ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র টোব্যাকো কন্ট্রোল রিসার্চ সেন্টার (টিসিআরসি) ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও বিএনটিটিপি কর্তৃক আয়োজিত ‘তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্য উৎপাদনে করণীয়’ শীর্ষক ভার্চুয়াল ওয়েবিনার (মতবিনিময় সভা) অনুষ্ঠিত হয়।
কৃষিমন্ত্রী জনাব ড. আঃরাজ্জাকের উপস্থিতিতে সোমবার (১২ জুলাই) বিকেল ৩-টায় অনলাইনের জুম প্ল্যাটফর্মে এ সমাজ সচেতনতামূলক ওয়েবিনারটি (মতবিনময় সভা) অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন টিসিআরসি’র প্রেসিডেন্ট ও মাননীয় সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার জনাব শামীম হায়দার পাটোয়ারী।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিজ্ঞানী ও মাননীয় কৃষিমন্ত্রী জনাব’ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক’।
বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী ও অতিরিক্ত সচিব ‘জনাব হোসেন আলী খোন্দকার’, পিকেএসএফ এর সভাপতি অর্থনীতিবিদ জনাব ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, কৃষি উন্নয়ন সাংবাদিক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও চ্যানেল আই-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক জনাব শাইখ সিরাজ এবং অত্র ইউনিভার্সিটির সম্মানিত ভারপ্রাপ্ত-উপচার্য অধ্যাপক ড. গনেশ চন্দ্র সাহা।
বিশেষ আলোচক হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন আন্তর্জাতিক সংস্থা ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস এর হেড অব প্রোগ্রামস জনাব মো. শফিকুল ইসলাম, সিটিএফকের লিড পলিসি এ্যাডভাইজার জনাব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সমন্বয়কারী জনাব সাইফুদ্দিন আহমেদ, উবিনীগের নির্বাহী পরিচালক জনাব ফরিদা আখতার ও দ্যা ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক এ্যাডভোকেট জনাব সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন।
উল্যেখ্য, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) সমগ্র বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে তামাক নিয়ন্ত্রণে
একটি বিশেষ সেল রয়েছে যা ট্রাষ্টি বোর্ডের সভাপতি কতৃক পরিচালিত হয়।
এ মতবিনিময় সভায় বিশেষ গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও কৃষি উন্নয়ন সাংবাদিক শাইখ সিরাজ তামাক চাষ করে হতাশাগ্রস্ত-ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের উপর নির্মিত বিভিন্ন ভিডিও চিত্র দেখিয়ে মূল আলোচনা শুরু করেন।
তামাকের বিষাক্ত ছোঁবলে জর্জরিত বিভিন্ন কৃষকের দুঃখ-কষ্ট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘তামাক চাষে হারছে কৃষক লাভবান হচ্ছে লোভী ব্যাবসায়ী কোম্পানি!
‘তামাকের বিষাক্ত ছোঁবলে নীল হয়ে যাওয়া প্রান্তিক কৃষকের গল্প বলতে গিয়ে তামাক চাষের ফলে পাহাড়ি জনভূমি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবার কথাও তুলে ধরেন।
এই তামাক চাষের ফলে যে দেশের কৃষি দেহ ভয়ংকরভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তাও যোগ করেন।’
মতবিনিময় সভার এক পর্যায়ে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘আমরা সকলেই জানি যে, যেসব দেশে দীর্ঘদিন তামাক চাষ হয় সেইসব দেশের চাষযোগ্য জমি একটা নির্দিষ্ট সময় পর ঊর্বরতা হারায় ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
‘গ্রীন টোব্যাকো সিকনেস’ নামক ভয়ানক অসুখের ব্যাপারেও সবাইকে সাবধান করে দেন তিনি। যে রোগটি’র উৎসই হলো তামাক চাষাবাদ।তিনি মতবিনিময় সভায় উপস্থিত মাননীয় কৃষিমন্ত্রীকে ২০৩০-৩৫ সালের ভেতরেই তামাক চাষ বন্ধের উদ্যোগ নেবার ব্যাপারে শক্তিশালী পদক্ষেপ ও তামাক চাষ বন্ধে হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করেন।’
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি কৃষিবিজ্ঞানী ও কৃষিমন্ত্রী আঃ রাজ্জাক তাঁর বক্তব্যে কৃষিক্ষেত্রে উল্ল্যেখযোগ্য অবদান রাখা বিশ্বের অনেক কৃষিবিদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তামাক চাষে দেশ ও কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে গভীরভাবে আলোচনা করেন।
কৃষিমন্ত্রী আমাদের দেশের কৃষিজ জমির ঊর্বরতার বিষয়টি উল্ল্যেখ করে বলেন, ‘আমাদের দেশে তামাকের পরিবর্তে গুলমরিচ, ক্র্যাশিওনাট, কফি চাষের বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে।
আমাদের তামাকের পরিবর্তে বিভিন্ন কৃষিজ ফসল ফলাবার ও বাজারজাতকরণের সুযোগ করে দিতে পারলে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই চাষী ভাইদের তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করে অন্যান্য সমাজ সহায়ক ফসল ফলাবার ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলতে সক্ষম হবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে যে প্রযুক্তি রয়েছে, যে মানব সম্পদ রয়েছে তার সঠিক ব্যবহার করলে ও সুনির্দিষ্ট কর্মসুচী হাতে নিলে দিনে দিনে দ্রুত গতিতেই এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র বেঁধে দেওয়া সময় ২০৪০-সালের আগেই আমরা তামাক চাষ পরিপূর্ণ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে কৃষক সমাজকে পরিবেশবান্ধব ফসল-ফলাদী ও বৈদেশিক মূদ্রা অর্জিত হয় এমন ফসল চাষাবাদে উৎসাহী ও আগ্রহী করে তুলতে পারবো।