21 C
Dhaka
Friday, November 22, 2024

পিএইচপি ফ্যামিলির বিরল দৃষ্টান্ত! ঈদের আগে ১১ বোনাস

চাকুরির খবর

গত বছর কর্মীদের জন্য ছয়টি বোনাসের ব্যবস্থা করে এ প্রতিষ্ঠান। মহামারির এ কঠিন দুর্যোগপূর্ণ সময়ে কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে আরেকবার উদার নিয়োগকারীর দৃষ্টান্ত স্থাপন করল চট্টগ্রামভিত্তিক বাংলাদেশী শিল্প প্রতিষ্ঠান পিএইচপি ফ্যামিলি। 

আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে এবং কর্মচারীদের ‘অনুপ্রেরণা ও সমর্থন দিতে’ এই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানটি এবার ১১টি বোনাস প্রদান করেছে।     

এগুলোর একটি নিয়মিত ঈদ বোনাস এবং বাকি দশটি কোভিড-১৯ এর বিশেষ বোনাসের আওতাভুক্ত- যা প্রতিটি কর্মীর বেসিক বেতনের সমান।

প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সুফি মুহাম্মদ মিজানুর রহমান কর্তৃক গৃহীত ‘কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি’র বিভিন্ন উদ্যোগ থেকে উৎসাহিত হয়েই এমন একটি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান মিজানুর রহমানের ছেলে এবং প্রতিষ্ঠানটির  বর্তমান পরিচালক মোহাম্মাদ আকতার পারভেজ।     

পারভেজ বলেন,  “আমাদের কাছে কর্মীদের সুস্থতার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। মহামারিতে তাদের মনোবল বাড়ানোর উদ্দেশ্যে আমরা এবার ১১টি বোনাস প্রদানের  মাধ্যমে আমাদের সহকর্মীদের  পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি”।   

তিনি বলেন, “আমাদের পিএইচপি ফ্যামিলির সহকর্মীরাও মহামারি পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী। যিনি মহামারির আগে বাসে করে অফিসে আসতেন, তাকে লকডাউন চলাকালীন পরিবহন সংকটের মধ্যে পড়ে অতিরিক্ত খরচ করে অফিসে আসতে হয়েছে”। 

মহামারির এ দুর্দিনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো যখন ব্যয় সংকোচনের উদ্দেশ্যে কর্মীদের ছাঁটাই এবং বেতনের অর্থ হ্রাস করছে সেখানেই  পিএইচপি ফ্যামিলি অনন্য ঔদার্যের পরিচয় দিল।  

অন্যান্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মতো, ২০২০ সালে দেশে করোনা মহামারির কবলে পিএইচপি ফ্যামিলিরও উল্লেখযোগ্য হারে বিক্রয় হ্রাস পায়। তবু গত বছর তারা কর্মীদের বেতন কর্তন করে নি ; এমনকি সেবারও কর্মীদের জন্য ছয়টি বোনাসের ব্যবস্থা করে এ প্রতিষ্ঠান।  

পিএইচপি কর্মীরাও এমন উদ্যোগে অত্যন্ত খুশি। তারা বলেন, কর্মক্ষেত্রে নিয়োগকর্তার এ ধরনের উদ্যোগ কাজের প্রতি তাদের আত্মবিশ্বাস এবং উৎসর্গ বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।   

প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ১০,০০০ জন কর্মী নিয়োজিত রয়েছে এবং তাদের মাসিক বেতনের পরিমাণ প্রায় ১১ কোটি টাকা।

পিএইচপি ফ্যামিলির অঙ্গপ্রতিষ্ঠান, পিএইচপি অটোমোবাইলস লিমিটেডের বিপণন প্রধান মেসবাহ উদ্দিন আতিক বলেন, “আমি এ মাসের ৪ তারিখেই বোনাস পেয়ে গেছি। আমরা এমন একটি প্রতিষ্ঠানের অংশ হতে পেরে গর্বিত যারা তাদের কর্মচারীদের সম্পর্কে চিন্তা করে এবং তাদের অবদানকে মূল্য দেয়”।  

“আমরা এ কোম্পানির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি”। 

মোটা আকারের এ বোনাস থেকে অনেকেই একটি টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে পরবর্তীতে বিনিয়োগ করতে পারবেন বলেও উল্লেখ করেন মেসবাহ।  

“কর্মক্ষেত্রে এখন একটি আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে। এই বোনাসগুলো কোম্পানির প্রতি আমাদের কাজের উৎসর্গ বাড়িয়ে তুলবে তাতে কোন সন্দেহ নেই”, যোগ করেন তিনি।  

পিএইচপি ফ্যামিলির ডেপুটি ম্যানেজার (জনসম্পদ) আবদুল মোমেন বলেন, “সমস্ত কর্মচারীদের বোনাস ৫ মে’র মধ্যেই পরিশোধ করা হয়ে গেছে”।  

তিনি বলেন, “গত বছর মহামারী চলাকালীন সময়েও – আমরা ইনক্রিমেন্ট পেয়েছি এবং কোনও বেতন কাটা হয়নি!  ভাল অনুশীলনই একটি প্রতিষ্ঠানকে গড়ে উঠতে সাহায্য করে এবং কর্মী-বান্ধব করে তোলে”। 

১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করে পিএইচপি ফ্যামিলি (পূর্বে পিএইচপি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ)। এটি ৩০টিরও বেশি অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত যারা স্টিল, ফ্লোট গ্লাস, অ্যালুমিনিয়াম, টেক্সটাইল, বিদ্যুৎ, পেট্রো শোধনাগার, আর্থিক পরিষেবা, কৃষি, অটোমোবাইল ইত্যাদির মতো বিভিন্ন খাতে জড়িত।  

গ্রুপটির বার্ষিক টার্নওভার পাঁচ হাজার কোটি টাকা। 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারির প্রথম ঢেউ চলাকালে পিএইচপি পরিবার ১০ হাজার মানুষের এক মাসের খাদ্য সহায়তা দিসেবে চাল, ডাল, আলু, তেল, পেঁয়াজ ইত্যাদি সামগ্রী বিতরণ করে। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলেও প্রতিষ্ঠানটি দুই কোটি টাকা অনুদান দেয়।

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর