লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: ১৫০ টি দেশ ভ্রমন করা দেশের একমাত্র নারী নাজমুন নাহার লক্ষ্মীপুর জেলার কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিম সভা মিলিত হয়।
(সোমবার) বিকেলে দুপুরে সদর উপজেলার দালাল বাজার খোয়াসা দিঘির পাড় এলাকায় শিল্পাঙ্গণে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় নাজমুন নাহার সাংবাদিকদের বলেন, নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে, অনেক মানুষ অর্থ উপার্জন করে গাড়ি বাড়ি, দামি জিনিসপত্র ক্রয় করে কিন্তু আমি তা না করেই উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঘুরেছি প্রথিবীর ১৫০ রাষ্ট্রে।
ভ্রমন কালে বিশ্বে বিভিন্ন রাষ্ট্রে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেছি। ছেলের পাশাপাশি মেয়েরা ইচ্ছা করলেই অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারে আমি সেটাই প্রমাণ করেছি।
৬ অক্টোবর ২০২১ বিশ্বের ১৫০তম দেশ হিসেবে ‘সাওটোমে অ্যান্ড প্রিন্সিপ’ ভ্রমণের মাধ্যমে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক সৃষ্টি করেন। খুব শিঘ্রই জাতিসংঘ স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ১৯৭ টি দেশ ভ্রমণ করবো।
ভ্রমন করেছি তা সবার সামনে তুলে ধরনে চাই। মন থেকে খারাপ চিন্তা সরাতে হবে। ১৫০ টি রাষ্ট্রে ভ্রমন কালে বেশ কয়েকবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি আড়াই দিন কোন ধরনের আহার ছাড়া ঘুরেছি বন জঙ্গলে তবুও হাল ছাড়েনি যদি ভ্রমনে মৃত্যু হতো তা গ্রহন করতাম।
ভ্রমন যেমন কষ্টকর তেমনি আনন্দ রয়েছে। ২১ বছর ভ্রমনে আমার প্রিয় মা কে নিয়ে ১৪ দেশ ভ্রমন করেছি। অনেক রাষ্ট্রে একা ঘুরেছি পথে পথে কিছু ভ্রমনকারী আমাকে অনেক সহযোগীতা করেছে। ভ্রমনকালে দেখেছি মানুষ অনেক দয়ালু।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের নন্দনপুর গ্রামের নাজমুন নাহারের পিতা: মোহাম্মদ আমিন একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ছিলেন, মা তাহেরা আমিন একজন গৃহিনী! আট ভাই বোনের মধ্যে আমি নাজমুন নাহার পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে ছোট।
নাজমুন নাহার আরও বলেন সুইডেনের লুন্ড ইউনিভার্সিটিতে যখন আমি স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে যাই ২০০৬ সালে তখন থেকেই পড়াশুনার পাশাপাশি পার্ট টাইম জবের মাধ্যমে আমার ইনকাম শুরু হয় এবং আমি প্রতি মাসেই ভ্রমণের জন্য আলাদা করে টাকা জমাতে থাকি, যখনি সময় পেতাম অজানা কোনো এক শহরে চলে যেতাম কখনো একা, কখনো বন্ধুদের সাথে, কখনো কনফারেন্স পারপাস ভ্রমণ হতো
একা ভ্রমণ করলেও কখনোই নিজেকে একা মনে হতো না কোনো দেশে গেলে আমি সবসময় ট্রাভেলার্স ইয়ুথ হোস্টেলে থাকতাম, সেখানে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ট্রাভেলার্সদের সাথে পরিচয় হতো, তাদের সাথে বন্ধুত্ব হতো।
পৃথিবীর প্রকৃতিকে যেমনি জানতাম দেখতাম, তেমনি ভিন্ন দেশ থেকে আশা মানুষগুলোকে কাছ থেকে জানার এবং তাদের অভিজ্ঞতার কথা শুনার সুযোগ হতো কখনো কখনো তাদের সাথে ভিড়ে পাহাড়ে এডভেঞ্চার, সমুদ্রে ভ্রমণ, এক শহর থেকে আরেক শহরে যাত্রা হতো এইভাবেই পৃথিবীর আনাচে কানাচে আমার ভালো বন্ধু হয়।
যারা প্রকৃতির মতোই সুন্দর যে শহরে একা যেতাম সেই শহরের ইয়ুথ হোস্টেল থেকে এবং ট্রাভেল এজেন্সী থেকে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলোতে ট্যুরর ব্যবস্থা থাকতো সেইগুলো খবর নিয়ে তাদের সাথে যুক্ত হয়ে ভ্রমণ করতাম বেশিরভাগ সময়ই আমি একা ভ্রমণ করেছি এই জন্য যে পথে হারিয়ে যেয়ে যেন নতুন পথের সন্ধান পাই, নতুন মানুষের সাথে যেন পরিচয় হয় এই ভাবেই এশিয়া, ওশেনিয়া, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, নর্থ আফ্রিকা, আরবের ভিবিন্ন দেশের জিওগ্রাফি, ইতিহাস, প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও মানুষের সাথে মিশে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিলো আমার।