লক্ষ্মীপুরে বিয়ের প্রস্তাব নাকচ করায় ১৫ বছরের এক কিশোরীকে গলা টিপে হত্যার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে আনোয়ারা নামে এক নারী ঘটকের বিরুদ্ধে।
এসময় কিশোরীকে মারধর করে আহত করে ওই ঘটকের অনুসারীরা। এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে আহত কিশোরীর মা নিজেই লক্ষ্মীপুর থানায় চার জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্ত আনোয়ারা বাঞ্চানগর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ উল্যার মেয়ে এবং অপর অভিযুক্ত ছায়দুল হকের স্ত্রী, এছাড়া ও তাদের দুই ছেলে আকবর ও এমরান এ ঘটনার সাথে জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে শনিবার রাতে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের সোনালী কলোনী সংলগ্ন এবায়েদ উল্যা সওদাগর বাড়ির গলিতে হামলা চালিয়ে ওই কিশোরীকে হত্যার চেষ্টা করে ঘটক আনোয়ারা ও তার পরিবারের লোকজন।
ভূক্তভোগী ওই বাড়ীর স্থানীয় বাসিন্দা। ঘটক আনোয়ারা একই বাড়ির ভাড়াটিয়া। ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন পরিবারটি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে নাবালিকা কিশোরীর বাল্য বিয়ে দেওয়ার জন্য পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করে আসছিলো ঘটক আনোয়ারা ও তার স্বামী। বয়স কম হওয়ায় বিয়ের প্রস্তাব নাকচ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে বিভিন্ন ভাবে অপমাণ-অপদস্তসহ হয়রানি শুরু করে অভিযুক্তরা।
এরই জের ধরে ঘটনার দিন ধোয়ার কাজে প্রয়োজনে বাড়ির পাশে পুকুরঘাটে যায় ওই কিশোরী। এসময় আনোয়ারা তাকে দেখতে পেয়ে গায়ে পড়ে ঝগড়া- বিরোধ শুরু করে দেয়। এক পর্যায়ে অভিযুক্তের ভাড়া বাসার সামনে পৌছালেই অনুসারীদের নিয়ে ওই কিশোরীর উপর হামলা চালায় ঘটক আনোয়ারা।
এসময় এলোপাতাড়ি মারধরের শুরু করে, গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা চালায় সে। এসময় গলায় থাকা ৮ আনা ওজনের স্বর্ণের অলংকার ছিনিয়ে নেয় ঘটক আনোয়ারা।
এক পর্যায়ে ওই কিশোরীর শোর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে সরে যায় অভিযুক্তরা। পরে ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এদিকে স্থানীয়রা সূত্রে জানা যায়, ঘটক আনোয়ারা দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় তান্ডব সৃষ্টি করে আসছে। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিবাহিত পুরুষদের পরিচয় গোপন করে বিভিন্নস্থানে বিয়ে দিয়ে প্রতারণা করছে। এতে অনেক পুরুষেরই পূর্বের স্ত্রীর সংসর ভেঙেছে সে।
এছাড়াও নাবালেক ছেলে-মেয়েদের বিভিন্ন প্রলোবনে বিয়ে দিয়ে প্রতারণা করে ঘটক আনোয়ারা ও তার স্বামী ছায়েদুল হক। এসব প্রতারণার ঘটনায় কেউ প্রতিবাদ করলে দলবল নিয়ে হামলা চালায় ঘটক আনোয়ারা।
এমনকি নিজের জামা-কাপর ছিড়ে নারী নির্যাতনের মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করে সে। তাই ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে না বলে জানায় স্থানীয়রা।
ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বলেন, ঘটনার পর থেকে প্রতিনিয়তই আনোয়ারা হুমকি দিয়ে আসছে, নিজেদের পুলিশের সোর্স দাবী করে বলে- ‘সাপের লেজে পা দিয়েছি, ছোবল খেতে হবে’, পুলিশ তার হাতের মুঠোয়, মামলা হামলা করে বাড়ি ছাড়া করবে।
তার এমন হুমকিতে স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে নিরাপত্তা হীনতায় ভূগছি। এ ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছেন তিনি।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় কিশোরীর মা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।