27 C
Dhaka
Friday, November 22, 2024

সরকারের নীতিনির্ধারক কারা

বিডিনিউজ ডেস্ক

চাকুরির খবর

আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় দফায় করোনা মোকাবেলা করছে। এই করোনা মোকাবেলা করতে সমন্বয়হীনতা যেমন স্পষ্ট হচ্ছে, তেমন একের পর এক সিদ্ধান্ত বদলের কারণে সরকারের দৃঢ়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

অনেকে মনে করছেন যে, সরকার পরিচালনায় যে সমন্বিত উদ্যোগ সেই উদ্যোগে ভাটা রয়েছে। আওয়ামী লীগ টানা ১২ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে। এই ১২ বছরে আওয়ামী লীগের প্রধান নীতিনির্ধারক অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, নির্দেশে, ইচ্ছায়, অভিপ্রায়ে দেশ পরিচালিত হচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর কিছু বিশ্বস্ত এবং আস্থাভাজন ব্যক্তি থাকেন যারা তাকে সহায়তা করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় এবং আকাঙ্ক্ষাগুলো বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন রকম কাজ করেন, প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দেন। এরাই সরকারের নীতিনির্ধারক।

সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে যে, সরকারের নীতিনির্ধারক যাদেরকে মনে করা হচ্ছে তাদের মধ্যে কোন মন্ত্রী নেই। বরং মন্ত্রীরা অন্ধকারেই থাকছেন। তাঁরা বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলছেন।

সেই কথাবার্তাগুলো কতটা নীতিনির্ধারণী সেটি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সরকারের যে পরিচালন পদ্ধতি তাতে দেখা যাচ্ছে যে, সরকারের নীতিনির্ধারণে এখন তিনজন আমলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এরাই প্রধানমন্ত্রীর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ জন এবং আস্থাভাজন ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন-

১. খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম: মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম আরও দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন। অতীতে দেখা গেছে যে, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পদটি ছিল আলংকারিক।

তিনি মূলত মন্ত্রিপরিষদের সভা আহ্বান করতেন এবং মন্ত্রিপরিষদ সভাকে ঘিরে অন্যান্য কাজগুলো সমন্বয় করতেন। মাঠ প্রশাসনে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করতেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে ক্ষমতার কেন্দ্রে দেখা যাচ্ছে।

এখন যে দেশে লকডাউন চলছে সেটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে। এই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এরকম প্রজ্ঞাপন দিতে পারেন কিনা সে প্রশ্ন উঠলেও মন্ত্রিপরিষদ সচিব যে অনেক বেশি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আছে সেটা বুঝতে কোনো অসুবিধা হয় না।

অনেক মন্ত্রণালয়ে তিনি যোগাযোগ করেন, পরামর্শ দেন এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বস্ত ব্যক্তি হিসেবে তিনি ক্ষমতার কেন্দ্রে অবস্থান করছেন বলেই বিশ্লেষকরা মনে করেন।

২. ড. আহমদ কায়কাউস: প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ড. আহমদ কায়কাউস। তিনি সরকারের অন্যতম নীতিনির্ধারক, প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বস্ত এবং আস্থাভাজন ব্যক্তি হিসেবে বিভিন্ন বিষয়ে তিনি সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ ও নির্দেশনা দিচ্ছেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাজের সমন্বয়ের ক্ষেত্রেও তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্তৃত্বের দ্বন্দ্বের কথা ইদানীং শোনা যায়।

দ্বন্দ্ব থাকুক আর নাই থাকুক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব হিসেবে ড. আহমদ কায়কাউস নিঃসন্দেহে সরকারের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে অন্যতম।

৩. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া: প্রধানমন্ত্রীর সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া নবম ব্যাচের একজন কর্মকর্তা। তিনিও প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন এবং বিশ্বস্ত সরকারি কর্মকর্তাদের অন্যতম।

সাম্প্রতিক সময়ে তিনিও সরকারের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে চলে গেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া, অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন বলেই বিশ্লেষকরা মনে করেন।

বিশেষ করে প্রশাসনের বিন্যাস এবং সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে উঠেছেন।

আর এই তিনজনই এখন সরকারের মূল নীতিনির্ধারক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, সরকারের নীতিনির্ধারণী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অনুপস্থিতি সরকারকে অনেক সমন্বয়হীন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাচ্ছে।

লকডাউনে একের পর এক সমন্বয়হীনতা তার বড় প্রমাণ। বিভিন্ন মহল মনে করেন যে, সরকারের নীতিনির্ধারণী কেন্দ্রে বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দেয়ার ক্ষেত্রে রাজনীতিবিদদের ভূমিকা এবং গুরুত্ব বাড়ানো উচিত।

বাংলা ইনসাইডার

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর