হুমায়ূন আহমেদের এমন কোনো নাটক নেই, যেখানে ডাক্তার এজাজুল ইসলামের পদচারনা ছিল না। সকল ধরণের চরিত্রেই মানিয়ে যেতেন তিনি।
তাকে দেখে মনেই হতো না চিকিৎসার মতো এমন মহান একটি পেশায় তিনি নিয়োজিত আছেন। যেন আজন্ম সাধের মতো অভিনেতা হিসেবেই তার জন্ম। হুমায়ূন আহমেদ রত্ন চিনতে একদমই ভুল করেননি।
পেশায় চিকিৎসক এজাজুল ইসলামকে তিনি ধরেবেঁধে তৈরি করেছিলেন অভিনেতায়। আজ হুমায়ূন আহমেদ নেই। তবুও এজাজুল ইসলাম দোর্দণ্ড প্রতাপের সাথে রাজত্ব করে যাচ্ছেন নাট্যাঙ্গনে। প্রাণবন্ত অভিনয় ও হাস্যরসের মাধ্যমে জুগিয়ে চলেছেন বিনোদন।
কেবল অভিনয়ই নয়, পেশাগত দিকেই তার প্রাপ্তি অবাক করে দেবার মতো। ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউক্লিয়ার মেডিসিনের সাবেক প্রধান ছিলেন তিনি। একজন ভালো মানুষ হিসেবেই তার পরিচিতি সর্বত্র বিরাজমান।
লোকে তাকে চেনে গরীবের ডাক্তার হিসেবে। ২০২১ সালে এসেও তিনি তার চিকিৎসার ফি এতটুকু পরিমাণ বাড়াননি। নতুন রোগী হলে ফি নেন ৩০০ টাকা, পুরোনো হলে ২০০ টাকা। আর গরীব রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করে থাকেন।
শুধু চিকিৎসা গ্রহণের জন্যই নয়, একপলক এই মানুষটিকে দেখার জন্য হলেও মানুষের ভিড় লেগে থাকে তার চেম্বারে। দেখলে মনে হয় সেখানে যেন ভোজের আয়োজন করা হয়েছে।
চিকিৎসা যে একটি মহান পেশা, সেটি দিনের পর দিন মানুষের কাছে প্রমাণ করে যাচ্ছেন। বাস্তব জীবনেও খুবই সরল জীবনযাপন করে থাকেন। সম্পদের বড়াই কিংবা ধনাঢ্য জীবনযাপনে তিনি একেবারেই নারাজ।
কেবল নিজের কাজটুকু মনপ্রাণ ঢেলে করে থাকেন, দিয়ে থাকেন নিজের সেরাটুকু। টেলিভিশনের পর্দায় হাস্যরসে দর্শক মাতিয়ে রাখলেও বাস্তব জীবনে একেবারে চুপচাপ। রোগী যতক্ষণ না নিজের সমস্যা সবিস্তারে বর্ণনা করছে, ততক্ষণ চুপ করে শুনবেন তিনি সমস্যা।
বাংলাদেশের রত্নগুলো তো আসলে এমনই হওয়া উচিত, তাই না? যারা এজাজুল ইসলামের মতো নিবেদিতপ্রাণ হবেন। মনপ্রাণ ঢেলে পালন করে যাবেন নিজের দায়িত্বটুকু।
এই মহান চিকিৎসক, অভিনেতার জন্য অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা জানাই।