22 C
Dhaka
Saturday, November 23, 2024

অনড় অবস্থানে প্রধানমন্ত্রী

চাকুরির খবর

গতরাতে হেফাজতের নেতাদের সাথে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন, সরকার কি আবার হেফাজতের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে চাইছে?

এরকম প্রশ্ন নিয়ে যখন রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা তখন একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সরকার হেফাজতের সাথে কোনো ধরনের সমঝোতায় যাবে না।

বরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেফাজতের ব্যাপারে অনড় অবস্থানে গেছেন। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদের হেফাজত সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি হলো সরকারের অবস্থান, অন্য কোনো কিছু নয়।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ প্রভাবশালী নেতা বলেছেন যে, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর একটা ভালো বৈশিষ্ট্য হলো যে, তিনি স্পষ্ট বাদী। তিনি মুখে এক মনে আরেক এরকম ব্যক্তি নন। আর যে কারণে তিনি যেটা বললেন সেটা করেন।

তার রাজনৈতিক জীবনে তিনি বারবার এটি প্রমাণ করেছেন। আর হেফাজতের ব্যাপারে তিনি সংসদে যেটি বলেছেন সেটি হলো সরকারের অবস্থান। এর বাইরে কে কি করলো, কোথায় বৈঠক করলো, কি আশ্বাস দিলো সেগুলো কোনো মুখ্য বিষয় নয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেফাজতের ব্যাপারে একাধিক কারণে কঠোর অবস্থানে গেছেন বলে সরকারের এবং আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

প্রথমত, প্রধানমন্ত্রী হেফাজতকে অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরেই কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি পেয়েছে। যেই কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারও দেয়নি, সেই স্বীকৃতি প্রধানমন্ত্রীর দিয়েছেন।

এটি দেওয়ার পেছনে প্রধানমন্ত্রীর মূল বিষয় ছিলো মাদ্রাসার গরিব, দরিদ্র বাচ্চাগুলো জীবনে কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়, একটা মর্যাদার জায়গা পায়। মূলত কোনো রাজনৈতিক অভিলাষ থেকে নয় বরং এতিম দুস্থ বাচ্চাদের প্রতি সহানুভূতি থেকেই প্রধানমন্ত্রী ওই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।

কিন্তু হেফাজত গত ডিসেম্বর মাসে নতুন নেতৃত্বে আসার পর যা করছে তাতে শুধু প্রধানমন্ত্রী নয় আওয়ামী লীগও অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। বিশেষ করে তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নামিয়ে ফেলা নিয়ে যা করেছে, সর্বশেষ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে যা করেছে সেটি সরকারকে কঠোর অবস্থানে যেতে বাধ্য করেছে বলেই সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো মনে করছে।

আর এই রকম পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষে এখান থেকে সরে আসার কোনো সুযোগ নেই বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা।

আওয়ামী লীগের একজন নেতা যিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেছেন তিনি জানিয়েছেন যে, প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান খুব সুস্পষ্ট। অপরাধী যেই হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় আসতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী এই নীতি নিয়ে চলেন। ওই নেতা এটি জানান যে, এখন যে হেফাজতের নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের কাউকে রাগ, অনুরাগ বা আক্রোশের বশবর্তী হয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।

বরং ভিডিও ফুটেজ দেখে সুনির্দিষ্ট অপরাধে অভিযুক্ত বা সুনির্দিষ্ট অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণের ভিত্তিতেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

এখান থেকে সরে আসার কোনো উপায় নেই এবং এটি প্রধানমন্ত্রী হতে দেবেন না। আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী কখনো ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নীতি গ্রহণ করেন না এবং প্রধানমন্ত্রীর এই সততা আছে জন্যই জনগণের কাছে তিনি গ্রহণযোগ্য।

কাজেই হেফাজতের সঙ্গে কেউ যদি দেখা করেন বা বৈঠক করেন, যেটিই হোক না কেন সেটি তার ব্যক্তিগত বিষয়। এর সাথে সরকারের নীতি এবং অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হবে না।

আওয়ামী লীগের অন্তত তিনজন নেতা বলেছেন, হেফাজতের ব্যাপারে অনড় অবস্থানে আছেন প্রধানমন্ত্রী এবং যারা অপরাধ করেছে তারা হেফাজত না আওয়ামী লীগ সেটি প্রধানমন্ত্রী বিবেচনা করছেন না।

বরং যাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা অপরাধের প্রাথমিক প্রমাণ পাচ্ছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনছে। এটি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এবং এই নির্দেশনার কোন পরিবর্তন হবে না। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী অনড় অবস্থানে আছেন।

বাংলা ইনসাইডার

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর