অনলাইন ডেস্ক: বিদ্যুৎ নিয়ে বিএনপি সরকারের সময়ের দুর্নীতি ও মানুষের দুর্ভোগ-বিক্ষোভের ঘটনাবহুল চিত্র এবং আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করা ভিডিওতে বলা হয়, ‘২০০৫ সালের রমজান মাস।
কার্তিকের কাঠফাটা গরমে সাধারণ মানুষের প্রাণন্তকর অবস্থা। ঢাকা শহরজুড়ে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা। আর সারাদেশে তো বিদ্যুৎই থাকে না। এমনকি ইফতার, তারাবি ও সেহরির সময়েও বিদ্যুৎ না থাকায় ক্ষুব্ধ হয় আপামর জনতা।
অথচ সে সময় শুধু বিদ্যুতের খুঁটি বসিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান। ফলে বিএনপির আমলজুড়েই বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংকটে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয় দেশ।’
আওয়ামী লীগের সময়ের তুলনায় বিএনপির সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছিল জানিয়ে বলা হয়, ‘১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগ যখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৪ হাজার ৩শ মেগাওয়াটে উত্তীর্ণ করেছিল, ২০০১ সালে আবার বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসলে তারেক রহমানের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা কমে হয় মাত্র ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াট।
তার অর্ধেকই সরবরাহ করা হতো ঢাকার কয়েকটি অভিজাত এলাকায়। বাকি অর্ধেক সারাদেশের জন্য। এতে শীতকালেও নজিরবিহীনভাবে বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দেয় দেশজুড়ে।’
শুধু তাই নয়, ‘বিএনপি-জামায়াতের আমলে খোদ ঢাকাতেও দিনের বেলা মোমবাতি জ্বালিয়ে নিয়মিত স্কুলের ক্লাস নিতে বাধ্য হয়েছেন শিক্ষকরা। বিদ্যুৎ না থাকায় পানি উত্তোলনও ব্যাহত হয়েছে শহরে। ফলে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে রাজধানীর সাধারণ জনগণ।’
‘এ সময় গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ না থাকায় চাষাবাদের জন্য ডিজেল চালিত সেচ পাম্পের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন কৃষকরা। সেই সুযোগে ডিজেল ও সারের দামও বাড়িয়ে দেয় ‘হাওয়া ভবন’ সিন্ডেকেট।
কিন্তু দেশের মানুষ তখন আর সহ্য করতে না পেরে তারেক-মামুন গংদের লুটপাটের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র প্রতিবাদ শুরু করে।’
শুধু বিদ্যুৎ চাওয়ার কারণেই ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে ২০ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করা হয় বলেও ভিডিওতে দেখানো হয়। এটির প্রমাণ হিসেবে বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকের সংবাদ সংযুক্ত করে দেখানো হয় ভিডিওতে।
সজীব ওয়াজেদ জয়ের শেয়ার করা ভিডিওতে আরও বলা হয়, ‘২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে দেশের ৪০টি জেলার সাধারণ মানুষের ওপর একযোগে হামলা চালায় বিএনপি-জামায়াতের পেটোয়া বাহিনী।
এভাবেই হত্যা ও খুনের রাজত্ব কায়েম করে দেশকে নৈরাজ্যের অন্ধকারে ডুবিয়ে কয়েক হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে তারেক রহমান ও তার বন্ধুরা।’
এরপর দেখানো হয় ২০০৯ সালে আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের বদলে যাওয়ার চিত্র। সেখানে বলা হয়, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের ১৩ বছরে বদলে গেছে পুরো দৃশ্যপট।
দেশের শতভাগ মানুষ ভোগ করছে ২৪ ঘণ্টার বিদ্যুৎ সুবিধা। রাজধানীর মানুষের কাছে লোডশেডিং এখন ইতিহাস মাত্র।’
এসময় গ্রামের উদাহরণ টেনে বলা হয়, ‘সেখানকার মানুষরা ভালো আছে। ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। প্রত্যন্ত গ্রামের হারিকেনটিও এখন চলে গেছে জাদুঘরে।’
আজকের বাংলাদেশ বদলে গেছে। শতভাগ বিদ্যুতের ওপর ভর করে দেশ ডিজিটাল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে। অথচ এখনকার প্রজন্ম জানেই না একসময় বিদ্যুতের জন্য প্রাণ দিতে হয়েছে মানুষদের।
প্রধানমন্ত্রী তাদের সেই রক্ত বৃথা যেতে দেননি। ক্ষমতায় আসার পরই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে এগিয়ে গিয়েছেন তিনি। টানা তৃতীয় মেয়াদের সময়ে পুরো দেশ আলোকিত হয়েছে। নতুন প্রজন্ম যাতে আর অতীতের অন্ধকারে নিমজ্জিত না হয় সেই প্রচেষ্টা চলছে।