ঈদের পর সরকারের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ

0
140

করোনা মোকাবেলা, অর্থনৈতিক সংকট এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের আন্দোলন এই ত্রিমুখী সঙ্কট মোকাবেলা করতে হবে সরকারকে ঈদের পর।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন ঈদের পর সরকারের জন্য একটি মোটামুটি কঠিন চাপ আসছে এবং একটু কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। গত ১২ বছরের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে।

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংকট এবং চড়াই-উৎরাই আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সাহস এবং দক্ষতার সঙ্গেই পার করেছে। কিন্তু এবারের চ্যালেঞ্জের মাত্রা ভিন্ন এবং এই চ্যালেঞ্জের সঙ্গে নানামুখী ষড়যন্ত্রও রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করে কিভাবে সরকার এগুবে সেটি দেখার বিষয়। তবে সরকারের দায়িত্বশীল সূক্রগুলো বলছেন যে, শেখ হাসিনার ম্যাজিক, নেতৃত্ব এবং তার দূরদর্শিতায় অতীতে বিভিন্ন সংকট সরকার কাটিয়ে উঠতে পেরেছে, আগামীতেও পারবে। সরকারের সামনে ঈদের পরপরই যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো আসছে তার মধ্যে রয়েছে,

১. স্বাস্থ্যগত চ্যালেঞ্জ: করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। চলতি ঈদের মধ্যেই করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসবে এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। বরং পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে তাতে আরো খারাপ হতে পারে।

এখনই হাসপাতালগুলোতে কোনো জায়গা খালি নেই, আইসিইউ বেড খালি নেই। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যে অন্যান্য রোগের যে চিকিৎসা, সেটিও ব্যাহত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে ঈদের পর এক ধরনের জনঅসন্তোষ এবং চাপ তৈরি হবে। স্বাস্থ্য খাতে যে সংকট সেই সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে সরকারকে 

২. অর্থনৈতিক সংকট: সামনে বাজেট। আর মানুষের অর্থনীতির দুরবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। সরকার নিজেও ধার-দেনা করে চলছে। বৈদেশিক আয় কমে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। মানুষের দেশে বেকারত্ব বাড়ছে।

বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো এক ধরনের সংকট এবং চাপের মধ্যে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সামনে সরকারকে কঠিন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন যে, দরিদ্র এবং নিম্ন আয়ের মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা সরকারের জন্য এক ধরনের অগ্নিপরীক্ষার মতো।

এই পরিস্থিতি সরকার কিভাবে সামাল দেবে সেটাই দেখার বিষয়। তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, শুধু ক্ষুদ্র-মাঝারি আয়ের মানুষ না পুরো অর্থনীতির ওপরে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। গত এক বছরের বেশি সময় রেমিটেন্স প্রবাহ বাংলাদেশকে করোনা সংকট বুঝতে দেয়নি। রেমিটেন্স প্রবাহের কারণেই বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে তেমন মুখ থুবরে পড়ে নি।

কিন্তু সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর সামনে বাজেট রয়েছে এবং এই বাজেটে বড় বড় প্রকল্পগুলোকে সচল রাখা যেমন সরকারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তেমনি মানুষের জীবন যাপনকে স্বাভাবিক রাখা এবং অর্থনৈতিক দুরবস্থা দূর করাও সরকারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। 

৩. রাজনৈতিক আন্দোলন: সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়েছে রাজনৈতিক আন্দোলন এবং ষড়যন্ত্র। বিশেষ করে ঈদের আগে সরকার হেফাজতের বিরুদ্ধে যেভাবে সার্জিক্যাল অপারেশন পরিচালনা করছে সেই অপারেশনের পরিণতি কি সেটা বুঝতে গেলে ঈদের পর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

হেফাজত একা নয়, হেফাজতের সঙ্গে রাজনীতিতে ষড়যন্ত্রকারী বিভিন্ন গোষ্ঠী, ব্যক্তি এবং সম্প্রদায়ের যুক্ত রয়েছে বলেই জানা গেছে। এর কারণে হেফাজতকে উস্কে দেওয়ার জন্য দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো যে কাজ করবে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। তাছাড়া হেফাজতও তাদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার জন্য চেষ্টার ত্রুটি করবে না সেটিও বলা যায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে ঈদের পর হেফাজত একটা মরণ কামড় দিতে পারে এমন শঙ্কা করছেন কেউ কেউ। 

আর এই তিন কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সরকারকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। কারণ গত ১২ বছরের বেশি সময় দেখা গেছে যে, সরকারের জন্য যে সংকটগুলো আসে সেই সংকটগুলো প্রায় একাই সামলান প্রধানমন্ত্রী। এবার তিনি কিভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেন সেটাই দেখার বিষয়।

বাংলা ইনসাইডার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here