আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কোনও দিন দুর্ভিক্ষে বা না খেয়ে কেউ মারা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২১ উপলক্ষে রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হলে ‘করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠান তত্ত্বাবধানে ছিল মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগ।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির সময় দেশে খাদ্য সংকট লেগেই থাকতো। প্রতিবছর আশ্বিন-কার্তিক মাস এলেই উত্তরবঙ্গে মঙ্গা দেখা দিতো। দুর্ভিক্ষ হতো, মানুষ খেতে পেতো না। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০০৯ সাল থেকে বিগত ১৩ বছরে মানুষ না খেয়ে আছে, খাবারের কষ্ট করছে ও না খেয়ে মারা গেছে—এমন একটি নজিরও নেই।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এমন একটি রাজনৈতিক দল যেটি ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক, সবসময় মানুষের পাঁশে থাকে। এ সরকারের আমলে খাদ্য নিরাপত্তায় অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হয়েছে। বাংলাদেশে আর কোনও দিন দুর্ভিক্ষে কেউ মারা যাবে না।’
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সহ-সভাপতি সাদেক খান এমপি, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা, মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সাত্তার ও সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মিয়াচান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে সকালে কৃষিমন্ত্রী জাতীয় শোক দিবস ২০২১ উপলক্ষে দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর কৃষি ভাবনা: আগামীর চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনজুড়ে কৃষক, কৃষির উন্নয়ন ও কল্যাণ নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন। তাই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরপরই বাংলার চির দুঃখী ও নির্যাতিত কৃষক ও চাষির উন্নয়নে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত ও উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
বঙ্গবন্ধু কৃষি উন্নয়নের যে ভিত্তি রচনা করেছিলেন সেটিকে অনুসরণ করে, সে ভিত্তির ওপর ভর করে, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ক্রমাগতভাবে কৃষিবান্ধব নীতি গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এর ফলেই কৃষি উৎপাদন ও উন্নয়নে আজ বিস্ময়কর সাফল্য এসেছে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘কৃষিতে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ হলো কৃষিপণ্যের বিপণন। কৃষিকে লাভজনক ও কৃষকের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিতে কৃষিপণ্যের বিপণন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশে বিদেশে কৃষিপণ্যের বাজার বৃদ্ধি করতে না পারলে কৃষিতে যে উন্নয়ন হয়েছে তা টেকসই হবে না। সেজন্য কৃষি প্রক্রিয়াজাত ও বাজারজাত বৃদ্ধিতে কৃষি শিল্পায়নে এগিয়ে আসতে হবে।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, এফবিসিসিআইর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, প্রাণ-আরএফএলের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘করোনাকালে অর্থনৈতিক মন্দায় রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করেছে শক্তিশালী কৃষি খাত।’