বিভিন্ন ক্ষেত্রে আতঙ্ক উৎকণ্ঠা এবং অস্বস্তি বাড়ছে। আর এ সমস্ত কারণেই প্রধানমন্ত্রীর দিকেই তাকিয়ে আছে গোটা দেশ। প্রধানমন্ত্রী কি করবেন সেই সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় পুরো জাতি।
কারণ বাংলাদেশের যেকোনো সংকটে, দুর্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই ত্রাণকর্তা হিসেবে সামনে আসেন এবং তিনি একটি সংকট নিরসনের অভাবনীয় ফর্মুলা জাতির সামনে উপস্থাপন করেন, যে ফর্মুলার কারণে সংকট থেকে আমরা পরিত্রান পাই।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ইস্যুগুলো জনমনে উৎকণ্ঠা এবং অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এই ইস্যুগুলোর সমাধান একমাত্র প্রধানমন্ত্রী করতে পারেন বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। যে সমস্ত বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দিকে গোটা জাতি তাকিয়ে তার মধ্যে রয়েছে,
১. করোনা মোকাবেলা: বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ আবারও বাড়ছে। শুধু বাড়ছে না এটি উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনা পরিস্থিতি রীতিমত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
এই পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবেলার জন্য সরকার কি করবে তা নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনার ওপর। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই এ নিয়ে তার কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে তিনি খুব শিগগিরই জাতিকে একটি সুনির্দিষ্ট রূপরেখা দেবেন বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ প্রথম যখন বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হয়েছিল তখন প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায়ই বাংলাদেশ করোনা সংক্রমণকে লাগামের মধ্যে ধরে রাখতে পেরেছিল।
প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণতার কারণেই বাংলাদেশের করোনা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেনি। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনাগুলো দিয়েছিলেন যেমন প্রতিটি জেলায় কোভিড ইউনিট করা, আইসিইউ করা, সেই নির্দেশনাগুলো প্রতিফলিত হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশনাগুলি যদি প্রতিপালিত হতো তাহলে আজকের পরিস্থিতি অন্যরকম হতে পারতো।
২. টিকা সংকট: বাংলাদেশে গতকাল থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু এই টিকা প্রদানটি একটি সাময়িক ব্যবস্থা বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা এবং বিশ্লেষকরা। কারণ বাংলাদেশে গণটিকা চালু করার জন্য যে টিকার প্রবাহ দরকার সেই প্রবাহ এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হয়নি। চীনের টিকা কবে আসবে সেটি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ভাবে বলা বলা যাচ্ছে না।
সেরাম বাংলাদেশকে টিকা কবে দেবে সেটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। আর এসব কারণেই বাংলাদেশের জনগণ প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিভিন্ন সূত্র থেকে টিকা সংগ্রহের চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে একটি সুনির্দিষ্ট রূপ পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রী নিশ্চই জাতিকে জানাবেন এমন প্রত্যাশা করছেন দেশবাসী।
৩. স্থবির মন্ত্রিসভা: বর্তমান মন্ত্রিসভার অনেকে স্থবির এবং তারা বিতর্কিত ভূমিকা পালন করছেন। এদের কারণে সরকারের অনেক সাফল্য ম্লান হয়ে যাচ্ছে বলে বিভিন্ন মহল মনে করছেন। বিশেষ করে আমাদের করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা এবং কোনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর উদাসীনতা ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছে।
আর এ কারণেই অনেকে মনে করছেন যে বাজেট অধিবেশনের পর হয়তো প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের বড় ধরনের পরিবর্তন আনবেন। প্রধানমন্ত্রী আদৌ পরিবর্তন আনবেন কি আনবে না সেটা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন দেশবাসী। আর এটির ওপর নির্ভর করছে সরকারের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা এবং কর্মপন্থা।
৪. মধ্যবিত্ত মানুষের কষ্ট: গত দেড় বছরে সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রণোদনা দিয়েছেন। কিন্তু এইসব প্রণোদনার মধ্যেও মধ্যবিত্ত মানুষ কোন রকম সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আর এজন্য মধ্যবিত্তরা তাকিয়ে আছে প্রধানমন্ত্রী দিকে। মধ্যবিত্ত মানুষদের জন্য প্রধানমন্ত্রী কি করবেন সেটিই একটি দেখার বিষয়।
৫. অভিবাসীদের সমস্যা: বাংলাদেশে অভিবাসনে একটি নিরব ধ্বস নেমেছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশগুলো অভিবাসীদের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এরকম বাস্তবতায় অভিবাসীদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী কি দিকনির্দেশনা দেবেন সেটি অপেক্ষায় রয়েছে গোটা দেশ।
আর এই কারণেই সাধারণ মানুষ মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী নিশ্চই আমাদের অভিবাসন সংকট সমাধানের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা এবং দিকনির্দেশনা নিয়ে উপস্থিত হবেন।
বাংলা ইনসাইডার