মন্ত্রিসভায় নতুন মন্ত্রী হিসেবে অভিষিক্ত হচ্ছেন ডক্টর শামসুল আলম। তিনি পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
সোমবার ঈদুল আযহার আগে শেষ কর্মদিবসে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকের আগে পরে মন্ত্রিসভার সদস্যদের দপ্তর বদলের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, প্রধানমন্ত্রী এই দপ্তর বদল নিয়ে কাজ করছেন। তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য কেউ দিতে পারেনি।
দীর্ঘদিন ধরেই মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছিল। বিশেষ করে সরকারের অর্ধেক মেয়াদের পরও যারা দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারছেন না, যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অভিযোগ উঠছে তাদেরকে দায়িত্ব থেকে বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত জনপ্রিয় এবং কর্মক্ষমদেরকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করার এক ধরনের আহ্বান ছিল।
বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছিল যে, সরকারের কাজের গতি আনার জন্য মন্ত্রিসভার একটি রদবদল করা দরকার। এর মধ্যেই গত শুক্রবার ড. শামসুল আলম পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত হন এবং এরপর মন্ত্রিসভার রদবদলের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।
তবে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, ড. শামসুল আলম ছাড়া নতুন কোনো মন্ত্রী মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন না। আর মন্ত্রিসভার কাজের গতি আনার জন্য দপ্তর বদলের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী বিবেচনা করছেন এবং সেটি খুব শীঘ্রই হতে পারে।
তবে অন্য একটি সূত্র বলছে যেহেতু এখন একটি সংকটকালীন সময়ে চলছে। এই সংকটকালীন সময়ে মন্ত্রিসভার দপ্তর বণ্টনের সম্ভাবনা খুব কম। সাম্প্রতিক সময় সবচেয়ে বেশি সমালোচিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বাদ দেয়ার জন্য মোটামুটি একই জাতীয় ঐক্যমত হয়েছিল।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে যে, এরকম পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তন আনার পক্ষে নন। কারণ তিনি মনে করছেন, এতে একটি ভুল বার্তা যাবে। এতদিন ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে যে ব্যর্থতার অভিযোগগুলো ছিল সেটি এক ধরনের স্বীকৃতি পাবে।
এটি সরকারের উপর নেতিবাচক চাপ ফেলতে পারে। তবে একটি সূত্র বলছে যে, মন্ত্রীদের যে দপ্তর বদল হবে সেখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অন্য কোনো মন্ত্রীকে দেয়া হতে পারে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আরেকটি দপ্তর দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। তবে এরকম গুঞ্জনের কোন সত্যতা বা নিশ্চিত তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
এছাড়াও মন্ত্রিসভায় আরো কিছু দপ্তর বদলের কথা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু এই দপ্তর বদল সম্পর্কে সুনিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। সরকারের একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী বলেছেন, দপ্তর বদল প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব ব্যাপার। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে তিনি দপ্তর বদলের নির্দেশ দিলেই এই দপ্তর বদল হতে পারে।
উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি এই মন্ত্রিসভা গঠন হওয়ার পর একবারই দপ্তর বদল হয়েছিল। তখন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। আর সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী হিসেবে।
সেখানেই তিনি এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া মন্ত্রিসভায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত শেখ আব্দুল্লাহ মৃত্যুর পর নতুন একজন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিসভা রদবদল প্রধানমন্ত্রীর একটি নিজস্ব এখতিয়ারাধীন বিষয়। তবে গণতান্ত্রিক সরকারে এটি একটি রুটিনওয়ার্ক।
সম্প্রতি ভারতের মন্ত্রিসভার ব্যাপক রদবদল হয়েছে। তারপর থেকেই বাংলাদেশে গুঞ্জন ছিল যে। বাংলাদেশ মন্ত্রিসভা রদবদল হতে পারে। তবে এখন বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, মন্ত্রিসভার কিছু দপ্তর পরিবর্তন হলেও হতে পারে তবে সে সম্ভাবনা নিশ্চিত নয়।
বাংলা ইনসাইডার