রাঙামাটি শহরে নীরিহ লোককে গাঁজা দিয়ে ফাঁসিয়ে আটক করার অভিযোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজনকে কোতয়ালী থানা চত্বরে ঘেরাও করে রেখেছে এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বুধবার সন্ধ্যায় রাঙামাটি মাদক অফিসের এসআই জসিম উদ্দিন নিজে থেকে গাঁজা দিয়ে শহরের মালিপাড়া এলাকার বাসিন্দা জনৈক খোকনকে আটক করে নিয়ে আসতে গেলে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে।
এসময় স্থানীয়রা খোকনকে নীরিহ দাবি করে তাকে আটক না করার জন্য অনুরোধ করলেও এসআই জসিম উদ্দিন খোকনকে কোতয়ালী থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্ঠা করে।
এসময় স্থানীয় বাসিন্দরা শহরের পুরাতন বাসস্টেশন এলাকায় তাদের গতিরোধ করে বিক্ষোভ করে। এদিকে রাত আটটার দিকে নিজেদের গাড়িতে তুলে খোকনকে কোতয়ালী থানা নিয়ে গেলে তার প্রতিবেশি ও স্বজনরা কোতয়ালী থানায় গিয়ে মাদকের গাড়ি ঘেরাও করে রাখে।
এলাকাবাসী জানায়, চলমান লকডাউনে মানুষ ভাত খেতে পারছেনা সেখানে গাঁজা কিনবে কি করে। আর আমরা সকলেই হিন্দু সম্প্রদায়ের এবং সকলেই মালির কাজ করি।
স্বল্প বেতনে যেখানে বেঁেচ থাকতে পারছিনা সেখানে মাদক কই পাবে। এসআই জসিম নীরিহ লোকজনকে ধরে ধরে মাদক দিয়ে ফাঁিসয়ে থানায় দিচ্ছে।
আমরা এর প্রতিকার চাই এসআই জসিমের বিচার চাই। এদিকে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য জানতে এসআই জসিম এর সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কোতয়ালী থানার সামনে সংবাদকর্মীদের কটাক্ষ করে সটকে পড়েন।
আটককৃত খোকনের দাবি, সন্ধ্যায় প্রচন্ড বৃষ্টি হওয়ার সময় আমি পৌরকলোনীর সামনের একটি দোকানের সামনে দাড়িয়ে ছিলাম। এসময় আকস্মিকভাবে তিনজন লোক এসে আমাকে ধরে মারধর করতে থাকে এবং পুরো শরীর চেক করেও কিছু পায়নি।
এসময় লোকজন এগিয়ে আসতে দেখে একলোক একটি পুটলা বের করে বলে এইতো এটা তোর কাছ থেকে পাইছি। এসময় তাকে ঘুসি মারার পাশাপাশি গলা চিপে ধরে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
পৌরকলোনীর বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সিপাহী ইনসান নিজেই পকেট থেকে গাঁজা বের করে খোকনের কাছ থেকে পেয়েছে বলে জানায়। এসময় এসআই জসিম খোকনে বেদড়ক মারধর করতে থাকে।
বিষয়টি স্বচক্ষে দেখেই এলাকাবাসী ক্ষেপে গিয়ে মাদকের লোকজনকে ঘিরে ফেলে এবং বিক্ষোভ করতে থাকে। জোর করে খোকন কে গাড়ি তুলে থানায় নিলে শতাধিক এলাকাবাসী থানার সামনে অবস্থান করে খোকনকে ছাড়ার দাবিতে মাদক অফিসের গাড়ি আটকিয়ে রাখে।
কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কবির হোসেন জানিয়েছেন, কি জন্যে বিক্ষোভ হচ্ছে সেটি আমরা জানি না। মাদকের লোকজন একজনকে ধরে এনেছে তাকে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ আমাদের কাছে হস্তান্তর করলে আমরা প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, মাদক অফিস কর্তৃক পৌরকলোনীতে অভিযানের সময় কোনো পুলিশ সদস্যকে নিয়ে যাওয়া হয়নি। অনেক পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গেছে।
এদিকে, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্তৃক অভিযান পরিচালনা করলে ম্যাজিষ্ট্রেট এবং পুলিশকে সাথে নিয়ে অভিযান করার জন্য জেলা প্রশাসনের মিটিংয়ে স্পষ্টভাবে সিদ্ধান্ত হলেও সেই সিদ্ধান্ত না মেনে রাঙামাটির মাদক নিয়ন্ত্রণ অফিস কর্তৃপক্ষ শহরে এ পর্যন্ত একাধিক অভিযান চালিয়েছে যেগুলো নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে বুধবারের অভিযান অফিসের উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে করা হয়নি বলে থানার সামনেই এসআই জসিমের উপর ক্ষিপ্তহন মাদকের উপপরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ।