এক মাসের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে রয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। এভারকেয়ার হাসপাতাল এখন তিনি সিসিইউতে রয়েছেন তাও বেশ অনেকদিন হবে।
কিন্তু প্রথম দিকে বিএনপি নেতারা তার খোঁজ-খবর নিলেও এখন যোগাযোগই বন্ধ করে দিয়েছেন। বিএনপির কোন নেতাকে গত এক সপ্তাহে এভারকেয়ার হাসপাতাল দেখা যায়নি।
বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বেগম জিয়া যেহেতু সিসিইউতে আছেন তার সাথে দেখা করার সুযোগ নেই। তারা চিকিৎসকের মাধ্যমে খোঁজখবর নিচ্ছেন।
কিন্তু বিএনপির প্রধান নেতা অসুস্থ অথচ বিএনপির নেতারা এভারকেয়ার হাসপাতালের চৌহদ্দিতে যান না এটি বিস্ময়কর মনে করছেন অনেকে।
চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকের নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দুই-তিনদিন পরপর টেলিফোনে খোঁজখবর নেন, এইটুকুই।
তবে বেগম জিয়া ছোট ভাই, বোন এবং অন্যান্য আত্মীয়রা নিয়মিত এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে যাচ্ছেন এবং সারাক্ষণই থাকছেন।
এভারকেয়ার হাসপাতাল সূত্রগুলো বলছে যে, শামীম ইস্কান্দার এবং সেলিনা ইসলাম পালাক্রমে সকাল-বিকাল থাকছেন এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে অসুস্থতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন।
কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া বিএনপি চেয়ারপারসন। এই অসুস্থতায় বিএনপি নেতাকর্মীরা কোথায় সেই প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি যে সমস্ত বিএনপি পন্থী চিকিৎসক রয়েছেন তারাও প্রথম দিন হাসপাতালে গেল এখন এভারকেয়ার হাসপাতালে তাদের যোগাযোগ নেই বললেই চলে। এ রকম বাস্তব বিএনপি কি বেগম খালেদা জিয়াকে ভুলে গেল কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে।
তবে বিএনপির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন যে, বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা চান না যে নেতাকর্মীরা এখানে ভিড় করুক।
তারা বলছেন যেহেতু বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার একটা চেষ্টা চলছে, এই অসুস্থতার যদি রাজনৈতিককরণ করা হয় এবং নেতাকর্মীরা যদি হাসপাতালে ভিড় করেন তাহলে সেক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ব্যাহত হতে পারে। তাছাড়া পরিবারের সূত্র বলছে, তারাও নিরুৎসাহিত করছেন বিএনপি নেতৃবৃন্দকে। কারণ, হাসপাতালে বেশি ভিড় হলে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে।
তবে এই সবকিছুর বাইরে প্রধান প্রশ্ন উঠেছে যে, দলের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা অসুস্থ আর নেতাকর্মীরা তাকে তার খোঁজখবর নিতে যাবেন না এটা কি করে হয়।
বেগম খালেদা জিয়াকে যখন ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল তখন দেখা গেল যে, নেতাকর্মীদের উল্লাস এবং নেতাকর্মীদের ভিড়।
করোনা সংক্রমণের সেই সময়টাতে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই তারা মিছিল, স্লোগান করেছিল। অর্থাৎ সুসময়ে বিএনপি খালেদা জিয়ার পাশে থাকে, দুঃসময়ে তাকে ভুলে যায়।
এমনকি বেগম খালেদা জিয়া যখন কারাগারে ছিলেন তখনও বিএনপির কয়জন নেতা তার খোঁজ-খবর নিয়েছেন সেই প্রশ্ন উঠেছে।
বাংলা ইনসাইডার