‘আমাদের সাতটি ছেলে ও তিনটি মেয়ে শিশু জন্ম নিয়েছে। আমি খুবই আবেগাপ্লুত। আমি এই মুহূর্তে আর বেশি কথা বলতে পারছি না!’
একসঙ্গে ১০টি শিশুর জন্ম দিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এক নারী।
গোসিয়ামে থামারা সিথোল নামের ওই নারীর স্বামী টেবোহো সোটেটসি জানান, দশটি শিশু জন্ম নেওয়ার বিষয়টি দেখে তারা ভীষণ অবাক হয়েছেন। কারণ, স্ক্যানের সময় তার স্ত্রীর পেটে ৮টি শিশুর অস্তিত্ব দেখা গিয়েছিল।
প্রিটোরিয়া নিউজকে টেবোহো বলেন, ‘আমাদের সাতটি ছেলে ও তিনটি মেয়ে শিশু জন্ম নিয়েছে। আমি খুবই আবেগাপ্লুত। আমি এই মুহূর্তে আর বেশি কথা বলতে পারছি না!’
দক্ষিণ আফ্রিকান এক কর্মকর্তা বিবিসিকে শিশুদের জন্মের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে আরেক কর্মকর্তা জানান, তারা শিশুদের এখনো দেখেননি।
ওই পরিবারের নাম-পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য বলেন, মিসেস সিথোল ১০টি শিশুর জন্ম দিয়েছেন; এদের মধ্যে ৫ জন প্রাকৃতিক উপায়ে জন্ম নিয়েছে এবং ৫ জনের জন্ম হয়েছে সিজারিয়ানের মাধ্যমে।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড এই ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছে।
এর আগে ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের এক নারী একসঙ্গে আট শিশুর জন্ম দিয়ে গিনেস বুকে নাম লেখান। এখনো পর্যন্ত তিনিই আনুষ্ঠানিকভাবে একবারে সর্বাধিক সন্তানের জন্মদাত্রী।
এদিকে, গত মাসে মালিতে হালিমা সিসে নামক ২৫ বছর বয়সী এক নারী একসাথে নয়টি সন্তানের জন্ম দেন। সবকটি শিশুই এখন মরক্কোর একটি ক্লিনিকে সুস্থ অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে বিবিসির আফ্রিকা অঞ্চলের স্বাস্থ্য প্রতিবেদক রডা ওডিয়াম্বো বলেন, একসঙ্গে অনেক সন্তান জন্ম দিলে অধিকাংশ শিশুই অকালে মারা যায়।
একসঙ্গে তিনটির অধিক শিশুর জন্ম হওয়া বেশ বিরল ঘটনা। অধিকাংশ সময় উর্বরতা চিকিৎসার ফলস্বরূপ এটি ঘটে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকান এই নারী প্রাকৃতিকভাবেই গর্ভবতী হয়েছেন বলে দাবি ওই দম্পতির।
প্রার্থনা ও নির্ঘুম রাত
৩৭ বছর বয়সী মিসেস সিথোল এর আগেও যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
এক মাস আগে প্রিটোরিয়া নিউজকে মিসেস সিথোল জানান, তার গর্ভবতী হওয়াটা শুরুর দিকে কিছুটা জটিল অবস্থায় ছিল। তিনি শিশুদের স্বাভাবিক-সুস্থ জন্মের জন্য অনেক প্রার্থনা করেছেন এবং দুশ্চিন্তায় বহু রাত নির্ঘুম কাটিয়েছেন।
নিজেই নিজেকে বারবার প্রশ্ন করতেন, ‘আমার পেটে এতগুলো শিশুর কীভাবে জায়গা হবে? ওরা কি বাঁচবে?’ অবশ্য ডাক্তাররা তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন, তার গর্ভও দিন দিন স্ফীত হচ্ছে।
মিসেস সিথোল জানতে পারলেন তার গর্ভে যখন ৮টি সন্তান রয়েছে, সে সময় তিনি পায়ের ব্যথায় ভুগছিলেন। ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন, আটটির মধ্যে দুটি শিশু ভুল টিউবের মধ্যে রয়েছে।
সে সময় সিথোল সংবাদপত্রকে বলেন, ‘এরপর তারা সেই সমস্যা সমাধান করেন এবং আমিও সুস্থ হয়ে যাই। আমি অধীর আগ্রহে আমার সন্তানদের আগমনের জন্য অপেক্ষা করছি।’
তার স্বামী মনে করেন, ‘এটা আসলে ‘ঈশ্বর কর্তৃক নির্ধারিত সন্তান’ পাওয়ার মতো ছিল। ‘এ এমন এক অলৌকিক ঘটনা, যা আমার সঙ্গে ঘটেছে বলে আমি আনন্দিত,’ বলেন তিনি।
বিবিসি