লকডাউনে আটকে পড়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে প্রায় সাড়ে ৭ শ’ আবেদন জমা পড়েছে।
সোমবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. আহসানুল আম্বিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে তালিকা যাচাই শেষে আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লকডাউনের কারণে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রায় সাড়ে ৭শ’ শিক্ষার্থী আটকে পড়েছে। কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ এই দুই জেলায় করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুর হার বেড়েই চলেছে।
এমতাবস্থায় মেসে প্রতিনিয়তই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থী বান্ধব সিদ্ধান্ত নেবে। বাড়ি যাওয়ার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে তাদের বিভাগীয় শহরে পৌঁছে দেবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া এলাকায় অবস্থানরত লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিম মোর্শেদ হিমু বলেন, ‘কোরবানির ঈদের পর হল বন্ধ রেখে পরীক্ষার সিদ্ধান্তের পর রংপুর থেকে চলে আসি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের শিক্ষার্থীর তুলনায় মেস অনেক কম। ঈদের পরে এলে থাকার জায়গা পাওয়াটা মুশকিল হয়ে যাবে। তাছাড়া বাড়ি থেকেও তেমন লেখাপড়া হয় না। কিন্তু হঠাৎ করে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় লকডাউনের ঘোষণা চলে আসে। দিনে দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি।’
দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আল মামুন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে করোনার উপসর্গ। প্রতিটা মূহুর্ত আতঙ্কে কাটাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় চেয়ে আছি। আমরা প্রশাসনের কাছে জোড় দাবি জানাচ্ছি, প্রশাসন যেন নিজস্ব পরিবহনে আমাদের বিভাগীয় শহরে পৌঁছে দেয়।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আইসিটি সেল তালিকা হস্তান্তর করেছে। এতে ৭৪৪টি আবেদন জমা পড়েছে। এখনো কর্তৃপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। দুয়েক দিনের মধ্যে ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার স্যার বসবে। লকডাউনের অবস্থা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত আসবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত সবকিছু পজেটিভলি দেখছি। ফর্ম ভেরিভিকেশন করছি। তালিকা প্রস্তুত করতে আরো দুয়েকদিন সময় লাগবে।
কতগুলো গাড়ি লাগবে, গাড়িগুলো ঠিক আছে কিনা এবং ড্রাইভারগুলো সুস্থ আছে কিনা এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি। আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস গেলে সর্বোচ্চ নিকটবর্তী বিভাগীয় শহরগুলোতে পাঠানো হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ৭ জুলাই আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে বিভাগীয় শহরে পৌঁছানোর দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র মৈত্রী।
এর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের তালিকার ভিত্তিতে পরিকল্পনা করার নির্দেশনা দেন। পরে শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করতে সোমবার (১২ জুলাই) পর্যন্ত গুগল ফর্ম পূরণের নির্দেশনা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।