লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার জাফরনগর গ্রামে পরকীয়ার ঘটনায় ছুরিকাঘাতে গৃহবধূ ও গণপিটুনিতে জড়িতসহ দুইজন নিহত হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
এ ঘটনায় লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার এ এইচ এম কামরুজ্জামান, রামগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার জাফরনগর গ্রামের ভূঁইয়া বাড়িতে রোববার সকাল ৯টার দিকে প্রবাসি সফিকুল ইসলামের স্ত্রী নাছরিন আক্তার মৌসুমি (৪০) কে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে একই গ্রামের রাছেল নামের এক যুবক।
এসময় মাকে বাঁচাতে গিয়ে নাছরিনের একমাত্র ছেলে নাঈমুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়। রক্তাক্ত অবস্থা তাকে রামগঞ্জ সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে গণপিটুনি দিয়ে
পিটিয়ে রাছেলকে হত্যা করেন। নিহত রাছেল একই এলাকার বলি মোল্যা বাড়ির ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানায়, রাছেলের সাথে নাছরিন আক্তার পরকিয়া সম্পর্ক চলে আসছিলো দীর্ঘ দিন । এ সুযোগে তাদের কিছু আপত্তিকর ছবি রাসেলের মোবাইলে সংরক্ষণ করে রাখে।
গত কয়েক মাস পূর্বে রাছেল তার ব্যবহৃত মোবাইলটি অন্যত্র বিক্রি করে দেয়। সেখান থেকে আপত্তিকর কিছু ছবি কয়েক মাস পূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ ছলে আসছে।
এনিয়ে পারিবারিক চাপে মৌসুমী সর্ম্পক বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চালায় এবং নিজের নিরাপত্তার জন্য থানা একটি জিডি করে। এতে রাসেল আরো ক্ষীপ্ত হয়ে প্রবাসীর স্ত্রী মৌসুমীকে প্রাননাশের হুমকি-ধমকি অব্যাহত রাখে। রোববার সকালে রাসেল উত্তেজিত মৌসুমীর নবর্নিমিত ভবনের সামনে উপস্থিত হয়ে দরজা খুলতে চাপ সৃষ্টি করে।
পরিস্থিতি দেখে মৌসুমী গ্রাম্য ছকিদার মিজানুর রহমানকে খবর দেয়। গ্রাম পুলিশ সহ গ্রামের লোকজন উপস্থিত হলে পাশর্^বর্তী বাড়ির আনোয়ার মোল্লার নিদের্শে দরজা খুলে দেওয়া মাত্রই বখাটে রাসেল ভবনে প্রবেশ করেই মৌসুমীকে এলোপাতাডি চুরিঘাত করে।
এতে প্রবাসীর স্ত্রী মাটিয়ে লুটে পড়লে স্বজনেরা দ্রুত উদ্ধার করে রামগঞ্জ সরকারী হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত ডাক্তার মৃত ঘোষনা করে। এ ঘটনা জের ধরে হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্থানীয়দের ধারণা।
নিহত নাছরিনের মেয়ে উম্মে হাবীবা ছিনতিয়া ও সৌরভী জানান, রাসেল মাকে প্রায় সময় মোবাইল ফোনে বিরক্তি করতে। আমাদের নতুন বাড়িতে চুরির ঘটনায় রাছেলকে অভিযুক্ত করায় আমার মাকে বসত ঘরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। ওই সময় তাকে গণপিটুনি দেন গ্রামবাসি।
রামগঞ্জ থানার (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান লাশ উদ্বার করে ময়না তদন্ত জন্য দুপুরে সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ সুপার ড. এ. এইচ এম কামরুজ্জামান বলেন, অবৈবাহিক সর্ম্পকের অবনতি হওয়ায় রাসেল ক্ষীপ্ত হয়ে হত্যার ঘটনা ঘটনায়। মুহুর্তের মধ্যে উত্তেজিত জনতা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। দুইটি হত্যার ঘটনায় পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করছে।