...
Sunday, April 6, 2025

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যতীত সবকিছুই খুলে দেয়া হচ্ছে!

বিডিনিউজ ডেস্ক | ঢাকা | ১১ই আগস্ট, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, ২৭শে শ্রাবণ, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ , বর্ষাকাল, ৩রা মহর্‌রম, ১৪৪৩ হিজরি

চাকুরির খবর

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলো পুনরায় চালু করার ব্যাপারে এই অবহেলা ও বিলম্বের জন্য ভবিষ্যতে জাতিকে এর নেতিবাচক প্রভাবের মুখোমুখি হতে হবে

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যতীত সবকিছুই খুলে দেয়া হচ্ছে আগামী বুধবার (১১ আগস্ট) থেকে।

লকডাউনের সময়েও দেশের প্রতিটি সেক্টর আংশিক বা পুরোপুরি খোলা ছিল। কিন্তু, গতবছরের ১৮ মার্চের পর একদিনের জন্যও খোলা হয়নি কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।  

যে কারণে, স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ পড়াশুনার সাথে নেই। এই সময়ে শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহের শিকার হয়ে অনেক শিক্ষার্থী ঝরেও পড়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ কোটি ছাত্রছাত্রীর শিক্ষাজীবনে শুধু অপূরণীয় ক্ষতিই হয়নি, পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন স্টেশনারি ও অন্যান্য পরিষেবাদানকারী ব্যবসায়ীরাও।

গত ১৭ মাস স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় কাগজ, কাগজজাত দ্রব্য, স্টেশনারি, বেকারি ও আইসক্রিম বিক্রি ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। স্কুল পরিবহন, ফটোকপি এবং খাবারের দোকানে কাজ করা ব্যক্তিদেরও খারাপ সময় যাচ্ছে।

অর্থনীতিকে চাঙা রাখার জন্যই লকডাউন শিথিল করেছে সরকার। কিন্তু, স্কুল-কলেজ বন্ধ বন্ধ থাকায়- অনেক ব্যবসাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

করোনার প্রাদুর্ভাবের জন্য বিশ্বের যে অল্প কয়েকটি দেশ দীর্ঘদিনের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে, তাদের মধ্যে একটি বাংলাদেশ। 

করোনার নতুন নতুন ধরনগুলোর বিস্তারের মধ্যেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর পাশাপাশি বিশ্বের ১৭৫টি দেশে এখন স্কুল-কলেজ খোলা রয়েছে। এমনকি প্রতিবেশী ভারতে, যেখানে এখনও দিনে ৪৫০ জন মারা যাচ্ছে এবং ৩৬,০০০ জন নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছে, সেখানেও বেশিরভাগ প্রদেশে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয়েছে। 

ব্লুমবার্গ নিউজের একটি সম্পাদকীয়তে, এর প্রতিষ্ঠাতা মাইকেল আর. ব্লুমবার্গ লিখেছেন: “স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়াকে এখন সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।

টিকার অজুহাতে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার বিরোধিতা করাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘অজুহাত দেওয়ার সময় শেষ। এই মহামারীর ফলে শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। বাচ্চাদের ক্লাসে ফিরিয়ে আনাই এখন প্রত্যেকের প্রধান এজেন্ডা হওয়া উচিত।” 

বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা ৫০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে শ্রেণিকক্ষের বাইরে আছে। বর্তমানে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ থাকলেও, শীঘ্রই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কোন ইঙ্গিত দেয়নি সরকার।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম গত সোমবার (৯ আগস্ট) জানিয়েছেন, বর্তমান বিধিনিষেধ শিথিল করা হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কখন খুলতে পারে, সে ব্যাপারে তিনি কিছুই বলেননি।

যেহেতু শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কোন পরিকল্পনাই হাতে নেয়নি, শিক্ষার্থীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এরমধ্যেই ঝরে পড়ছে বলে আশংকা করছেন শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা।    

ক্যাম্পেইন ফর পপুলার এডুকেশনের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত বছরের শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার একটি পরিকল্পনা করছিল, কিন্তু এ বিষয়ে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি।”

তিনি বলেন, “যদিও সরকার বলছে যে মাধ্যমিকের ৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থীই এখন পড়াশুনার সাথে রয়েছে, কিন্তু আসলে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী এখন পড়াশুনার বাইরে। আর এটা কোন সত্যিকারের পরিসংখ্যানও না।” 

তিনি জোর দিয়ে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পুনরায় খোলার পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে এবং শিক্ষকদের টিকা দেওয়াকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। 

দীর্ঘমেয়াদী কোন পরিকল্পনা ছাড়াই গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে গত ১৭ মাসে মোট ২২ বার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাই সকল শিক্ষার্থীর ভিত্তি। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলো পুনরায় চালু করার ব্যাপারে এই অবহেলা ও বিলম্বের জন্য ভবিষ্যতে জাতিকে এর নেতিবাচক প্রভাবের মুখোমুখি হতে হবে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার কখন পাঁচ শতাংশে নিচে নেমে আসবে, অথবা কখন সকল শিক্ষার্থী টিকাগ্রহণ করে ফেলবে; সে সময়ের অপেক্ষায় আছে মন্ত্রণালয়। কিন্তু সংক্রমণের হার খুবই পরিবর্তনশীল এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা কখন টিকা পাবে সেটাও অনিশ্চিত।
 
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক বলেন, তারা যেকোনো সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করার জন্য প্রস্তুত। “

তিনি বলেন, “আমাদের হাতে দুটি অপশন আছে। প্রথমত, সংক্রমণের হার অবশ্যই পাঁচ শতাংশের নিচে নামতে হবে। দ্বিতীয়ত, সকল শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের টিকা নিতে হবে। দুইটি শর্তের একটিও পূরণ না হলে আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনরায় খুলব না।”

বাচ্চারা টিকা না নিলে স্কুল খোলা হবে না, এরকম শর্ত বিশ্বের কোথাও নেই। যেসব দেশে স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে- সেখানে কোথাও ১২ বছরের নিচের শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু করেনি। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের একাধিক গবেষণা বলছে, শিশুরা স্কুলে সংক্রমিত হয়ে সেটা বাসায় নিয়ে আসবে, এই সম্ভাবনা খুবই কম। 

সুইডেন এই মহামারির শুরু থেকেই সব ধরনের স্কুল খোলা রেখেছে। সেখানে এখন পর্যন্ত একটি শিশুও করোনার কারণে মারা যায়নি।

জাতিসংঘের দুটি সংস্থা- ইউনেস্কো এবং ইউনিসেফ গত মাসে বলেছিল, মহামারি সম্পর্কিত যে কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞা সবার শেষে চাপানো উচিত স্কুলগুলোতে, আর পুনরায় খোলার সময়ে সবার আগে খোলা উচিত স্কুল। 

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জানিয়েছেন, তারা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো পুনরায় চালু করতে চান এবং শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রেণিকক্ষে পাঠদান নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ বলেই বিবেচনা করছেন। তবে সবকিছুই মহামারি পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে বলেও যোগ করেন তিনি।
 
যেখানে অন্য সব দেশ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলোকে পুনরায় খোলার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয় আসছে সেপ্টেম্বরে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পুনরায় খোলার পরিকল্পনা করছে।

কিন্তু এখানেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই এখনো টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারেনি । আর যারা নিবন্ধন করতে পেরেছে, তাদের অর্ধেক সবে টিকা নিতে পেরেছে। 

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অর্থনৈতিক ক্ষতি: 

শুধু ঝরে পড়ার হার বাড়া, পড়াশুনায় ক্ষতি আর দরিদ্রতা নয়; স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতিও হচ্ছে।
 
কিন্ডারগার্টেন, রেস্তোরাঁ, কাগজ ও প্রকাশনা শিল্প, পরিবহন, কোচিং, আইসক্রিম এবং হিমায়িত খাদ্য খাতসহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুলগুলি গত বছরের মার্চ থেকে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা হারিয়েছে।

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও কলেজ ঐক্য পরিষদের মতে, মহামারির কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় মাসের পর মাসের বেতন না পেয়ে দেশের অন্তত ৭০ শতাংশ বেসরকারি শিক্ষক পেশা পরিবর্তন করতে করতে বাধ্য হয়েছেন।
 
মহামারি চলাকালীন আর্থিক সংকটের কারণে ৫০ শতাংশ কিন্ডারগার্টেন ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যানুযায়ী,  এমপিওভুক্ত তিন লাখ ৬৩ হাজার শিক্ষক ও কর্মচারীর মধ্যে দুই লাখ ৭৮ হাজার জন ইতোমধ্যে টিকা পেয়েছেন। বাকিরা ওয়েটিং লিস্টে আছেন।

সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে  ৩৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন। তাদের মধ্যে ৩০ হাজারই ইতোমধ্যে টিকা নিতে পেরেছেন।
 
বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও কলেজ ঐক্য পরিষদের সভাপতি ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকদের মধ্যেও ৫০ শতাংশ এরই মধ্যে টিকা নিয়ে ফেলেছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট এক লাখ ৭৯ হাজার শিক্ষার্থী টিকা পেতে নিবন্ধন করেছে এবং তাদের মধ্যে প্রথম ডোজ পেয়েছে ৮০ হাজার জন।

দেশে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষার জন্য দুই লাখ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে অধ্যয়নরত আছে প্রায় চার কোটি ৬ লাখ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে উচ্চশিক্ষার শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ৪৫ লাখ।  

বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন: 

রাশেদা বলেন, শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফেরার সুবিধার্থে সরকারকে অবশ্যই একটি বিশেষ তহবিল গঠন করতে হবে। 

তিনি আরও বলেন,  প্রতিটি উপজেলায় স্কুলগুলোতে খাবারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এরসাথে কম খরচে এবং উচ্চ গতির ইন্টারনেট সুবিধা বাড়াতে হবে। 

“যদি মন্ত্রণালয়গুলো এগুলো বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আবার চালু হওয়ার পর শিক্ষাখাত ব্যাপক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে পারে,” যোগ করেন তিনি। 

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড মনজুর আহমেদ বলেন, তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করার জন্য সরকারের কাছে অনেক প্রস্তাব রেখেছিলেন, কিন্তু সেগুলো কানে দেয়নি সরকার। 

গ্রামাঞ্চলে সংক্রমণ শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল বলে মনে করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, “আমরা মন্ত্রণালয়গুলোকে বলেছি যে সবখানে উপজেলা-ভিত্তিক কমিটি গঠন করতে হবে, যারা প্রকৃত অভাবী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করবে। সরকার যদি তাদের আর্থিকভাবে সাহায্য না করে, তাহলে এই শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফিরে আসা কঠিন হবে।” 

প্রখ্যাত ভাইরোলজিস্ট এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড নজরুল ইসলাম বলেছেন, সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে না নামলে একাডেমিক কার্যক্রমের অনুমতি দেওয়া উচিত না। 

তিনি আরও বলেন, “স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল-কলেজ পরিচালনা করানোর সামর্থ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেই।  সেক্ষেত্রে স্কুলেও সংক্রমণের হার অনেক বেড়ে যাবে বলে মনে করছি আমরা।”

ব্র্যাকের ভাইস-চেয়ারপারসন ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. আহমেদ মুশতাক রাজা চৌধুরী বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় খোলার আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত স্থানীয় পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ করা।

তবে খোলার পর স্কুলগুলোকে অবশ্যই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জারি করা স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।” 

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর

Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.