দেশব্যাপী সাত দিনের লকডাউনের তৃতীয় দিন বুধবার গণপরিবহন পুনরায় চালু হওয়ায় ঢাকার রাস্তায় যানজট দেখা গেছে।
যাত্রীদের দুর্ভোগের কারণে সরকার প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়।
এই শিথিলতা গণপরিবহনের অভাবে গত দু’দিন ধরে ভোগান্তিতে থাকা যাত্রী, বিক্রেতা, ব্যবসায়ী ও খুচরা বিক্রেতাদের জন্য এক ধরণের স্বস্তি এনেছে।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এটিই ভালো! এর ফলে আমরা সহজেই চলাচল করতে পারছি। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এখনও একটি সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। লোকজন এখনও তা মানছে না।’
তবে, তিনি বলেন, গণপরিবহন আবার চালু হওয়ার সাথে সাথে ঢাকায় যানবাহনের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম হলেও আগের ট্র্যাফিক বিশৃঙ্খলা ও শব্দদূষণ ফিরে এসেছে।
রাস্তায় গণপরিবহন তুলনামূলকভাবে কম হলেও মগবাজার, বনানী ও গুলিস্তান এলাকায় যানজট দেখা যায়।
যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক উত্তর) আবু সালেহ শেখ রাসেল বলেন, ‘আন্তঃনগর বাস বুধবার সকালে পুনরায় কার্যক্রম শুরু করে তবে বাসের সংখ্যা কম। যাত্রী কম থাকায় মালিকরা খুব সীমিত সংখ্যক বাস বের করেছেন।’
ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (মহাখালী) আসাদুজ্জামান বলেন, ‘নগরীতে সীমিত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে সকাল থেকেই বাস চলাচল করছে। সরকার রাইড শেয়ারিং সার্ভিস বন্ধ করায় এখনও যারা এই সার্ভিস দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করছি।’
তিনি বলেন, ‘লোকজন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করছে কিনা তাও আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।’
আলাপকালে আলিফ পরিবহনের ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে ৬০ শতাংশ বাস চালাচ্ছি। অন্যসময়, চারটি রুটে ২০০টি বাস চলাচল করে। যাত্রী সংখ্যা কম থাকায় এবং দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় আমরা এখন ৬০ শতাংশ বাস রাস্তায় নামিয়েছি।’
তবে বাস সার্ভিস পুনরায় চালু করায় রাজধানীর অফিসগামী যাত্রী ও অন্যান্য যাত্রীদের দুর্ভোগ স্পষ্টতই হ্রাস পেয়েছে।
বুধবার কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা নতুন করে বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধি ও লকডাউন মেনে চলার ক্ষেত্রে জনগণের অনীহা দেখা গেছে।
মালিবাগ এলাকায় রেললাইনের পাশে কাঁচাবাজারে সাধারণ মানুষের ভিড় দেখেন যেন ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এই কাঁচাবাজারে সবজি বিক্রেতা সজল বলেন, ‘আজ অনেক ক্রেতা আসায় ব্যবসা আবার আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে।’
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হওয়ায় কঠোরভাবে লকডাউন কার্যকর না করা হলে করোনভাইরাসের সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে।
বেশিরভাগ হাসপাতাল রোগীতে পরিপূর্ণ থাকায় অনেক রোগী ভর্তি হতে বা অক্সিজেনের জন্য এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে যেতে থাকেন।
প্রাইভেটকার, রিকশা ও অটোরিকশা, মাইক্রোবাস এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং অনেক রাইড শেয়ারিং সার্ভিস আগের দু’দিনের মতো রাস্তায় চলাচল করতে দেখা গেছে।
সরকারি নির্দেশনা অনুসারে শহর জুড়ে শপিংমল বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট দোকান খোলা দেখা গেছে।
ইউএনবি