বিডিনিউজ ডেস্ক: ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশ দেশের মানুষকে সেবা দিতে বদ্ধপরিকর।
আমরা প্রতিনিয়ত এ সংগঠনের মানোন্নয়নের জন্য কাজ করছি। পুলিশ সদস্যদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়ভাবে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার মাধ্যমে সবচেয়ে মেধাবীদের নির্বাচন করা হচ্ছে।
আমরা দীর্ঘ ৪০ বছর পর কনস্টেবল, সাব ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট পদের নিয়োগ বিধি সংশোধন করেছি। ইতোমধ্যে কনস্টেবল পদে ‘বেস্ট অব দি বেস্ট’ প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে।
আমরা মনে করি, পুলিশের চাকরি শুধু চাকরি নয়, সেবা। এজন্য আমাদের এবারের ট্যাগ লাইন হলো ‘চাকরি নয়, সেবা’। আমরা চাই পুলিশ বৈষম্যহীনভাবে দেশের মানুষকে সেবা দিবে।
পুলিশ সপ্তাহ ২০২২ উদ্বোধন করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান আইজিপি
দক্ষ পুলিশ সমৃদ্ধ দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে উদযাপিত পুলিশ সপ্তাহ ২০২২ এর দ্বিতীয় দিনে আইজিপি আজ (২৪ জানুয়ারি ২০২২) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে শিল্ড প্যারেড, ২০২০ ও ২০২১ সালের মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ও চোরাচালান দ্রব্য উদ্ধারে সাফল্য অর্জনকারী বিভিন্ন ইউনিটের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
পুলিশ সপ্তাহের প্রতিটি অধিবেশন স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনপূর্বক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশকে ২০৪১ সালের উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ হিসেবে গড়ে তুলতে কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
জঙ্গি ও মাদকের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আইজিপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছেন। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি বাস্তবায়ন করছি।
যখনই আমাদের দেশে জঙ্গিবাদ হানা দিয়েছে তখনই জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা তা দমন করেছি।
আইজিপি বলেন, বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অস্ত্র সম্পূর্ণ নির্মূল করতে হবে। তিনি বলেন, মাদক নির্মূলে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। যুব সমাজের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের দেশ মাদক উৎপাদন করে না।
কিন্তু আমরা কেন মাদকের শিকার হবো। যুব সমাজকে তা উপলব্ধি করতে হবে। যুবকদের উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ যুব সমাজকে হাতছানি দিচ্ছে। আমাদেরকে অবশ্যই মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে।
করোনাকালে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, করোনা অতিমারিতে পুলিশ এক মহাকাব্যিক ভূমিকা পালন করেছে।
নিজেদের জীবন বিপন্ন করে পুলিশ সদস্যরা জনগণের বাড়িতে ওষুধ পৌঁছে দেয়া, খাবার পৌঁছে দেয়া, কৃষকের ধান কাটার ব্যবস্থা করা, এমনকি করোনায় কেউ মারা গেলে যখন আত্মীয়-স্বজনরা লাশ ফেলে চলে গেছে তখন পুলিশ লাশ দাফন/সৎকার করেছে।
করোনাকালে ১০৬ জন পুলিশ সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। সাতাশ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশই আবার সুস্থ হয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করেছেন।
পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে আইজিপি বলেন, কোন পুলিশ সদস্য কোন ধরনের অনৈতিক কাজে জড়িত হলে তা বরদাশত করা হবে না।
আমরা পুলিশের প্রতিটি সদস্যের জন্য সামর্থ্য অনুযায়ী ন্যায়সঙ্গত ও ন্যয্য কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, আমরা খারাপ কাজের মাধ্যমে সংবাদ হতে চাই না, নিজেরা ভালো কাজ করে সংবাদের যোগান দিতে চাই।
তিনি অবৈধ অস্ত্র, মাদকদ্রব্য ও চোরাচালান দ্রব্য উদ্ধারে সাফল্য অর্জনকারী ইউনিটসমূহকে ধন্যবাদ জানান। অন্যান্য ইউনিটসমূহকেও এক্ষেত্রে আরও তৎপর হওয়ার আহবান জানান আইজিপি।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অতিরিক্ত আইজি (এঅ্যান্ডআই) ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী।
আইজিপি ২০২০ ও ২০২১ সালে বিভিন্ন অভিযানে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার, মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও চোরাচালানের মালামাল উদ্ধারে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।