অনলাইন ডেস্ক: মিয়ানমারে এর আগে জাতীয় নির্বাচন হয়েছিল ২০২০ সালের নভেম্বরে। শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) সে বছর বিপুল ভোটে জয় পেয়েছিল।
কিন্তু পরের বছর ফেব্রুয়ারিতেই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চিকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি করে সামরিক জান্তা সরকার। এ বছর জানুয়ারিতেই জরুরি অবস্থা শেষ হওয়ার কথা।
দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, এরপরই নির্বাচন অনুষ্ঠান করা নিয়ম। সামরিক জান্তা সরকার এ বছর আগস্টে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি।
১৫ বছর ধরে মিয়ানমারে থাকা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ঊর্ধ্বতন উপদেষ্টা রিচার্ড হোর্সে বলেছেন, নতুন বিধিগুলোর উদ্দেশ্য হচ্ছে, সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারার মতো রাজনৈতিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা। সমস্ত ব্যাপারটাই সামরিক শাসনকে অব্যাহত রাখার চর্চা।
চলতি বছর নির্বাচনে লড়তে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য কঠোর নিয়ম চালুর ঘোষণা দিয়েছে মিয়ানমার জান্তা সরকার।
শুক্রবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছে, নতুন আইন অনুযায়ী, জাতীয় নির্বাচনে লড়তে ইচ্ছুক রাজনৈতিক দলগুলোকে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন করতে হবে কিংবা নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।
আর দলগুলোকে অবশ্যই অন্তত ১ লাখ সদস্য সংগ্রহ করতে হবে, যে সংখ্যা আগে ছিল ১ হাজার।
আইনটি ২০১০ সালের একটি আইনের আদলে করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, যেসব দল ও প্রার্থীর ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা ‘বেআইনি’ কাজে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে সেসব দল বা প্রার্থীকে নির্বাচনে নিষিদ্ধ করা হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন নির্বাচনি আইন এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে আগামী নির্বাচনে সামরিক সরকারের কোনো বিরোধী দল না থাকে। অর্থাৎ এই আইন দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রক্সি বা সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)-এর পক্ষেই কাজ করবে।
এছাড়া দলগুলোকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকে প্রায় ৩৫ হাজার মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ জমা করতে হবে। যে দলগুলো এই নতুন প্রয়োজনীয়তাগুলো পূরণ করতে অক্ষম তারা নিবন্ধন করার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।