এখন হেলেনা জাহাঙ্গীরকে নিয়ে তোলপাড় চলছে। আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে হেলেনা জাহাঙ্গীর চিহ্নিত হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
হেলেনা জাহাঙ্গীর চাকরিজীবী লীগ নামে একটি ভুঁইফোড় সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেই ফেঁসে গেছেন। বৃহস্পতিবার তার বাসায় অভিযান চালানো হয়েছে।
তাকে গ্রেপ্তার করে এখন তিন দিনের রিমান্ডে রাখা হয়েছে। হেলেনা জাহাঙ্গীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও মামলা করা হয়েছে। কুখ্যাত সেফুদার সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে বলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা গণমাধ্যমকে জানিয়েছে।
কিন্তু মজার ব্যাপার হলো যে, হেলেনার অতীত ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল এবং বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাওয়া যায়।
এইটুকুই নয়, হেলেনা জাহাঙ্গীর নিজেই একটি ভিডিওতে দেখিয়েছেন যে লন্ডনে তার বাড়ি আছে। তিনি বছরে দুবার লন্ডনে যান এবং তারেক জিয়ার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার কথাও এখন চাউর হচ্ছে।
লন্ডনে প্রবাসী অন্তত দুইজন বিএনপির নেতা জানিয়েছেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে তারেক জিয়ার গভীর সখ্যতা রয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগে যোগদানের পরও হেলেনা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে তারেকের যোগাযোগের কথা জানা যায়।
হেলেনা জাহাঙ্গীর একা না আওয়ামী লীগে বিভিন্ন অনুপ্রবেশকারী দুর্বৃত্ত যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন, গ্রেপ্তারের পর তাদের ব্যাপারে অনুসন্ধান করে দেখা যাচ্ছে যে তাদের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে লন্ডনে পলাতক বিএনপি`র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার যোগসূত্র ছিল, যোগাযোগ ছিল।
আওয়ামী লীগের জিকে শামীম নিয়মিত তারেককে পয়সা দিতেন। মির্জা আব্বাসের একসময়ের ক্যাডার জিকে শামীম পরে যুবলীগের নেতা হয়েছিলেন। যুবলীগের নেতা হলে কি হবে, তারেকের কাছে নিয়মিত মাসোয়ারা দিতেন এই অনুপ্রবেশকারী আওয়ামী লীগের নেতা।
শাহেদ ছিলেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য। আটকের পর দেখা গেল যে তারেকের সঙ্গে দীর্ঘদিনের যোগাযোগ ছিল শাহেদের এবং তারেকের মাধ্যমে শাহেদ বিভিন্ন রকম ব্যবসা করতেন বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে। সেই সময় তিনি হাওয়া ভবনের ক্যাডার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন।
পাপিয়া নাটকও এখন অনেকে ভুলতে বসেছেন। কিন্তু পাপিয়া নাটকেও দেখা যায় যে পাপিয়ার সঙ্গেও বিএনপি এবং তারেক জিয়ার যোগাযোগ ছিল।
তবে তারেক জিয়ার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি যোগাযোগ ছিল সেলিম প্রধান, যিনি অনলাইন ক্যাসিনো বাণিজ্য করতেন এবং আওয়ামী লীগের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেছিলেন। সেলিম প্রধানের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে তারেক জিয়ার সম্পর্ক ছিল, এমন তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে।
লক্ষণীয় যে, যখনই আওয়ামী লীগে যেকোনো অনুপ্রবেশকারীকে আটক করা হয় তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হয় তখন তাদের সঙ্গে তারেকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।
অনেকেই মনে করছেন যে, বিএনপি পরিকল্পিতভাবে অনুপ্রবেশকারীদেরকে আওয়ামী লীগের ঢুকাচ্ছে। তারা যেন আওয়ামী লীগে ঢুকে বদনাম করতে পারে, বিভিন্ন রকম অপকর্ম করে আওয়ামী লীগের ঘাড়ে দোষ চাপাতে পারে। সেই ধারায় হেলেনা জাহাঙ্গীরও আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছিলেন কিনা সেটিই এখন দেখার বিষয়।
বাংলা ইনসাইডার