ঢাকাই চলচ্চিত্রের এ প্রজন্মের চিত্রনায়িকা অধরা খান। এরই মধ্যে অধরা নিজের রূপ-সৌন্দর্য আর প্রতিভার কল্যাণে চলচ্চিত্র দর্শকদের মাত করেছেন।
তাই অধরা এখন ঢালিউড চলচ্চিত্রের চলতি প্রজন্মের দর্শকপ্রিয় নায়িকা। নিজের অভিনীত ‘নায়ক’, ‘মাতাল’ ও ‘পাগলের মতো ভালোবাসি’ সিনেমাগুলো দিয়ে অধরা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
মুক্তি পাওয়া এসব সিনেমায় নিজের পারফরমেন্স এর কারণে এই করোনাকালেও বেশ কয়েকটি সিনেমায় কাজ করেছেন তিনি। গত বছর করোনার শুরুতে তিনি কাজ শুরু করেন সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড পরিচালিত ‘কোভিড নাইনটিন ইন বাংলাদেশ’ সিনেমার।
এতে তার বিপরীতে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করছেন বাপ্পী চৌধুরী। করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বর্তমানে সিনেমাটির কাজ বন্ধ রয়েছে।
অন্যদিকে, করোনাকালেই অধরা অভিনয় করেছেন সৈকত নাসির পরিচালিত ‘বর্ডার’ সিনেমায়। বর্তমানে এটি মুক্তির অপেক্ষায় আছে। এর বাইরে তিনি অপূর্ব রানা পরিচালিত ‘উন্মাদ’ ও ‘গিভ এন্ড টেক’ সিনেমার কাজ করছেন। করোনা পরিস্থিতির অবনতি ও লকডাউনের কারণে এই সিনেমা দুটির শুটিং আটকে যায়।
অধরা খান বলেন, করোনা মহামারিতে কোনো কিছুই স্বাভাবিক নেই। তারপরও ‘বর্ডার’র কাজ শেষ করেছিলাম বেশ আগেই। ‘উন্মাদ’ সিনেমার কাজও প্রায় ৪০ ভাগ শেষ। তবে সামনেই সিনেমাটির কাজ ফের শুরু করার কথা রয়েছে। এখনও শুটিং শিডিউল ফাইনাল হয়নি। অপেক্ষায় আছি দুটি সিনেমার কাজ শেষ করার।
চলমান ডিজিটাল বিনোদন মাধ্যম ওটিটি প্ল্যাটফর্মে এখন অনেক চলচ্চিত্র শিল্পীই কাজ করছেন। অধরাকে দেখা যাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজের ক্ষেত্রে আমার কাছে মাধ্যম কোন ফ্যাক্টর নয়। আমি ভালো কাজ করতে চাই।
সেটা চলচ্চিত্রে হোক কিংবা অন্য প্ল্যাটফর্ম। তবে আয়োজনটা মনের মতো হতে হবে। সত্যি বলতে করোনার কারণে অনেক কিছুই করা হলো না।
এই দেড় বছরে ভালো কাজ করে নিজেকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু সময়টা তো চলে গেছে। এখন সামনের সময়টা যেন আমরা সবাই কাজের মধ্য দিয়ে পার করতে পারি, সেটাই এখন চাওয়া।
অধরা জানান, এই করোনার মধ্যেও তার তিনটি নতুন প্রজেক্ট প্রায় ফাইনাল হয়ে আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই নতুন এই সিনেমাগুলোর কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, আমি আসলে এই মুহূর্তে আগাম কিছু বলতে চাইছি না। স্বাভাবিক হলেই সেগুলোর আনুষ্ঠানিক ভাবেই ঘোষণা আসবে নির্মাতাদের পক্ষ থেকে। সব কিছুই নির্ভর করছে চলমান করোনা পরিস্থিতির ওপর।
‘বর্ডার’ সিনেমা নিয়ে অধরা বলেন, এটি আমার অভিনীত মুক্তি প্রতীক্ষিত সিনেমা। সৈকত নাসির ভাই অনেক সুন্দর একটি সাবজেক্ট নিয়ে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন। এটি আমার জন্য ওয়ান অব মাই বেস্ট ওয়ার্ক।
সিনেমাটিতে আমার পর্দায় উপস্থিতি একটু কম হলেও অসাধারণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। আমার বিশ্বাস সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পর অনেক কিছুই পরিবর্তন করে দেবে।
চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা নিয়ে বলেন, আমি যখন চলচ্চিত্রের নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করি, তখনও আমাদের চলচ্চিত্রের ভালো একটা অবস্থা ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে চলচ্চিত্র শিল্প চরম সংকটে উপনীত হয়েছে। আর করোনা মহামারি যেনো চলচ্চিত্র শিল্পকে আরো নাজুক পর্যায়ে নিয়ে দাঁড় করিয়েছে।
আসলে আমরা এই প্রজন্মের শিল্পীরা দেশীয় চলচ্চিত্রের জৌলুস রূপটা দেখতে পেলাম না। এটাই বড় অপ্রাপ্তি আর হতাশাজনক। তবে আমি আশাবাদী মানুষ। তাই চলচ্চিত্র তাই ইতিবাচক ভাবনা আমার। হয়তো প্রযুক্তিগত পরিবর্তন হলে কিছুটা সময় পর আবার চলচ্চিত্র ধীরে ধীরে ভালোর দিকে গিয়ে আলোর পথ দেখাবে। সবাই সেই সুদিনের অপেক্ষায়।