গত ২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে আত্মহত্যা করেন মোসারাত জাহান মুনিয়া। মুনিয়ার মৃত্যুর পরপরই তার বড় বোন নুসরাত তানিয়া আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে করা সেই মামলাটির তদন্ত এখন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আর এই সময় বেরিয়ে আসছে নানা ধরনের তথ্য। এই মামলায় বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, তদন্তে এখন পর্যন্ত আত্মহত্যার প্ররোচনার কোন অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
বরং তদন্তে মুনিয়ার উশৃঙ্খল জীবন যাপন সম্পর্কে নানা তথ্য এখন উঠে আসছে। এরই মধ্যে মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত তানিয়া সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেছেন যে, মুনিয়া অবাধ্য ছিল। তাকে তারা আটকাতে পারে নি।
কিন্তু মুনিয়ার এই অবাধ্য হওয়ার পেছনেও নুসরাতেরই হাত ছিল। নুসরাতের অতিলোভের কারণে মুনিয়ার খারাপ জগতে প্রবেশ করছে বলে অভিযোগ করছেন মুনিয়ার ভাই সবুজ।
মুনিয়াকে মূূলত তার বড় বোন নুসরাত তানিয়া ঢাকায় নিয়ে আসে। সেখানে অনেক ধনাঢ্য লোকেদের সঙ্গে মুনিয়াকে পরিচয় করিয়ে দেন নুসরাত। এরপর থেকেই মূলত মুনিয়া বেপরোয়া আচরণ করা শুরু করে। নুসরাত বিভিন্ন সময় মুনিয়াকে ব্যবহার করতেন।
মুনিয়াকে অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতেন। আর এ কারণেই বিভিন্ন সময় মুনিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করতেন নুসরাত। চাচা থেকে শুরু করে পরিবারের সবার অসন্তোষ নুসরাতের প্রতি। এই পরিবারের এমন অবস্থার জন্য তারা নুসরাতকে দায়ী মনে করেন।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অনেকের কাছের মুনিয়া দায়বদ্ধ ছিলেন। এ কারণে মুনিয়ার সঙ্গে অনেক ছেলের সম্পর্ক ছিল। মুনিয়া যে বাসায় থাকতেন সেই বাসার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, মুনিয়ার কাছে বিভিন্ন লোকজনের অবাধ যাতায়াত ছিল।
অনেকেই মুনিয়ার কাছে যেতেন। এ অবস্থায় একটি প্রশ্ন ওঠে কার প্রেমে পরেছিলেন মুনিয়া? এসব বিষয় নুসরাত খুব ভালো করেই জানতেন।
সে এখান থেকে ফায়দা লুটতেন এবং নিজের বিলাসী জীবন যাপন করতেন। জানা গেছে, মুনিয়ার মৃত্যুর কিছুদিন আগেও মুনিয়ার কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন নুসরাত এবং সেই টাকা দিয়ে নুসরাত তার বিবাহবার্ষিকী পালন করেন।
নুসরাত যে এলাকায় থাকেন সেই এলাকায় এক রকম ওপেন সিক্রেট ছিল যে, মুনিয়ার টাকাতেই নুসরাত চলত।
মুনিয়ার প্রেমের অনেক খবর পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে হুইপ পুত্র শারুনের সঙ্গে মুনিয়ার নানা চ্যটিং, টাকা লেনদেন এর বিষয়।
মুনিয়ার বিভিন্ন চলচ্চিত্র প্রযোজকদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। এছাড়াও বিভিন্ন ধনাঢ্য ব্যক্তিদের প্রেমের ফাঁদে ফাঁসাতো মুনিয়া। পেছন থেকে কলকাঠা নারতো নুসরাত।
পিয়াসা, পাপিয়ার সঙ্গে মুনিয়াকে পরিচয়ও করে দিয়েছিলেন নুসরাত। সকল পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে সব কিছুতে নুসরাতের লোভ লালসা ছিল।
মুনিয়ার ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র বলছেন যে, মুনিয়া নিয়মিত মাদক সেবন করতেন এবং বিভিন্ন ধরনের মাদকের তিনি আসক্ত ছিলেন।
আর মাদকের সঙ্গে সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কেও আসক্তির সৃষ্টি হয়েছিল মুনিয়ার। আর তাই প্রেমের মাধ্যমেই টাকার উপার্জন করেছেন মুনিয়া। আর সেই টাকায় চলেছেন নুসরাত তানিয়া।
ফুর্তির জীবন যাপন করেছেন। এখন সবার মনে প্রশ্ন উঠছে আর কত মানুষের সঙ্গে মুনিয়াকে সম্পর্ক করিয়েছিল নুসরাত? নাকি কারো প্রেমে পরেছিল মুনিয়া। তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলছেন, তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলেই সব বিষয়ে বলা সম্ভব হবে।
বাংলা ইনসাইডার