27 C
Dhaka
Sunday, November 24, 2024

টাকার পাহাড়ে বাবুনগরী

বিডিনিউজ ডেস্ক

চাকুরির খবর

হেফাজতের আমীর জুনায়েদ বাবুনগরীর শতকোটি টাকার সম্পদের হিসাব পাওয়া গেছে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, তিনি রীতিমতো টাকার পাহাড়ে বসে আছেন।

একজন মাদ্রাসার শিক্ষক হয়ে কিভাবে তিনি এত বিত্তবান হলেন সেই প্রশ্ন উঠেছে। গতকাল জুনায়েদ বাবুনগরীসহ ৪৬ জন হেফাজতের নেতাকর্মীর সম্পদের তথ্য চেয়ে সরকারি চারটি দপ্তরকে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

দুদকের পরিচালক মোঃ আক্তার হোসেন এই চিঠি পাঠান। যে সমস্ত সরকারি দপ্তরে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ), ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নেত্রকোনা পুলিশ সুপার, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও পটিয়া থানার সহকারী কমিশনার ভূমি এবং ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয় সহকারী ভূমি ও ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রারকে পাঠানো চিঠিতে হেফাজতের নেতাদের পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জমির দাগ, খতিয়ান, নথি চাওয়া হয়েছে।

আর বিএফআইইউ এর প্রধানকে পাঠানো চিঠিতে এই সমস্ত নেতাদের ব্যাংক হিসেবেটাও পাওয়া গেছে।

বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, জুনায়েদ বাবুনগরীর এ পর্যন্ত ১২ টি ব্যাংক একাউন্ট পাওয়া গেছে এবং এই সমস্ত ব্যাংক একাউন্টে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৪ কোটি টাকার হিসেব পাওয়া গেছে। তবে জুনায়েদ বাবুনগরীর ঘনিষ্ঠরা এই তথ্য কে অস্বীকার করেছেন।

তারা বলছেন যে, যে টাকা আছে সেটি হল দান-খয়রাতের টাকা। কিন্তু দান-খয়রাতের টাকা কেন তিনি নিজস্ব ব্যাংক একাউন্টে রাখবেন এটি একটি বড় প্রশ্ন বটে।

হেফাজতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, বিভিন্ন ধনাঢ্য ব্যক্তিরা মাদ্রাসা চালানোর জন্য জুনায়েদ বাবুনগরীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে আর্থিক সহায়তা দেন। এই আর্থিক সহায়তাগুলো তারা রাখেন এবং মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য সময় সময় ব্যয় করেন।

কিন্তু যে টাকা তারা পান, তার হিসেবে সেই টাকা তারা ব্যয় করেন কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাছাড়া দানের টাকা নিজস্ব একাউন্টে রাখা যায় কিনা সেটিও একটি বড় প্রশ্ন বটে।

জুনায়েদ বাবুনগরী ছাড়াও হেফাজতের আরও নেতাদের কোটি কোটি টাকার হিসেব পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয়, জুনায়েদ বাবুনগরীর নিজের নামে গাজীপুরে জমি রয়েছে, নারায়ণগঞ্জে একটি কারখানার জমি রয়েছে, নেত্রকোনায় তার স্ত্রীর নামে জমি রয়েছে বলে জানা গেছে।

এছাড়াও জুনায়েদ বাবুনগরীর নামে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে একটি জমিসহ দালান রয়েছে বলে জানা গেছে। হাটহাজারীতে তার একাধিক বাড়ির তথ্য পাওয়া গেছে। পটিয়াতে তার বিশাল জমি রয়েছে বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা বলছে যে, প্রাথমিকভাবে যে সমস্ত তথ্যগুলো পাওয়া গেছে এগুলো যাচাই-বাছাই করার জন্যই সরকারি দপ্তরগুলোকে চিঠি দেয়া হয়েছে। 

উল্লেখ্য যে, শুধু দেশে নয় বিদেশ থেকেও জুনায়েদ বাবুনগরী টাকা নিয়ে আসতেন। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে এসে সেই সমস্ত অর্থ আত্মসাৎ করতেন জুনায়েদ বাবুনগরী।

হেফাজত গঠিত হওয়ার পর মাদ্রাসাগুলোতে টাকা দেওয়ার একটি প্রথা তৈরি হয়। হেফাজতের মাধ্যমেই যেন মাদ্রাসাগুলো পরিচালিত হয় এরকম একটি অঘোষিত নীতি হয়। ফলে হেফাজতের নেতাদের ফুলে-ফেঁপে ওঠার সুযোগ তৈরি হয়।

তারা বিভিন্ন মহলে চাপ দিয়ে এবং প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল বিত্তের মালিক হয়েছেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, জুনায়েদ বাবুনগরীর প্রায় আড়াইশো কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে।

তবে তদন্তকারীরা বলছেন যে, এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান এবং যাচাই-বাছাই শেষে বোঝা যাবে যে আসলে তার কত সম্পদ রয়েছে।

বাংলা ইনসাইডার

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর