আওয়ামী লীগ সরকার টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আছে। আর তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ নবীন-প্রবীণের একটা ভারসাম্য তৈরি করছে সরকার।
সরকার এবং দল পরিচালনায় প্রবীণদের যেমন জায়গা দেয়া হয়েছে তেমনি তরুণ নেতৃত্বকে সামনে নিয়ে আসার একটা সুস্পষ্ট প্রক্রিয়া দৃশ্যমান। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কমিটিতে প্রচুর তরুণদেরকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে।
আর এ ছাড়া সরকারের মধ্যেও তরুণদেরকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। ফলের তরুণরা ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দিতে পারবেন কিনা সেটি পরীক্ষা দিচ্ছেন। আর এই পরীক্ষায় অনেকেই খুব ভালো ফলাফল করছেন বলে সাধারণ মানুষ মনে করছে।
বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারে কয়েকজন তরুণের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসিত, আলোচিত হচ্ছে। এই সমস্ত তরুণরা ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের জন্য এবং দেশের জন্য একটি সম্ভাবনাময় হিসেবে নিজেদেরকে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। যাদেরকে নিয়ে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে সেই পাঁচ জন তরুণ এর মধ্যে রয়েছেন:
মহিবুল হাসান চৌধুরী: প্রয়াত চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর পুত্র মহিবুল হাসান চৌধুরী রাজনীতি শুরু করেছিলেন পিতার ছায়ায়। কিন্তু আস্তে আস্তে তিনি যেন খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে এসেছেন।
এখন সরকারের একজন উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু উপমন্ত্রী হয়েও বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে দ্বিধাহীন কণ্ঠে সত্য উচ্চারণের কারণে তিনি প্রশংসিত হচ্ছেন, আলোচিত হচ্ছেন।
হেফাজত ইস্যুতে যখন সিনিয়র নেতারা এদিক ওদিক তাকিয়ে চিন্তা করছেন কোন পক্ষে যাবেন ঠিক সেইসময় মহিবুল হাসান চৌধুরী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেন এবং সেটি বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছে।
এছাড়াও রোজিনা ইস্যুতেও মহিবুল হাসান চৌধুরীর অবস্থান প্রথমে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক সৃষ্টি করলেও পরে এই অবস্থানই প্রশংসিত হচ্ছে। যেকোনো ইস্যুতে সাহস করে সত্য উচ্চারণ করার যে সততা মহিবুল হাসান চৌধুরী দেখাচ্ছেন তা প্রশংসার দাবি রাখছে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আলোচিত। নৌ-পরিবহন ক্ষেত্রে অনেকগুলো ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
তবে আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোন পদে না থাকলেও বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলতে দ্বিধা করছেন না।
বিশেষ করে অধিকাংশ মন্ত্রী যখন নিজেদেরকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হওয়া শুরু করছেন তখন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী রাজনৈতিক বিভিন্ন ইস্যুতে সরব থাকছেন।
ফলে একদিকে যেমন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উৎসাহিত হচ্ছেন অন্যদিকে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে নতুন একজন জাতীয় নেতা হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার সম্ভাবনা দেখিয়েছেন তিনি।
জুনায়েদ আহমেদ পলক: জুনায়েদ আহমেদ পলক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার মন্ত্রণালয়ের কাজে তিনি যেমন একটি পরিচ্ছন্নতা এবং দক্ষতার চিহ্ন জন্য রেখেছেন তেমনি বিভিন্ন ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতে তিনি অত্যন্ত পরিচিত এবং জনপ্রিয় ব্যক্তি।
সোশ্যাল মিডিয়াতে যখন সরকারবিরোধী লাগামহীন কথাবার্তা তখন তার বিপরীত স্রোতে যারা নির্ভীকভাবে দাঁড়িয়ে আছেন এবং শুদ্ধ উচ্চারণ করছেন তাদের মধ্যে জুনায়েদ আহমেদ পলক অন্যতম।
এনামুল হক শামীম: এনামুল হক শামীম আদ্যোপান্ত একজন রাজনৈতিক নেতা। এই সরকারে তিনি উপমন্ত্রী হয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদটা হারিয়েছেন।
কিন্তু পদ হারালে কি হবে, রাজনৈতিক ইস্যুতে তিনি এখনও সরব। সমস্ত রাজনৈতিক ইস্যুতে তিনি কঠোর ভাষায় বক্তব্য রাখছেন এবং আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যে যারা বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন এনামুল হক শামীম।
জাহিদ আহসান রাসেল: জাহিদ আহসান রাসেলও সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত হয়েছেন। বিশেষ করে যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতীতের দিকে তাকিয়ে দেখা গেছে এবার তিনি মন্ত্রণালয়ের চালানোর ক্ষেত্রে অনেকটা পরিকল্পিত মনোভাব দেখাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সামাজিক এবং রাজনৈতিক ইস্যুতেও মুখ খুলছেন।
এই পাঁচ জন তরুণ সম্ভাবনা জাগিয়েছে এবং দলের ভিতর প্রশংসিত হচ্ছেন। কারণ আওয়ামী লীগের তৃতীয় মেয়াদের অধিকাংশ মন্ত্রী হচ্ছেন দল নিরপেক্ষ। তারা যেন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
নিজেদের মন্ত্রণালয় ছাড়া অন্য ইস্যু নিয়ে কথা বলতে তারা আরষ্ঠ বোধ করছেন। সেখানে এই পাঁচ তরুণ সব ইস্যুতে কথা বলে রাজনীতিবিদদের অপরিহার্যতার জানান দিচ্ছেন।
বাংলা ইনসাইডার