২৬ এপ্রিল গুলশান-১ এ মারা যায় কলাজছাত্রী মুনিয়া। মুনিয়ার মৃত্যু এখনো তদন্ত চলছে। এটি মৃত্যু না আত্মহত্যা এবং এর সঙ্গে কারা জড়িত এ নিয়ে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা তদন্ত করছে।
এই নিয়ে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সূত্রে বলা হচ্ছে যে খুব শীঘ্রই তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। তারা শুধু ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট যেকোনো সময় তাদের কাছে আসতে পারে বলে জানা গেছে।
কিন্তু এই তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের হাতে। মুনিয়ার মৃত্যু হয় ২৬ এপ্রিল। মুনিয়ার মৃত্যুর আগে আরেকটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় ছিল।
সেটি ছিল একজন ব্যাংক কর্মকর্তার আত্মহত্যা। ব্যাংক কর্মকর্তা সেই আত্মহত্যার আগে লিখেছিলেন যে তাঁর আত্মহত্যার জন্য হুইপ সামছুল হকের পুত্র শারুন দায়ী।
এই চিরকুট পাওয়ার পর সারাদেশে এটি নিয়ে তোলপাড় হয় এবং ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী ঢাকায় এসে সংবাদ সম্মেলন করেন। এটি নিয়ে যখন সারাদেশে তোলপাড় সেই মুহূর্তে শারুন তাঁর কয়েকজন ঘনিষ্ঠকে বলেছেন যে খুব শীঘ্রই বিষয়টি শেষ হয়ে যাবে।
মুনিয়ার ঘটনার এক সপ্তাহ আগে ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করেন এবং সেটি দেশের সব গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ সময় শারুন তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে বলেছিলেন যে পুরো ঘটনাটা অন্যদিকে মোড় নিবে এবং আমি ব্যবস্থা করেছি।
তিনি তখন মুনিয়ার কথা বলেন। মুনিয়া মারা যাচ্ছে এবং এই মারা যাওয়ার পরে ব্যাংক কর্মকর্তার আত্মহত্যার ইস্যু নিয়ে আর কেউ কথা বলবে না। এই সময় তাঁর একজন বন্ধু শারুনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে এর সাথ তার সম্পর্ক কি।
তখন শারুন তাকে বলেছিলেন সম্পর্ক করানো হবে। তার মানে কি শারুন ব্যাংক কর্মকর্তার আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই মুনিয়ার মৃত্যু ঘটিয়েছেন। এ ঘটনার সঙ্গে কি শারুন সরাসরিভাবে জড়িত ছিল।
এই প্রশ্নটি নতুন করে সামনে এসেছে। কারণ ১৯ এপ্রিল কিভাবে শারুন জানলেন যে মুনিয়া মারা যাচ্ছে। একমাত্র যিনি এই ধরনের পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন তিনিই বলতে পারেন যে কবে মারা যাচ্ছে।
কারণ, ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত মুনিয়ার কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি এবং তাকে নিয়ে কোন টানাপোড়নের কথা শোনা যায়নি। ২২ এপ্রিল থেকে শারুন মুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে এবং ২১,২২,২৩ এপ্রিল শারুনের সঙ্গে মুনিয়ার বড় বোন নুসরাতের সাথে একাধিকবার কথোপকথন হয়।
ধারণা করা হচ্ছে যে ব্যাংক কর্মকর্তার আত্মহত্যার বিষয়টি নিয়ে যে গণমাধ্যমগুলো বেশি সোচ্চার ছিল সেই গণমাধ্যমগুলোকে যদি আটকানো যায় এবং যদি মুনিয়া ইস্যুটি সামনে চলে আসে তাহলে কর্মকর্তার আত্মহত্যার প্ররোচনার বিষয়টি ধামাচাপা হয়ে যাবে।
এ কারণেই হয়তো মুনিয়াকে হত্যা করা হয়েছে বা আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। কারণ মুনিয়া শেষ দিকে যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বলে দেখা যায় সেক্ষেত্রে স্পষ্ট প্রমাণিত হয়ে যে শারুন এবং নুসরাত বারবার মুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
তারা হয় তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করেছিলো অথবা তাদেরই কোনো লোকজন মুনিয়াকে হত্যা করেছিল বলেই বিভিন্ন মহল মনে করছেন। এখন তদন্তকারী কর্মকর্তারা মুনিয়ার মৃত্যুর কথা আগেই কিভাবে শারুন তাঁর বন্ধু-বান্ধবকে বললো সেই বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে।
বাংলা ইনসাইডার