22 C
Dhaka
Saturday, November 23, 2024

আজ শেখ হাসিনার রাষ্ট্রনায়ক হয়ে ওঠার সেই দিন

বিডিনিউজ ডেস্ক

চাকুরির খবর

১৬ জুলাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ২০০৭ সালের এই দিনে তৎকালীন অনির্বাচিত সরকার একটি মিথ্যা মামলায় শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করেন।

১৬ জুলাই মধ্যরাতের পর সুধাসদন ঘেরাও করা হয় এবং বর্বরোচিত কায়দায় শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সকালবেলা তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সিএমএম আদালতে।

সেখান থেকে তাকে জাতীয় সংসদে হুইপদের একটি বাড়িতে রাখা হয় এবং বাড়িটিকে সাবজেল ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ওয়ান-ইলেভেন ছিল বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়ার একটি মাইলফলক সময়।

সুশীল সমাজ এবং সামরিক-বেসামরিক গোষ্ঠী বাংলাদেশের রাজনীতিকে নির্বাসনে পাঠানোর জন্য যে নীল নকশা গ্রহণ করেছিলো সেই নীল নকশা বাস্তবায়ন করা হয় ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের মাধ্যমে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেই বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়া শুরু করে এবং রাজনীতিবিদদের চরিত্র হরণের খেলায় মাতে। সেনা সমর্থিত ড. ফখরুদ্দীন আহমদের সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে বলেন এবং গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে দিতে বলেন।

যদিও সে সময়ে আওয়ামী লীগের দলের মধ্যে থেকেই প্রতিবাদ হয়েছিল, শেখ হাসিনা তখন ছিলেন একরকম সংখ্যালঘু। কিন্তু শেখ হাসিনার বক্তব্য যে সঠিক এবং তার বক্তব্য যে জনগণের কণ্ঠস্বর সেটি তিনি প্রমাণ করেন।

একজন রাজনৈতিক নেতাকে যখন হয়রানি করা হয় তখন তার জনপ্রিয়তা বাড়ে, তখন তিনি অবিসংবাদিত নেতাও পরিণত হন। যেমন ছয় দফা ঘোষণার পর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু করেছিল এবং তার আপোষহীন ভূমিকাই তাকে জাতির পিতা বানিয়েছিল।

ঠিক তেমনিভাবে গণতন্ত্র, নির্বাচন এবং রাজনীতির পক্ষে শেখ হাসিনার কঠোর অবস্থানের জন্য তৎকালীন বিরাজনীতিকরণের সরকার তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল। কিন্তু এই গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনি মনোবল হারাননি। বরং তিনি তিল তিল করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য কাজ করেছেন।

এই সময়ে শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত রাজনৈতিক অনুসারীরা যেমন প্রয়াত জিল্লুর রহমান, প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন যেমন আওয়ামী লীগকে অখণ্ড ঐক্যবদ্ধ রেখেছে তেমনি আওয়ামী লীগের তৃণমূল শেখ হাসিনার মুক্তি এবং গণতন্ত্রের জন্য ঐক্যবদ্ধ থেকেছে।

আর এর ফলেই শেখ হাসিনা ১১ মাস কারাভোগের পর মুক্তি পেয়েছেন। তার মুক্তির মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের নব যাত্রার সূচনা হয়েছে।

এই গ্রেপ্তার শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রনায়কে পরিণত করেছে। শেখ হাসিনা এই গ্রেপ্তারের পর তার মনোবল হারাননি। বরং গণতন্ত্র, মানবিক মূল্যবোধ, মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলেছেন। জনগণ তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং দলে যারা সংস্কারবাদী, সুবিধাবাদী এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গুণগ্রাহী ছিলেন তারা কোণঠাসা হয়েছেন।

ওয়ান-ইলেভেনের পর শেখ হাসিনাই আওয়ামী লীগের একচ্ছত্র এবং একক নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। শেখ হাসিনাই বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন এবং সারাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগ করুক, না করুক তারা পর্যন্ত শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দৃঢ়তা এবং গণতন্ত্রের প্রতি তার দায়িত্ববোধকে প্রশংসা করেন।

সেই কারণেই শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হন এবং সেই বিজয়ের ধারায় ১২ বছর ক্ষমতায় আছেন। ১৬ জুলাই শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবনের এক নতুন অধ্যায় সূচিত হয় এবং এই অধ্যায় তাকে রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে উদ্ভাসিত করে।

বাংলা ইনসাইডার

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর