মুনিয়া মৃত্যু তদন্তে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হচ্ছে। তদন্তে দেখা গেছে যে, মুনিয়ার সঙ্গে অত্যন্ত গভীর এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল চট্টগ্রামের হুইপপুত্র শারুনের।
শারুনই মুনিয়াকে চালাত এবং শারুনের স্ত্রী চলে যাওয়া পর মুনিয়াই ছিল শারুনের প্রধান প্রেমিকা এবং মুনিয়াকে শারুন বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছিল। সেই প্রস্তান মুনিয়ার গ্রহণ করেছিল।
কিন্তু পরবর্তীতে শারুন এই বিয়ে নিয়ে টালবাহানা করে এবং নানা রকম ফন্দি ফিকির করে। সেখান থেকেই মুনিয়ার হতাশার জীবন শুরু হয়েছে বলে নতুন প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র মুনিয়ার মৃত্যু নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। মুনিয়াকে কুমিল্লা থেকে ঢাকা নিয়ে এসেছিল যুবলীগের সাবেক নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট।
কিন্তু সম্রাট গ্রেফতার হওয়ার পর মুনিয়ার অবস্থার অবনতি ঘটে এবং তিনি আবার কুমিল্লায় চলে যান। কিন্তু কুমিল্লায় থাকা অবস্থায় তার সঙ্গে শারুনের যোগাযোগ হয় এবং শারুন মুনিয়ার আশ্রয়স্থান হয়ে ওঠেন। এ সময় শারুনের সঙ্গে মুনিয়ার যোগাযোগের একাধিক তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তাতে দেখা যাচ্ছে যে, শারুন এবং মুনিয়া দুজনেই তখন হতাশ ছিলেন। মুনিয়ার নির্ভরতা, সম্রাট গ্রেফতার অন্যদিকে শারুনের স্ত্রী চলে গেছে এই কারণে তারা একে অন্যের সঙ্গে খুব দ্রুত ঘনিষ্ঠ হন।
দু`জনের মধ্যে যে মেসেঞ্জারে কথা বিনিময়, সেখান থেকেই সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে, মুনিয়ার ওপর আকৃষ্ট হয়েছিলেন এবং তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন শারুন।
কিন্তু পরবর্তীতে কি কারণে মুনিয়াকে শারুন বিয়ে করেননি সেটি নিয়ে এক নতুন রহস্য তৈরি হয়েছে। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, শারুন এরকমই। তিনি বিভিন্ন সময়ে প্রতিশ্রুতি দেন, আশ্বাস দেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাউকেই বিয়ে করেন না। বরং বিয়ের নামে মেয়েদেরকে প্রলোভন দেখানো এবং প্রচারনাই তার প্রধান কাজ।
আর এই সমস্ত কারণেই আস্তে আস্তে হতাশ হয়ে পড়েন মুনিয়া এবং এই হতাশা থেকেই তিনি নানা মানুষের সাথে মিশতে শুরু করেন। এক উশৃঙ্খল জীবনযাপন শুরু করেন এবং এই জীবনযাপন করতে গিয়ে বিপত্তি হয়।
প্রশ্ন উঠেছে যে, শারুন বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করায় হতাশ হয়ে মুনিয়া আত্মহত্যা করেছে? নাকি এই বিয়ে করার তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার কারণে মুনিয়াকে শারুন হত্যা করেছেন? এটিই এখন তদন্তের মূল বিবেচ্য বিষয় বলে জানা গেছে।
কারণ এই বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর মুনিয়া কয়েক দফা শারুন তাকে বিয়ে করছে কি করছে না এ নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শারুন এ ব্যাপারে কোন ইতিবাচক পদক্ষেপ নেন নি। এটির ফলের দুটি ঘটনা ঘটতে পারে।
এর ফলে হতাশ হয়ে মুনিয়া আত্মহত্যা করতে পারেন। আবার মুনিয়া যখন বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন তখন এই চাপ সামাল দেওয়ার জন্য মুনিয়াতে হত্যাও করা হতে পারে। যেটির দাবি করছেন মুনিয়ার ভাই সবুজ। কোনটি আসল ঘটনা সেটি তদন্তেই বেরিয়ে আসবে।
বাংলা ইনসাইডার