শামসুদ্দিন আহমেদ এখন সরকারি চাকরি করেন। এনবিআরের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এই মেধাবী কর্মকর্তা।

যখন তার সাথে যোগাযোগ করা হয় তখন তিনি একটু নস্টালজিক হয়ে ওঠেন। তিনি বলেন, এতো দিনের পুরনো ঘটনা আবার নতুন করে তোলার দরকার নেই।

তিনি এরশাদুল বারী`র প্রসঙ্গে কথা বললেও আসিফ নজরুলের ব্যাপারে কথা বলতে এখনো ভয় পান। একজন শিক্ষক যখন অস্ত্রের জোরে জোর শিক্ষক হন, তিনি যখন আবার নৈতিকতার শেখান এবং ফেসবুকে নসিহত করেন তখন তার চেয়ে বড় প্রতারণা আর কি বা হতে পারে?

বাংলা ইনসাইডার

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর