29 C
Dhaka
Tuesday, April 29, 2025

সন্তান নেয়ামত, নয় বোঝা: চিন্তাবিদ শায়খ আহমাদুল্লাহর বক্তব্যে সমাজের বাস্তব চিত্র উন্মোচিত

চাকুরির খবর

বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ ও সমাজসেবক শায়খ আহমাদুল্লাহ সম্প্রতি জনসংখ্যা, পরিবার ও সমাজব্যবস্থা নিয়ে গভীরতর এক পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন,

পশ্চিমারা যে চোরাবালি থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছে, আমরা আজ সেই চোরাবালিতে ডোবার প্রতিযোগিতায় নেমেছি।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ছয় বা ততোধিক সন্তানের মায়েদের জাতীয় মেডেল প্রদানের ঘোষণা দেয়ার প্রেক্ষিতে তিনি এই মন্তব্য করেন। ট্রাম্পের ঘোষণাটি পশ্চিমা বিশ্বে পরিবার ও সন্তানকে কেন্দ্র করে নবচিন্তার দ্বার খুলে দিয়েছে। আর তার বিপরীতে আমাদের সমাজে সন্তানকে বোঝা হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, এমনটাই মনে করেন শায়খ আহমাদুল্লাহ।

তিনি বলেন,“সন্তান মহান আল্লাহর তরফ থেকে হৃদয় শীতলকারী এক আশ্চর্য নেয়ামত। পশ্চিমারা এই নেয়ামতের পথ বন্ধ করে আজ তিল তিল করে মরছে-অর্থনীতি, জনশক্তি, মূল্যবোধ, জনসংখ্যার ভারসাম্য এবং জাতীয় অস্তিত্ব আজ মহা ঝুঁকিতে।”

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ জনসংখ্যা সংকট মোকাবেলায় ইতোমধ্যে বড় ধরনের আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে। তার কিছু উল্লেখযোগ্য উদাহরণ:

জাপান নাগি শহরে সন্তান জন্মে ১ লাখ ২৫ হাজার থেকে ৫ লাখ ইয়েন পর্যন্ত অনুদান। রাশিয়া মাতৃত্ব ভাতা কর্মসূচিতে প্রথম সন্তানের জন্য প্রায় ৮,৩০০ ডলার পর্যন্ত প্রণোদনা। জার্মানি সন্তানপ্রতি মাসে ২৫০ ইউরো করে সহায়তা প্রদান করা হয়। ফ্রান্স গর্ভাবস্থাতেই ১ হাজার ইউরো ও পরবর্তীতে তিন সন্তান পর্যন্ত ১৪০০ ইউরো পর্যন্ত মাসিক সহায়তা। দক্ষিণ কোরিয়া ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ঘোষণা দিয়েছে ৬.৭ ট্রিলিয়ন ওন বরাদ্দের। যুক্তরাষ্ট্র ট্রাম্পের প্রস্তাবে নতুন মায়েদের জন্য ৫ হাজার ডলার এককালীন সহায়তা ও জাতীয় স্বীকৃতি। চীন এক সন্তান নীতির পর পুরোপুরি জন্মগত বিধিনিষেধ তুলে দিয়েছে।

শায়খ আহমাদুল্লাহ মনে করেন, জন্মহার কমে যাওয়ার মূল কারণ কেবল অর্থনৈতিক নয়; বরং তা সামাজিক ও নৈতিক সংকটের বহিঃপ্রকাশ।

“সমতার নামে নারীদের উপার্জনে বাধ্য করা, অবাধ যৌনাচার, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, দুর্লভ বিয়ে, ভঙ্গুর পরিবার ব্যবস্থা—এইসবই জন্মহার হ্রাসের মূল কারণ। সন্তান জন্মের জন্য যে পরিবারব্যবস্থা দরকার, তা আজ ধ্বংসপ্রায়।”

তিনি আরো বলেন, “যেখানে বিয়ে কঠিন ও ব্যভিচার সহজ, সেখানে জন্মহার পতন হবেই। আর সেটাই আজ আমাদের সমাজে ঘটছে।”

আন্তরিক ব্যথা প্রকাশ করে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, “আমাদের মজবুত পারিবারিক বন্ধন এক সময় বিশ্বের কাছে দৃষ্টান্ত ছিল। কিন্তু এখন ‘প্রগতি’ ও ‘নারীমুক্তি’র মোহে আমরা সেই সোনালি ঐতিহ্য হারাতে বসেছি। পতঙ্গের মতো আমরা ভয়ংকর আগুনকে চাঁদের আলো ভেবে ঝাঁপিয়ে পড়ছি।”

তিনি সমাজ ও রাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করে বলেন, “এই প্রবণতা চলতে থাকলে আমরা একদিন পুরোপুরি ভস্ম হয়ে যাব। তখন আর ফিরে আসার পথ থাকবে না।”

- Advertisement -

আরও সাম্প্রতিক খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ খবর