মুনিয়ার মৃত্যু রহস্য নাটকীয় মোড় নিতে শুরু করেছে। এখন দেখা যাচ্ছে যে, মুনিয়া যে ফ্ল্যাটে থাকতেন সেই বিল্ডিং এ প্রবেশ করেছিল। এরা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন ফ্ল্যাটের কথা বলে ওই বিল্ডিংয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে যে, তারা সবাই শেষ পর্যন্ত মুনিয়ার ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন। এই চারজনকে প্রথমে আগন্তুক বা অন্য ফ্ল্যাটের অতিথি হিসেবে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু একটু বিশদ অনুসন্ধানে দেখা গেল যে এরা সবাই নুসরাতের বডিগার্ড।
মুনিয়া যখন ঢাকায় এসে একাকী বসবাস শুরু করেন তখন নুসরাতই তার বাসা ঠিক করে দেন এবং এই ১২০ নম্বর ফ্ল্যাটটি ছিল নুসরাতের নামে। নুসরাত এবং তার স্বামীর ভোটার আইডি কার্ড দিয়েই এই ফ্ল্যাটটি নেওয়া হয়েছিল।
এই ফ্ল্যাটে মুনিয়া একা থাকতেন। যাতে মুনিয়া যেন অন্য কারো সাথে না মেশে বা মুনিয়া যেন নুসরাতের নিয়ন্ত্রণের বাইরে না চলে যায় সে জন্য সবসময় মুনিয়াকে নজরদারিতে রাখতেন নুসরাত।
আর এই নজরদারির অংশ হিসেবে চারজন বডিগার্ড ছিল যারা মুনিয়াকে সবসময় দেখভাল করতো, নজরদারি করতো। এদের মধ্যে একজন মুনিয়ার বাজার ঘাট ইত্যাদি করে দিত। একজন মুনিয়ার গাড়ির সঙ্গে থাকতো। আর বাকি দুইজন বিভিন্ন সময় মুনিয়ার বাসায় গিয়ে তার খোঁজখবর নিতেন। এই চারজনের সঙ্গেই নুসরাত তানিয়ার ছবি পাওয়া গেছে।
যাতে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এরা নুসরাত তানিয়ার পূর্ব পরিচিত এবং নুসরাত তানিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এবং এরাই ২৫ এপ্রিল রাতে এই বিল্ডিং এ গিয়েছিলেন বিভিন্ন ফ্ল্যাটের কথা বলে।
এরা এতো চতুরতা সঙ্গে ওই বিল্ডিংয়ে গিয়েছিলেন যে তারা অতিথি রেজিষ্ট্রার বুকে তাদের নাম নিবন্ধন করেননি। ধারণা করা হচ্ছে যে একটা অপকর্ম করার জন্যই তারা এই এভাবে নিবন্ধন না করে গিয়েছিলেন। সিসিটিভি ফুটেজের তাদের যাওয়ার দৃশ্য দেখা গেল তারা কখন বেরিয়েছেন সেটা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট করা যায়নি।
এ থেকে মনে করা হচ্ছে যে, একটি সুনির্দিষ্ট দুরভিসন্ধি থেকে নুসরাত তাদেরকে পাঠিয়েছিলেন। এটির আরেকটি প্রমাণ পাওয়া যায় নুসরাতের টেলিফোন কল। নুসরাত কুমিল্লা থেকে ঢাকা আসার পথে ১৭ বার মুনিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন। আর কথা বলার ফাঁকে ফাঁকে তিনি এদের অন্তত দু`জনের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেছেন।
জানা যায় যে যখন প্রথম দফায় ঢাকায় বসবাসের পর অর্থকষ্টে থাকা মুনিয়া যখন কুমিল্লায় ফিরে যান তখন নুসরাত নতুন ফন্দি আঁটেন এবং মুনিয়াকে ব্যবহার করে তার যে অর্থ উপার্জন সেটি যেন অব্যাহত থাকে সেজন্য মুনিয়াকে আবার ঢাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন।
এই সময়ে মুনিয়ার যে মূল অভিভাবক ছিল ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট তিনি কারাগারের চলে যান। ফলে মুনিয়া চারজন ব্যক্তিকে মুনিয়ার দেহরক্ষী বা তার নজরদারি করার জন্য ব্যবহার করেন। এই চারজনই সর্বশেষ গিয়েছিল মুনিয়ার ফ্ল্যাটে এটা মোটামুটি অনুসন্ধানের নিশ্চিত হয়েছে। এখন প্রশ্ন হল যে, নুসরাত কেন তাদেরকে পাঠিয়েছিলেন।
তাহলে কি মুনিয়া এমন কিছু বলতে চেয়েছিলে যেটিতে নুসরাতের সঙ্গে তার সম্পর্ক খারাপ হয়? বা মুনিয়া কি নুসরাতের কোনো কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল? সেজন্যই তাকে এই পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে। এটি এখন তদন্তের অন্যতম উপজীব্য বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার